Header Ads

বাল্য জীবন (মো: আমিনুল ইসলাম) কবিতা গুচ্ছ।

ballo jibon

কবি
Aminul
মো: আমিনুল ইসলাম


প্রথম প্রকাশ ২১শে বই মেলা ২০১১
লেখক ঃ মাে: আমিনুল ইসলাম
স্বত্ব ঃ লেখক
প্রকাশনা সেবা প্রকল্প : কবিতাকণ্ঠ
(একটি সাহিত্য সেবা মূলক পত্রিকা, শুধুমাত্র কবিতার)
প্রচ্ছদ ঃ এম, আব্দুল্লাহ আল মামুন
১, স্নিগ্ধা আবাসিক এলাকা, বগুড়া - ৫৮০০ থেকে
কবিতাকর্তা কর্তৃক প্রকাশিত, চয়েস প্রিন্টিং প্রেস
বাদুরতলা থেকে মুদ্রিত,
বর্ণ বিন্যাস : জান্নাতুল ফেরদৌস

মূল্য ঃ ৮০ টাকা মাত্র
price : 80 taka only

BALLO JIBON
Published by KOBITAKONTHO
1. Snigdha R/A,, Bogra-5800.


উৎসর্গ
আমার শ্রদ্ধেয় মা ও বাবাকে


এক গুচ্ছ আশীষ

           পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় রূপ লাভ করে নতুনত্বের। সৃষ্টি হয় অনুস্মরণীয় দিক নির্দেশনা। যুগে যুগে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের পালা বদল করছে নিরন্ত ২। নির্মম জীবনে গদ্যময় কবি অজস্র কবিতা লিখলেও এ পাঠক সংখ্যা অতি নগন্য। তবুও ক্ষুরধার লেখনীতে কবিতা রচনা করেছেন কাব্য প্রেমী কবিরা। কবিদের কবিতা পাঠকেরা পড়ুক আর নাই পড়ুক বাংলা সাহিত্যের আসরে কবিতাগুলাে সুবাসী ফুলের মতাে গন্ধ ছড়াচ্ছে মানুষের মানস পটে।

           আমিনুল ইসলাম আমার একজন বাধ্যানুগত ছাত্র, কৈশর কাল থেকেই তার কবিতা লিখার অদম্য ঝোঁক ছিল। ছাত্র অবস্থায় কবিতা লিখা তার হাতে খড়ি। বাল্য জীবন তার প্রথম প্রকাশিত বই। বইটিতে মানুষের সুখ, দুঃখ, হাসি, কান্না দেশপ্রেম সাম্প্ৰতিকের ঘটমান চিত্র এবং প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দৰ্য্য অনুপম ছন্দে বিবৃত হয়েছে।


          বইটি পড়ে আমি খুবই আনন্দিত হয়েছি। এই নবীন লেখকের ক্ষুদ্র প্রয়াশ পাঠক সমাজে সমাদৃত হবে বলে আমি আশা প্রকাশ করছি।
ড. মাে: ফজলুল হক
সহযােগী অধ্যাপক (প্রানিবিদ্যা)
সরকারী আযিযুল হক বিশ্ব: কলেজ, বগুড়া।


একটু কথা

         আস্সালামু আলাইকুম। জীবনে যৌবনের বীজ বুনে প্রকৃতির প্রেমাগী ছোঁয়ায় এবং সাহিত্যর প্রেরণা নিয়ে কাব্য জগতের এক অমীয় সুধা পান করলাম। অতি ক্ষুদ্র এক অনিপুণ হাতে একগুচ্ছ। কবিতা লিখে ‘বাল্যজীবন' নামের গ্রন্থখানি। আপনাদের হাতে একটি সামান্য উপহার হিসেবে তুলে দিলাম। আমি পরম করুণাময়ের কাছে প্রার্থনা করি যে সকলেই ধর্মীয় আলােকে এবং শান্তির দোলনায় দোল খেয়ে জীবন যৌবনকে সাফল্যময়ী করে তুলুক। সুন্দর ও মজবুত করে তুলুক আখিরাতের জন্য ইহকালের নিজ নিজ কল্যাণকর আমল আর সকলের কাছে চাই প্রাণ ভরা দোয়া।

