বন্ধু যখন বন্দুক
শাকিরা,
সিয়াম, বিপ্লব, সোহেল একই
সাবেজেক্ট এ পড়ে। বেশ
ঘনিষ্ট বন্ধু তারা। ক্লাস
শেষে শাকিরা, সিয়াম ব্রেঞ্চে বসে
গল্প করছে।
শাকিরা-
তোর একটা বন্ধুর
ফোন নাম্বার দে
।
সিয়াম-
কেন কি করবি?
-দে-না বন্ধু পাতাবো।
-কেন
আমাদের দিয়ে হচ্ছে না
?
-তোরা
ফোনে কথা বলবি না।
এমন একজনের নাম্বার দিবি
যেন সে বেশী
বেশী ফোনে কথা বলে।
আর যে ছেলে
প্রেম করে তার নাম্বার দিবি
না। ফ্রেশ একটা
ছেলের নাম্বার দে ।
-ঠিক
আছে নে।
-বল্
-দারা
বের করি।
-এতক্ষণ
লাগে বের করতে
– নে
০১৭১০-৪১…………..
-ছেলেটা
দেখতে কেমন রে?
-বেশ
ভাল লম্বা, তোর
সাথে মানাবে।
রাত
১২ টা ৬ মিনিট মশারি টাঙগাচ্ছি ভীষণ
ঘুম পাচ্ছে ঠিক
সেই সময় মোবাইলে ম্যাসেজ টোন
বেজে উঠল। মোবাইলে ম্যাসেজ টোন
বাজলেই মন মেজাজ খারাপ
হয়ে যায়। ফোন
কোম্পানি থেকে একই ম্যাসেজ আসেতেই
থাকে বারবার। মশারিটা ঠিকমত
চার দিকে গুজে
দিয়ে শুয়ে মোবাইলের দিকে
তাকাতেই দেখি অপরিচিত এক
নাম্বার থেকে ম্যাসেজ এসেছে।
আমাকে বন্ধু বানাতে চায়,
এটাই ম্যাসেজের মূল থিম।
খুব একটা গুরুত্ব না
দিয়ে ঘুমিয়ে পরলাম। দুইদিন
পর আরেকটা ম্যাসেজ আসে,
তার পর কল
করে, এভাবে শুরু
হল কথা বলা।
১৫ দিনে বেশ
ঘনিষ্ট হয়ে গেলাম ভাল
একজন বন্ধু হিসেবে। মেয়েদের সাথে
বন্ধুত্ব সাধারণত বেশীদিন টিকে
না, সেটা প্রেমে
পরিণত হয়। আমারও ব্যতিক্রম নয়।
এবার
আমরা দু’জন দেখা
করবো । ছেলেদের বিবস্ত্র করলে
গুপ্তাঙ্গ দেখা যায় কিন্তু
মেয়েদের দেখা যায় না।
যা দেখা যায়
তা শুধু শরীরের
ঢেউয়ের আভাস, যে মেয়ের
শরীরে ঢেউ বেশি তার
প্রতি ছেলেরা আকৃষ্টও হয়
বেশি। তাই ঢেউ বেশি থাকায়
প্রথম দেখাতেই আমি কাবু
হয়ে যাই।
মেয়েটির শুক্ষ
শুক্ষ ভালবাসা আমাকে কাবু
করে ফেলল। তার
চেয়ে বেশি কাবু হয়েছি
তার রান্নায়। আমার
প্রথম প্রেমে কষ্ট পাবার
পর প্রতিজ্ঞা করেছিলাম আর
কখনও প্রেম ভালবাসা করবো
না কিন্তু শাকিরার একটু
আলাদা রকম ভালবাসায় আমি
স্থীর থাকতে পারি নি।
মনকে ধরে রাখতে পারি
নি। এভাবেই গভীর
হতে থাকে আমাদের
ভালবাসা, গভীর থেকে গভীরতম।
আামদের
সম্পর্কর প্রায় ৮ মাস
পর কোন এক
নদীর পারে আমরা দু’জন
বসে আছি পাশাপাশি।শাকিরার মুখ
বিষণ্ন থাকায় চারপাশের পরিবেশ
কেন যেন ভারিভারি লাগছে।
নদীর ঢেউ আস্তে বইছে।
অনেক্ষণ পর শাকিরা মুখ
খুলল।
-আজ
তোমাকে একটা কথা বলবো।
-বুকের
ভিতর ধক করে উঠা
সত্তেও হাসি হাসি মুখে
বললাম- বল কি বলবে।
-আমি
একজন দুঃখি মেয়ে।
একটু
অবাক হয়ে-তুমি দুঃখি
এতদিন আমাকে বল নি
কেন? বল, তোমার
সাথে দুঃখ শেয়ার করি।
অনেকটা হালকা লাগবে।
-আমি
বিবাহিতা।
কলকাতার টিভি
সিরিয়ালের মত বিকট শব্দ
বেজে উঠল আমার মনে।
-তিন
বছর আগে আমার
বিয়ে হয়েছে। আমার স্বামী
আমাকে সময় দেয় না।
ভালবাসা দেয় না। তাই
সারাক্ষণ কষ্টে থাকতাম। একটু
ভালবাসা পাবার জন্য তোমার
সাথে জড়িয়ে পরি।
তবে আমি কখনই
ভাবি নি তুমি আমাকে
এতো বেশি ভালবাসবে। আমার
স্বামী এখন আমাকে সময়
দিচ্ছে, সাথে ভালবাসাও। তাই
তোমার সাথে এখানেই ইতি টানতে
চাচ্ছি। ভাল থেকো। আর
তোমার ফোন নাম্বারটা পেয়েছি
তোমার বন্ধু সিয়ামের কাছ
থেকে।
এই
বলে শাকিরা গটগট
করে হেটে চলে
যায়। আমি সম্পূর্ণ রূপে
হাবা হাসমত হয়ে তাকিয়ে
থাকি।শরীরের রক্তগুলো একেবারে জমে
গেছে। গলা দিয়ে কোন
কথা বের হচ্ছে
না। মনে হচ্ছে
৮ মাস আগে
সিয়াম আমাকে গুলি করেছে
আজ সেই গুলি
আমার বুকের মধ্যে ঢুকে
পরলো।
এই গল্পটি যদি আপনার ভাল লেগে থাকে তাহলে সেয়ার করতে ভুলবেন না প্লিজ। যে কোন অভিমত, বাসমালোচনা করার থাকলে কমেন্ট করে জানাবেন অবশ্যই। ধন্যবাদ সবাইকে ।
রচনা– এম, আব্দুল্লাহ আল মামুন
কোন মন্তব্য নেই