ঠিকানা হীন মন (সুশান্ত দত্ত) কবিতা গুচ্ছ।
বর্ণ দিয়ে আবেগ লিখি
নই আমি কবি।
সমাজ মাঝে দেখি যত
মনের মতো ছবি।।
ভাবনা গুলো রূপ পেয়ে যায় সুখ দুঃখের মাঝে। ব্যাস্ত জীবন জটিল যখন মানব জাতির কাছে।।
যখন বর্ণ জুড়ে শব্দ তৈরী করে সেগুলোকে সঠিক স্থানে ভাবনার সাথে মিলিয়ে পাঠকের মনে দোলা দিতে পারে তখনই কোনো কবি বা লেখকের নামটা বইয়ের পাতায় উজ্জ্বল চক চকে হয়ে উঠে । এই পথ অতিক্রম করার লক্ষে , পাঠকের মাঝে দেশ বিদেশের কোণে কোণে পৌঁছাতে প্রকাশ করা অত্যন্ত আনন্দের মুহূর্ত ,সেটা কোনো কবি বা লেখাকে ই অনুভব করতে পারে । সেই লক্ষ পূরণের একটি ছোট্ট প্রয়াসে আমার এই কবিতা গুচ্ছ ।
একটা পাহাড়
চাই একটা একলা পাহাড়
ঝর্না তারি কাছে।
আসবেনা কেও দেখতে আমায়
সারা দিনের মাঝে।।
প্রভাত আলোয় সাথে সাথে
ঝর্না হবে লাল।
পাহাড় থেকে দেখবো আমি
গ্রাম শহরের হাল ।।
রাতের বেলায় যোনাক সেথা
ভরে দিবে আলো।
পাখির ডাকে হবে প্রভাত
ঘুচবে রাতের কালো।।
ক্ষুদা নিদ্রা না থাকুক সেথা
সুখ দুখ আর।
দুনিয়া থেকে অনেক দূরে
হোক সে আমার পাহাড়।।
আত্মা
শরীর মাঝে বাসা তোমার
জীবের মাঝে তুমি।
তোমার জন্য হয়েছে সৃষ্টি
এই পৃথিবীর ভূমি।।
শরীর শুধু হয় সৃষ্টি
করতে তোমায় ধারণ।
তুমি চলেগেলে আবার
শরীর ছুতেও বারন।।
তোমায় বিনা শিশুও হয়
অচ্ছুত মায়ের কাছে।
সবাই ভালো বাসে যদি
তুমি থাকো মাঝে ।।
শরীর থেকে চলে গেলে
ঠাই দেবেনা কেউ।
অচ্ছুত সবাই বলবে তখন
তোমাকে আর আমাকেউ।।
প্রভু
অসহায় আজ মানব জাতি
হোকনা যতই জ্ঞান।
তোমার দিকেই আছে চেয়ে
বাঁচাও সবার প্রাণ।।
প্রভাত সূর্যের সাথে তুমি
জ্বালাও আসার আলো।
আজকে সব পথ বন্ধ ধরায়
দেখায় শুধু কালো।।
দিশা হারা আজ মানবজাতি
তোমরা দিকে চেয়ে।
দাও ফিরিয়ে আগের ছন্দে
নতুন গান গেয়ে।।
শরৎ প্রভাত
প্রভাত আলো মনের মাঝে
ভরায় খুশির সুর।
মনের মাঝে বাজছে যেনো
আপন প্রিয়ার নুপুর।।
ফুলের কুড়ি ফুটছে সব
আপন রূপ নিয়ে ।
শান্ত বাতাস বইছে আরও
সুগন্ধ ভরে দিয়ে ।।
কাসের বন দিচ্ছে দোলা
ঢেও এর মতো আজ।
নীল আকাশ ও শুভ্র এখন
মন মাতানো সাজ।।
সিউলী বনে ভ্রমর করে
আপন মনে গান।
চাষের জমিও নেই তো ফাঁকা
আছে সোনার ধান।।
প্রকৃতি এখন সেজেছে যেনো
আপন রূপে আজ।
হৃদয় সবার উটছে নেচে
সন্ধ্যা দুপুর সাঁঝ।।
আমার কাছে তুমি
হৃদয় মাঝে থাকো কাছে
প্রতি শ্বাসে তুমি।
তোমার জন্যই হয়েছে সৃষ্টি
আমার হৃদয় ভূমি।।
ঘুমের মাঝে স্বপ্নে তুমি
জোছনা রাতে চাঁদে।
পাশে তুমি নাইবা হলেও
হৃদয় নাহি কাঁদে।।
সবকিছু তেই পাই দেখতে
তোমার উপস্থিত।
হোকনা সেটা দুঃখের সুর
বিরহের ও গীত।।
শত কাজের মাঝেও তুমি
আমার হৃদয় জুড়ে।
স্বপ্নে গড়া পুষ্প রথে
যাই আমরা উড়ে।।
তুমি
অন্ধকারে ও পাই দেখতে
তোমার হাসি মুখ।
গভীর রাত্রে নির্জন পথে
নিয়ে আসো রূপ।।
কখনো আমার লাগেনা একা
সকাল বিকেল রাতে।
থাকো তুমি হৃদয় জুড়ে
আমার সাথে সাথে।।
নিশ্বাসে পাই তোমার ঘ্রাণ
প্রকৃতি মাঝেই থাকো।
কেনো তুমি আমায় এমন
আগলে করে রাখো।।
বৃষ্টি দিনে জলের সাথে
তোমায় খুঁজে পাই।
প্রখর রোদে গ্রীষ্মে আবার
রাখো তোমার ছায়।।
ঝর্না মাঝে পাহাড় হতে
নৃত্য করো ছন্দে।