            পরিশেষে আমার অভাষ্য কবিতা গুলাে পড়ে বুঝলে ও তৃপ্তি পেলে কৈশর থেকে যৌবনে পদার্পণ সময়টিতে অক্লান্ত পরিশ্রম সার্থক হবে বলে আশা করি।

মাে: আমিনুল ইসলাম


বাল্য জীবন

সর্বকালের শ্রেষ্ঠ জীবন
বাল্য কালের মন।
এই জীবনের পথটি খােলা
ভবিষ্যতের পণ।

এই জীবনে দেখব ধরা
মেলিয়ে আঁখি দুটি
বাঁধব সুখের সত্য জীবন
সত্য পথে ছুটি।

এই জীবনে খুঁজব মানুষ
কে জন সুখের সাথী
বদ্ধ ঘরের অন্ধকারে
জ্বালব আলাের বাতি।

এই জীবনে খেলব খেলা
জিতব হারার পর
সইব যতাে দুঃখ জ্বালা।
বাঁধিয়ে সুখের ঘর।

এই জীবনে ঘুরবাে চাকা
সৌভাগ্যের নীড়ে
চলব বাদির মুখােমুখি-
থাকব নাকো দূরে।

এই জীবনে খাইব খানা
গাইব সুখের গান
যখন হব শিশুর পিতা
থাকবে না আর প্রাণ।

এই জীবনে পড়া লিখা
চরব ঘােড়ার গাড়ি
দেখব মজার জগতটাকে
সাজিয়ে আকাশ তরী।

এই জীবনে ফলব ফসল
জ্বালৰ সােনার ধান
নবান্নেরী পুলি পিঠায়
ছড়িয়ে দেব ঘ্রাণ ।

এই জীবনে লিখব কথা
জীবন কাহিনী
দেশের তরে করব লড়াই
সৈন্য বাহিনী।

এই জীবনে ধৈর্য্য ধর কার্যকর ঠিক
সহ্য কর পরের তারণ দুঃখ অত্যাধিক।
এই জীবনে স্মরণ কর মরণ কত ভয়
এই দুনিয়ায় মহান যে জন নাই কোন তার ক্ষয়।

এই জীবনে শিখৰ আদব
ভদ্র ব্যবহার,
করব না কেউ পরের ক্ষতি
অন্যায় অবিচার।

এই জীবনে করব সেবা
পরের উপকার
দুঃখীর মুখে খাবার দেব
যে জন অনাহার।

এই জীবনে বলব কথা
সত্য সততায়
মিথ্যা থেকে থাকব বিরত
অর্থ অপব্যায়।

এই জীবনে করতে শিখাে
খােদার ইবাদত
ডাকো দ্বীনের মহান মানুষ
নবী মুহাম্মদ (স:)।


বাঙালির নববর্ষ

বাঙালিদের নব জীবনে
আজকে সুখের ঐতিহ্য
দুঃখ কষ্টের যতাে ব্যথা
সব করিয়ে সহ্য।
অতীতের কতাে কান্না হাসি,
সবে আড়াল করে,
আজকে সবই নতুন হলাে-
বাঙালির ঘরে ঘরে।
মুখ ভরা হাসি খুশি
ভুলিয়ে বিষাদ, বিমর্ষ,
সবাইকে আজ দিল নিমন্ত্রণ
শুভ নববর্ষ।
সবাই যে আজ শুভ আশায়
বাঁধলাে সুখের জীবন
হৃদয় সবার আনন্দে মুখর
তেজে ভরা মন।
শুরু হলাে নতুন জীবন,
নতুন দিবা রাত্রি
নববর্ষে এই নবীন পথে
আমরা নবীন যাত্রী।


কৃষক

ঐ দেখা যায় কৃষাণেরা নাঙ্গল চাষ মাঠে,
সারাটি বছর মাটির বুকে প্রাণটি ভরে খাটে।
সারাটি দিন খাটছে মাঠে ফেলছে সােনার ধান,
কাজের ফাঁকে গাইছে কত দুঃখ সুখের গান ।
সহজ, সরল মন তাদের স্মৃতি দিয়ে গাঁথা,
শত বেদনার মাঝেও শুনি মিষ্টি মধুর কথা
ফসল ভরা মাঠগুলাে ঐ সােনালী রােদের ছায়া,
ওদের মনেই বিরাজ করে শান্ত মধুর মায়া।
ওরাই মহৎ প্রাণের মানুষ নাইরে কথায় ফাঁকি,
সমাজ গড়ার পথিক ওরাই, থাকে সদা সুখি।।


