উলঙ্গ হয়ে গোসল করা যায়েজ কি না
উলঙ্গ হয়ে গোসল করা যায়েজ কি না
হয়রত মুসা (আ:) এর বংশধরের নাম বনী ইসরাইল। বনী ইসরাইলদের মধ্যে একটি প্রথা ছিল, তারা এক সংগে গোসল করতো নদীতে অথবা পুকুরে, সেখানে তারা সকলেই উলঙ্গ হয়ে গোসল করতো। এটা তাদের ভিতরে একটা সাধারণ, গতানুগতিক প্রথা ছিল। যেহেতু হযরত মুসা (আ:) একজন পয়গাম্বর, তিনে যে তাদের সাথে এক সংগে উলঙ্গ হয়ে গোসল করবেন এটা তাঁর মানায় না। সে জন্য তিনি একাকি একটু দুরে গিয়ে নিরালায় উলঙ্গ হয়ে গোসল করতেন। এমন দুরে গিয়ে গোসল করা অন্যান্য লোকজন দেখে তারা তাঁর উপর একটা খারাপ ধারণা করতে লাগলো এবং বাজে মন্তব্য করতে লাগলো। তারা বলতে লাগলো তাঁর ভিতরে কোন সমস্যা আছে বা তার অন্ডকোষে কোন রোগ আছে।
এমন খারাপ মন্তব্য থেকে মুক্তির জন্য একদিন হযরত মুসা (আ:) গোসল করার সময় তিনি যে পাথরের উপর কাপড় চোপড় রেখেছিলেন আল্লাহ পাক সেই পাথরকে নিরদেশ করলেন তুমি এই যায়গা থেকে সরে যাও, এখান থেকে ছুটে চল জনসম্মুখে। আল্লাহ পাকের হুকুমে পাথর ছুটতে লাগলো। সেটা হযরত মুসা (আ:) দেখে কাপড়ের জন্য সেই পাথরের পিছনে দৌড়াতে লাগলেন এবং বলতে লাগলেন যে হে পাথর আমার কাপড় আমাকে ফিরিয়ে দাও। দৌড়ানোর সময় তাঁর হুশ ছিলা না যে তাঁর গায়ে কাপড় নেই।
কিছু দূর আসার পর ঐ গ্রামে বনী ইসরাইলের অনেক লোকজন রাস্তার পাশে মিটিং করছে। পাথরটি ছুটতে ছুটতে সেই মিটিং এর লোকজনের মধ্যে উপস্থিত হল এবং তার পিছনে পিছনে হযরত মুসা (আ:) ও উপস্থিত হলেন। ঠিক সেই সময় সবাই দেখতে পেলো তাঁর ভিতরে কোন সমস্যা নেই।
এই ঘটনা দারা বোঝা যায় যে, উলঙ্গ হয়ে গোসল করা যাবে যদি সেই যায়গাটি নির্জন হয়। আর একটি বিষয় হল আমাদের এই দুনিয়াতে যত নবী এসেছেন তাদের যে সমস্ত কাজের জন্য আল্লাহ পাক নিষেধ করনেনি বা ধমক দেন নি। সেই সমস্ত কাজ আমাদের জন্য যায়েজ আছে।
আর একটি ঘটনা মুসলিম শরিফের হাদিস- একদিন হযরত আইউব (আ:) গোসল করতে গেলেন নদীতে, গোসল করার সময় তিনি তার কাপড় চোপড় পাসেই রাখলেন। গোসল করে উঠে এসে দেখেন আসমান থেকে স্বর্ণ এর ফড়িং পরতেছে। তখন হয়রত আইউব (আ:) সেই ফড়িং গুলি কুড়িয়ে কুড়িয়ে নিচ্ছেন এবং কাপড়ের মধ্যে রাখছেন, তখন আল্লাহ তায়ালা বললেন- হে আইউব আমি কি তোমাকে এগুলো ছাড়াও আরো অন্যান্য নিয়মত দেই নি ? তখন উত্তরে তিনি বললেন হে আল্লাহ আপনি আমাকে অবশ্যই নিয়ামত দিয়েছেন কিন্তু আমি আপনার নিয়ামতের অমুখাপেক্ষি নই। ঐ সময় হযরত আইউব (আ:) উলঙ্গ অবস্থায় ছিলেন।
এই দুটি ঘটনার দ্বারা বুঝলাম আমরা অবশ্যই উলঙ্গ অবস্থায় গোলস করতে পারবো। তবে অনেক ওলামায়ে কেরাম বলেছেন একবারে বিবস্ত্র বা উলঙ্গ হয়ে গোসল করা ঠিক নয়। আসলে আমরা উলঙ্গ হয়ে গোসল করতে পারবো কিন্তু সেই গোসল যেন কোন মানুষ না দেখতে পায়। আর মানুষ যদি আপনার গোসল করা দেখতে পায় তাহলে সেই গোসল করা সম্পূর্ণ ভাবে হারাম।
এই তথ্যটি যদি আপনার ভাল লেগে থাকে তাহলে শেয়ার করতে ভুলবেন না প্লিজ। যে কোন অভিমত, বা সমালোচনা করার থাকলে কমেন্ট করে জানাবেন অবশ্যই। ধন্যবাদ সবাইকে ।
রচনা– এম, আব্দুল্লাহ আল মামুন
কোন মন্তব্য নেই