ধর্মের অবহেলা

আমরা জন্মেছি শ্রেষ্ঠ ধর্মের কোলে
মহা শান্তির সুশীতল ছায়াতলে
কিন্তু ভুলে চলি বিধি বিধান
জানি না কেজন ঈশ্বর প্রভু স্রষ্টা মহান।
আনন্দে আত্মহারা দুনিয়ার মেলায়
উম্মাদ হয়েছি ক্ষণিকের লুকোচুরি খেলায় ।
জানি না কোন আমলের কর্মে জপি ইবাদত
কিসে বা ধন্য এ কর্মে কোন ফজিলত
শুধু ব্যাঙের ছাতার মতাে ধর্ম মেনে চলে
যাই না কোন দিন এ ছাতার সুমধুর ছায়াতলে।


নিমতলীর দুঃখ

লাল বহ্নির কৃষ্ণ গ্রাস,
কেড়ে নিল ওদের তাজা চঞ্চল্য প্রাণ
উর্মি খেলে দগ্ধ আগুনের স্রোতে
শুধু হাহাকার, কালাে ধােয়ার অন্ধকার।
ওদের বদন ফুপে ওঠে কান্নার তান
কত আনন্দ আপ্লুত প্রাণের
নিমেষে দগ্ধ হলাে খান খান,
কালাে কষ্টের শােকে পুড়ে
কতজন বােবা আর্তনাদ তােলে
হৃদয়ে বিষাদ অম্বর ভরা বান।
কত সােহাগ মমতার বাঁধন ছিড়ে
কণ্ঠ ঝেড়ে গাইলাে মরণের গান
জীবনের ছন্দে ছন্দে বাজে কষ্টের বীণা
অশ্রুজলে ভাসে বেদনার পীড়া
নিমতলীর সবুজ প্রকৃতি হলাে মৃত্যু শ্মশান ।
আপন স্বজন হারিয়ে কেহ
এতিম অসহায়ে ভুগিছে দুঃখ অফুরান
নিঃস্ব হারিয়ে সকল সম্পদ সর্বস্ব
কাঁদে নিমতলী, কাঁদের বাংলার মানুষ
মূর্ছিত প্রাণে আষাঢ় নামে মেঘলা ম্লান।


অভিযানী গান

সাবধান ! সাবধান !
ওরে অজ্ঞানী অভিলাষীর দল,
আমরা জেগেছি নিদ্রা ভাঙ্গি-
বাহুতে আছে অগাধ বল ।
তােরা কিশের বলে এসিড ছুড়িস
অবলাদের প্রাণে,
মশকীর মতাে রক্ত পিয়াস
বক্ষ ফেড়ে যানে
তােদের হানবাে জীবন মান
সাবধান, সাবধান !
তােরা চোখ ধাধানাে খেলিস খেলা
টাকার মােহে পড়ি
ঘুসের বাজার চড়াস কেন-
পেটটা করিস ভারি ?
তােদের খবা তাজা প্রাণ,
সাবধান, সাবধান !
তােরা কিশে মত্তে করিস এতাে
যৌতুক নিয়ে খেলা,
এতাে লােভিস টাকার মেলা ?
তােদের কাটবাে শিরস্থান
সাবধান, সাবধান !
কেনরে তােরা ক্ষিপ্র সেজে
অবলারে করিস জেনা।
পাবি নারে কাল হাসরে।
এক বিন্দু পানাহ্ তােরা ধ্ববেরে শয়তান,
সাবধান ! সাবধান!
তােরা কোন নেশাতে মাতাল এতাে
পথে ঘাটে চলি
তােদের ইভটিজিং এর ভয়াল ফাঁদে
মা বােনেরা হচ্ছে আত্মবলী।
তােদের কারবাে তাজা প্রাণ,
সাবধান ! সাবধান!


রাক্ষসের ভাই

পথে পথে নেমেছে বহু বুভুক্ষার দল,
হিংসা, ক্রোধ, প্রীতিহীন বিবেকের-
লেলিহানে, পড়ে গেছে ক্ষুধার্তের কোলাহল।
হায়না বেশে মানুষ নামের পশুরা
ঠুকরে ঠুকরে খায় দূর্বলের আহার্য
বর্বর ভয়ার্ত নয়নে হনন করে,
শুধু নিরীহ মানুষের ন্যায্য অধিকার।
বিরাম নেই, শুধু অবিরাম ঝঞ্চায়,
হরদম হানে নিঃস্বার্থ মানুষের
মান, সম্মান ও মহত্বের পুষ্পধার ।
লােভে ক্ষোভে ভেঙ্গে দেয়,
কর্মময় শ্রমিকের ঘাম ঝড়া হাত
হৃদয়ের পিপাসায়, নয়নের ক্ষুধায়
কেরে নেয় নারীদের স্বাধীনতার অধিকার।
যৌবনের ক্ষুধায় তৃপ্তি মেটায়
নারীদের ধর্ষণে।
আমি শুধু চেয়ে চেয়ে দেখি
শক্তি পাই না শক্ত প্রতিরােধের
আমিও যে রাক্ষসের ভাই
খােক্ষস বিধ্বংসী শয়তান ।


কোরআনের আলাে

এ দেশের সংবিধান
যদি হয় আল কুরআন
ফুটবে জাতির অন্ধ চক্ষু
জাগবে অজাগ প্রাণ ।
এ দেশের আকাশ পানে
হাহাকার শূন্য গানে
দুলিয়ে উড়বে নবীন-
কালেমার বিজয় নিশান ।
এ দেশের শাসন রীতি
প্রীতি ডােরা দিয়ে
গড়বে সমাজ জীবন বিধান।
এ দেশের পাপাচারী
গােনাহগার নর নারী
বাজবে কণ্ঠে সবার
তাওহিদের ঐ মধুরীতান।
ইবাদতে সব মশগুল হয়ে
তাজবে ঈমান এই হৃদয়ে
দেলে মনে করবে স্মরণ-
আল্লাহু আল্লাহু মহান।


পথ হারা পথিক

তুমি নিঃস্ব ?
ক্ষুধার্তের জড়ান জলে বুভুক্ষু পথিক।
হৃদয়ের তৃষ্ণা মিটাতে চাও?
সিজদায় লুটে পড় রহিমের নামে
বিশাল নিয়ামতের মাঝে।
তালাশ কর পবিত্র জীবিকা, ব্যাস্-
যথেষ্ঠ আরােগ্য হবে।
তবু স্বার্থপর মানুষের কাছে।
দুহাত পেতাে না।
তুমি বিপদগ্রস্ত ?
শত ঝঞার বেড়াজালে বন্দি হয়ে
এক বুক স্বস্তির সুখ চাও ?
বুকে ধৈর্য্যের বাসা বাঁধো,
আল্লাহকে স্মরে,
দেখবে প্রশান্তি শুধু প্রশান্তি।
তবু চক্ষুশুল ধনাঢ্য মানুষের কাছে
মাথা নিচু কর না।
তুমি পাপী ?
পাপের কালিমায় হৃদয় বুঝি
তােমার মরিচা পড়া।
আল্লাহর জিকিরে দ্বীনের ফিকিরে
রাসূলের পথে চলে
শুধু দু'ফোটা নয়না ফেলে
দুই হাত তুলে ক্ষমা চাও,
পরম করুণাময় রহমতের ভাণ্ডার দেবে খুলে।
তবু বেঈমাণ বিচারকের
মিথ্যার কাটগড়ায় দাঁড়াও না।


কেউ দোষী নয় আমি

ওরা বলে।
তােমরা দেশের অপরাধি
একাত্তরের আলবদর আলশামস
তােমরা জাতির শক্র।
তােমরা নাকি হিংস্র রক্ত চোষার সহচারী।
লক্ষ মানুষের প্রাণ নাশক
তাজা রক্ত ক্ষয়ের হেতু।
ওরা বলে
আমরা এবার কটি বেঁধে নেমেছি
নিস্তার নাই কোন মতে
বিচার তােদের করবই।
তােমরা বলাে
আমরা স্বচ্ছ নিরপরাধি
আমরা কারাে জীবন নাশিনী
এটা মহা ঘড়যন্ত্র।
ওরা সাইনবাের্ড ঝুলে নিস্পাপ হতে চায়;
ওরা কি কেউ দোষী নয় ?
এটা আমাদের দলে হানা।
তােমরা বলাে।
আমরাও কাফনের কাপর পড়ে ও নিয়েছি
ওরা কেমন মিত্র জাতির
দু’চোখ খুলে এবার দেখবই।
আমি বলি
তােমরা সবাই নির্দোষ
আমি কাট গড়ায় দাঁড়াবাে এবার ;
কারণ, আমি নিস্পাপ হতে চাই।


মহা পরিযান

মা ! তুমিতাে কাঁদ নি কোন দিন
এত উন্মাদ হয়ে করণ করে
থাকনিতাে কোন দিন-
তােমার মায়াবী বুকটা ফাকা করে
আমায় ফেলে এত বহুদূরে।
এতদিন স্নান করেছি মা !
কী সুশীতল কুসুম পানিতে নেয়ে
স্নিগ্ধ সকালে,
আজ কেন মা আমায় নােয়ালে
এত তীব্র বরই পাতার গরম জলে ?
কত যে আমার শরীরে তেল মেখেছাে,
আগে দেখি নি কোন ক্ষণে
আজকের মতাে এত সুঘ্রাণ গােলাপ জলের সেন্ট
মা ! কতই না জামা পড়েছি।
রঙ্গিন রঙ্গিন চেকের প্যান্ট শার্ট,
কিন্তু মা, আজকে কেন এত-
ধবধবে সাদা কাপরের লেবাসে,
সেজেছি নতুন জগতের মেহমান।
বহু দেশ ঘুরেছি মা,
বন বনান্তর, সাগর মহাসাগর দিয়ে পাড়ি
তােমাকে তাে ফাঁকি দেই নি কোন দিন
এক দণ্ড শান্তি দিয়েছি তােমায়-
এসেছি বহুবার তােমার কোলে ফিরি।
মা! আজ আমায় কোথায় রেখে গেলে ?
এ কি আমার শেষ পরিযান ?
মা, তুমি এত নিষ্ঠুর হলে কেন
আমি কী আর কোন দিন ফিরবাে না ?


ওদের জন্য

নিত্য শুনি আমি বড়দের মুখে
নয়ন খুলতেই দেখতে পাই
হৃদয় ঝাঁঝানাে নিদারুণ চিত্রগুলি,
রক্তাক্ষরে আঁকা এই ইতিহাসের বুকে ।

এদেশ নাকি এসেছে রক্তিম রঞ্জিত হয়ে
শত জননীর কোল গুলাে উজার করে
শূন্য করে মায়াবী বুক,
কেরে নিয়েছে সােহাগ সােহাগীদের
ভাইয়া ভাইয়া ডাকের বুলি
বন্ধ করে দিয়েছে ওদের
আদো আদো মুখ।

স্রোতে ভেসেছে আপন রক্তের প্লাবনে।
বরেছে জীবন করেছে আত্মবলী
উর্ধ্বে তুলিয়া অস্ত্র আর লাল সবুজের নিশান খানি
ভয়াল বর্বরদের হিংস্র কবল ফেঁড়ে
আনিয়াছে স্বাধীনতার জয়ধ্বনি।
আমি আজ শােকাবহ শত শহীদের জন্য
ভাবি আগুন্তুক অহংকার মরণের স্বাদ,
প্রার্থনা করি আল্লাহর কাছে।
জপি অন্তর ভরে দোয়া মাগফেরাত ।


ধন্য তুমি বাংলাদেশ

হে বাংলাদেশ
তুমি হাজার শহীদের রক্তের বিন্দু নিউক্লিয়াস,
তুমি ত্রিশ লক্ষ জাগ্রত জনতার অমর ইতিহাস।
তুমি শত শ্রমিকের ঘামসিক্ত বাহুবল
তুমি বাংলা মায়ের নয়ন ঝড়ানাে অশ্রুজল।
তুমি ছাত্র শিক্ষক কত বুদ্ধিজীবিদের আত্মার বলী
তুমি সহস্র যুবতী বােনের প্রেমের অলী।
তুমি বাংলার হামাগুড়ি নয়ন মনিদের আদো আদো কথা
তুমি নিঃস দরিদ্র অসহায় মানুষের নগ্ন কাঁথা।
তুমি এ বাংলার কৃষাণের বদন মুছকানাে মৃদু হাসি,
তুমি এ বাংলার কিশাের যুবকের যৌবনার রাশি।
তুমি এ বাংলার শ্মশ্রু পাকা মানুষের শুভ্র তাজ
তুমি শত আউলিয়া অলির সমাধি সাজ।
তুমি সহস্র কবি লেখকের কলম খোঁচানাে গান
তুমি শত শিল্পির হৃদয় মাখানাে কণ্ঠের তান।
তুমি বন্ধু মুজিবের শক্ত তর্জনীর অহংকার
তুমি স্বাধীন, ভােলা গগনের বুকে গােটা পৃথিবীর অলংকার।


আমি ভাল হতে চাই

আমি পাপী
পাপের অদ্রিতে শির নুয়েছে।
শত অপকর্মের দামে,
কলঙ্ককেও করেছি জয়
গড়েছি গর্বের অলংকার।
আমি শত লম্পটের সাথেও
সেথা দৌড়ে চলি-
আমি লম্পট আমি সন্ত্রাসী,
আমি তিমির যামিনীর কাল পেচা হয়ে
সমাজের অমঙ্গল রচি।
আমি তাজা প্রাণীর নয়ন তারা
খুবরে খাওয়া উরন্ত শকুন ।
আমি নিলর্জ বুভুক্ষর বেশে
দরিদ্রের হালাল গ্রাস কারি ।
আমি সামপ্রতিকের অশান্ত
দুবৃত্ত বখাটেদের মাঝেও খুব উঁচু;
হে আমার সম্মান ভাজনেরা-
এ হতভাগা দুরন্তের চোখে দেখে
দাও পূণ্য পথের আলাে।
হে দেশের বিজ্ঞ বিচারক
অতি সত্বর আমাকে রিমান্ডে তােলাে
অধর খুকরে শােনাে।
জীবনের অপকৃত্তি
আমায় শাস্তি দাও, কর উচিত বিচার।
কারণ আমি ভাল হতে চাই।
কিন্তু সাবধান !
অপরের কাছে করবে না
আমার জীবনের সমালােচনা।


ইভটিজিং

কী ব্যাপার স্যার, ভাবছেন কি ?
ও গােয়েন্দা, কীসের গােয়েন্দা স্যার ?
ও হা হা ইভটিজিং এর জন্য
কীযে বলেন স্যার, আপনাকে জানাবাে ধন্য।
তাহলে ইভটিজিং বন্ধ হবে ?
ওরাওতাে সদ্য পুরুষ সবে
নারীর লালসা কীশে মানবে তবে ?
কী ! আইনের বলে ?
বলুনতাে স্যার
এই আইন মেনে ক’জন চলে।
যৌতুকেরও তাে আইন আছে।
এসিড থ্রোয়িং, নারী নির্যাতন
শিশু শ্রম, সকলি কী বন্ধ আছে ?
সম্ভব স্যার, সম্ভব।
আল্লাহর বিধানে আছে কি অসম্ভব ?
আপনার বউ বােন ও বেটি
হতে হবে স্যার আবরু খাঁটি
আপনার ছেলেকে শিক্ষা দিন স্যার,
ব্যাস বুঝে যাবেন সব ব্যাপার।
আর কী চাই ?
পরিবারের আদর্শ আর সমাজের মানবতা।
তবেইতাে স্যার ধ্বংশ হবে।
ইভটিজিং এর বাস্তব দৃঢ়তা।


আমরা জীবন্ত জীবাশ্ম

চল্লিশ বছর আগে
যে ফুল ফুটেছিল সবুজ পাতার ফাঁকে
লােহিত বরণ সাজানাে এক বাগে।
সে ফুল ফুটেছে আজ
আমাদের হৃদয়ে হৃদয়ে।
একাত্তরের সেই কালিমায় রাগে। মু
ছে। নি এখনও কালাে বর্বর চেতনা
বুভুক্ষু বেশী হিংস্র মস্তক ফেঁড়ি
আজও বাংলার ঘরে ঘরে বাজে
মা বােনদের নিদারুণ আহাজারী।
আজও কত বিদ্রোহী শিক্ষক যুবকের
বলিষ্ট দেহে তাজা রক্ত ঝড়ে
প্রতিবাদের আগুন্তুক লেলিহান শিখায়
কত অভিভাবক মাতা পিতারা জ্বলে মরে।
আজও হারে নি ঐ নরপৈশাচিক দূবৃত্তরা
চলেছে ইভটিজিং, ধর্ষণ, নারী নির্যাতন,
এখনও ছারে নি শয়তানদের বর্বর মহরা।
আমরা স্বাধীন হই নি এখনও
পরাধীনের কবলে আছি পড়ে
আজও বাংলার নীরিহ মানুষেরা কাঁদে,
আমরা জীবন্ত জীবাশ্ম হয়ে উঠেছি জেগে স্
বাধীন চাই, শান্তি চাই ন্যায্য প্রতিবাদে।


কবিদের কাব্য প্রেম

কবিরা স্রষ্ঠার কথা বলে
কবিরা সৃষ্টিকূলের কথা বলে।
সেরা সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জাতি
মানুশ ও মানুষের মনের কথা বলে।
কবিরা ধর্মের কথা বলে
কবিরা জন্ম মৃত্যু ও কর্মের কথা বলে।
দোজাহানের মহা মানুষ নবীজির কথা বলে।
আল্লাহর মহা বিধান
যুগান্তরের শ্রেষ্ঠ বাণী আল কোরআন
জান্নাত, জাহান্নাম, ইহকাল, পরকাল
ঈমান ও আমলের কথা বলে। এ
পৃথিবী এ আকাশ গ্রহ নক্ষত্র চন্দ্র সুৰ্য্য
লক্ষ তারার মাঝেও একটি প্রাণ
কবিদের হৃদয়ে জাগে।
আলাে বাতাস প্রকৃতির সুরম্য বাহার
নদী সাগর মহা সাগর দ্বীপপুঞ্জ পাহার
কবিরা জগতের কথা বলে।
স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের কথা
গাছ গাছালি, ফসল, মাঠ তথা জন্মভূমির কথা বলে।
কবিরা মাতৃভাষার কথা বলে
কত ছন্দ কবিতা ও গানের সুরে সুরে
আনন্দে বিহবল কিংবা
ব্যথা জড়িত অগ্নিদগ্ধ মনের কথা বলে।
কবিরা আনন্দ বেদনা, সুখখাচ্ছল জীবনের কথা বলে।
কবিরা ন্যায়ের পথে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে
জগতের শ্রেষ্ট অসি কলমের দ্বারা
মৌন শ্লোগানে যালিমদের প্রতিবাদে
অন্যায় ও অত্যাচারের কথা বলে।
কবিরা হাসে কবিরা কাঁদে
প্রেম্য জগতের ভালবাসার অমীয় পিয়ায় প্রকৃতির
লিলা উম্মাদে। কবিরা প্রকৃতির কথা বলে।
ভাবনার সিন্ধুতে উর্মি খেলে সদা প্রকৃতির সাথে চলে।


লিথাল ম্যান

যারা হিংস্র বিভােরে আহার্য খুঁজে
এনােফিলিসের মতাে হুল ফুটায়
ত্বক ফেঁড়িয়ে পিয়ায় রক্তকলা।
জোড়া কর্তন দন্ত বেরিয়ে ফোঁপে
সিংহ নাদ গর্জনে।
মহারাক্ষসের দংশে কারে
নীরিহদের পবিত্র গ্রাস।
যারা ভয়াল ঘাতকের বেশে শানে।
ঈর্ষার তীক্ষ্ণ অসি চোখ রাঙ্গিয়ে কাঁপায়
দুর্বল, অসহায় ও নিঃস্ব মানুষের।
যারা বর্বর স্বভাবে সদা
নারীর অঙ্গে অঙ্গে ঝাঁঝানাে এসিড নিয়ে
আনন্দে হলি খেলে।
যারা পথে পথে কিশােরী যুবতীর
অপীরণ উৎপাত করে চলে।
যারা অর্থের মােহে যৌতুকের দাবিতে
প্রিয়তমাকে নিমেষে করে দৃষ্টির আড়াল ।
যারা নগদ ইনামের উৎসাহে
পাশবীক হৃদয়ে কারে তাজা তাজা প্রাণ।
যাদের পৈশাচিক বিবেকের অটুট অত্যাচারে
কত অবলা নারীরা অসহ্যের বিষে
অকালে তরণী ভিরায় আত্মহুতির পারে।
যারা খুন করে অহরহ।
সহস্র মানুষের জীবন জ্ঞান
ওরাই সমাজের দানবের প্রতীক
এ দেশের লিথাল ম্যান।


সময়ের তারুণ্য

ওরা ইহকালের নবীন তারুণ্য
ওরা পরকালের অন্তিম বিচারে
ভাবি সবার উধ্বে বিজয় ডংকা সাজি
হবেই আগে গণ্য।
যারা দুনিয়ার কর্মে
পূর্ণ আমলের মর্মে
শুধু ধৈর্য্যের বিনিময়ে
ন্যায়ের পথে পথে
ঘামসিক্ত নম্র গায়ে
আত্মা করেছে কামিয়াব
জীবন করেছে ধন্য।
যারা ইবলিশের সহস্র ওয়াছ ওয়াছার
ঘােলাটে বেড়াজাল ফাড়ি
সম্পদ সম্পত্তির মােহপ্রদ ভুলে।
সমাপন করে আল্লাহর বিধান
দূর করে শত দুস্তের আহাজারী।
যারা অটলে থাকি মনবলের হুংকারে
টুটিল জাহেলীর অন্যায় অবিচার
সত্য সততায় মানুষের বন্ধু সাজি
ফুটালাে আলাে সুপ্ত জাতির জীবন অম্বরে
মুখরিত সমাজে শান্তির উপাচার।
যারা সুরাসুর করে ইসলামের আলাে
জাগালাে নিদ্রিত মুসলিমের প্রাণ
দেশ ও জাতির জন্য
আমি বলি, ওরা অরুণের প্রতিচ্ছবি
ওরা সময়ের তারুণ্য।


বীর মানুষ

বীর শ্রেষ্ঠ কারা ?
বীরের মত যুদ্ধ করে
শহীদ হলাে যারা।
তপ্ত তনু ত্যাগি করে
অস্ত্র খুলে যুদ্ধ করে
শত জীবন হারা
লাল রক্ত ঝড়া।
বীর বাঙ্গালী কারা ?
বাংলাদেশের স্বার্থ প্রেমে
স্বাধীন হল যারা।
সােনার জীবন সােনার মাটি
স্বাধীন হল খাঁটি খাটি
ফুল ফসলে গড়া
সবুজ শ্যামলে ঘেরা।
বীর শহীদ কারা ?
মায়ের কোল শূন্য করে
চোখের আড়াল যারা।
বাহু জোড়া উর্ধ্বে তুলি
শিক্ষক ছাত্র, শ্রমিক কুলি
শহীদ হল যারা
বীর সেনাদল তারা।
বীর প্রেমীকা কারা ?
স্বদেশ প্রেমে আত্মবলী
জীবন দিল যারা।
ইতিহাসের বিরাট খাতায়
নামটি তাদের সােনার পাতায়
কত ছন্দ ছড়া
রক্তাক্ষরে চিত্র করা।


দেশের স্বার্থে বন্ধুর স্মরণ

ওরে বন্ধু !!
তুমি চলে গেলে
রুধির সিন্ধুতে ভেসে উর্মি খেলে
উড়িয়ে উন্মুক্ত আকাশে স্বাধীনতার
বিজয় নিশানা
গড়ে গেলে দেশটা,
কিন্তু ওরা তােমার সাহসী বুকের পাটাতে
উর্বর পশম গজাতে দিল না।
হােক সে তােমার শুদ্ধ শুক্রানুর সুবাসী ফুল
অথবা তােমার উত্তর সূরীর অন্য কেউ
শুধু লালসার অতল কালিমায়
মহা বিধানের বাণী ভুলে
অযথা আনন্দের স্রোতে খেলিতেছে ঢেউ।
ওরা তােমার তর্জনীর সম্মান হানিতেছে,
মুদিতেছে সাহসী কণ্ঠ নিঃসৃত কথার মমতা
শুধু নয়ন রাঙ্গিয়ে শাসিতেছে দেশ
ফুটিতেছে ক্ষণিকের অটুট ক্ষমতা।

আমিনুল


কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.