সর্ব হৃদয় জুড়েই আছে
আমার রন্ধ্রে রন্ধ্রে।।
তোমার পাশে
তোমার জন্য ছিলো হৃদে
ঘর ছোট্ট কুড়ে।
ভালো বাসার পুষ্প রথে
যেতাম স্বর্গে উড়ে।।
ছিলোনা আমার অর্থে ভরা
রাজার মতো ধন।
আমার মনের রানি তুমি
থাকতে সারাক্ষণ।।
অভাবে তেও থাকতো বেঁচে
মনের ভালোবাসা।
জীবন শেষে স্বর্গ দেশে থাকবো পাশে
এটাই আমার আশা।।
জীবনের গল্প
গল্পঃ শেষে পৌঁছে যাবেই
উপসংহার এর দিকে।
হোকনা সেটা জীবন পালা
রঙিন অথবা ফিকে।।
সূচনাতেই যায়নি বোঝা
কোনদিকে তার মোড়।
বদলেনা কারো প্রেক্ষাপট
যতই লাগাও জোর।।
কর্ম সাথে হয়যে বদল
গল্পের কিছু মোড়।
গভীর কালোও হয়যে আলো
দেখায় নুতন ভোর।।
জঠর থেকে শ্মশানঘাট
অনেক রঙ্গে রাঙ্গা।
কখন কি রং দেখতে হবে
নেই কারোরই জানা।।
কবিতায় রং
বর্ণ দিয়েই লিখে কবিতা
আবেগ দিয়ে কবি।
রঙ দিয়েই সাজানো থাকে
মনের মতো ছবি।।
শব্দ গুলো সঠিক স্থানে
কবির থাকে জানা।
কোথায় কি রং দিতে মানা
সেটা নয়তো অচেনা।।
রং এই শুধু হয়না রঙিন
সঠিক লাগে স্থান।
শব্দ দিয়ে কবি সবার
ভরায় মণ ও প্রাণ।।
বর্ণ দিয়ে হলে ছবি ,আর
রঙ দিয়ে গল্পো।
দেখবে সবাই কৌতুহলে
হোকনা সেটা অল্প।।
হার জিত
হার জিত এই জীবন মাঝে
আসে অনেক বার।
প্রতি হারেই দেখিয়ে যায়
জিতার নুতন দুয়ার।।
হেরে যদি পড়ো ভেঙে
জিতবে নাতো কভু।
সকাল বিকাল যতই ডাকো
আপন আপন প্রভু।।
হারের থেকে শিক্ষা নিয়ে
নুতন করো শুরু।
বলবে তোমায় আছে যত
সঠিক শিক্ষা গুরু।।
হারে কারো শেষ নয় জীবন
হোকনা সেটা কষ্ট।
হারের থেকে শিক্ষা নিলে
তুমিই হবে শ্রেষ্ট।।
এক দেশ
সব দেশ মিলে মিশে
হতো এক দেশ।
তার নাম হতো যদি
মানুষের দেশ।।
থাকতোনা হৃংসা আর
ভেদ জাত পাত ।
থাকতো সবাই মিলে
হাতে ধরে হাত।।
বিভেদ হতনা সৃষ্টি
ভাষা আর ধর্ম।
থাকতো মানব জাতি
নিয়ে নানা কর্ম।।
হৃংসা শব্দটা চলে যেত
দূর বহু দূরে।
গাইতো সবাই গান
সব এক সুরে।।
দূষণ
বাতাসে এখন মারণ জীবাণু
শাস নিতেও মানা।
মুক্ত বাতাস চলে গেছে
মেলে তার ডানা।।
নদীর জলেও নেই সুদ্ধ
বিস মাটির মাঝে।
প্রকৃতিকে সব করেছে শেষ
নিজের আপন কাজে।।
আগের মতো হয়না বৃষ্টি
আষাঢ় শ্রাবণ মাসে।
পাহাড় ও থাকেনা ঢেকে
নরম সবুজ ঘাসে।।
প্লাস্টিক আর আবর্জনায়
নদীর গতিও রুদ্ধ।
করতে ধ্বংস সৃষ্টিকে চলছে
একতরফা যুদ্ধ।।
স্বপ্নের দেশে
মন কেনো আজ যাচ্ছে উড়ে
দূরের কোনো দেশে।
দু হাত তুলে আছে কেউ
ডাকছে ভালোবেসে।।
মনের মাঝে দিচ্ছে দোলা
তারই গলার স্বর।
বাঁধবে সেযে আমায় নিয়ে
ভালোবাসার ঘর।।
বলবে সেথা মন ভুলানো
আছে যতো গল্পো।
থাকবো বেঁচে হাজার বছর
হোকনা জীবন অল্প।।
ঝর্না নদী পাহাড় সেথা
নয়তো অনেক দূরে।
সকাল সাঁঝে দুইজনাতে
আসবো সেথা ঘুরে।।
ফুলের বন ও শোভিত সেথা
নানান ফুল ধরে।
ভ্রমর সেথা গান গেয়ে যায়
একই সুর করে।।
নেতা
কোথায় যেনো হারিয়ে গেছে
নেতার নিজের সত্তা।
আমার আমার ভাবতে গিয়েই
আজ এই অবস্থা।।
সেই তুমি দিয়েছিলে কতো
আমাদের নিয়ে পল্পো।
সেসব কিছুই পেলনা সবাই
ছিলোনা সেত অল্প।।
অবিচার আর দূর্নীতি তে
গেছে বদলে দিসা ।
দুঃখ দুর্দশার দিনে এখন
নেই কেনো ভাষা।।
তোমার আসন ঠিক করেছিল
এই দেশেরই মানুষ।
আজ কেনো সব ভুলেই গেছ
হারিয়ে ফেলেছ হুস।।
স্বার্থ
সার্থ নিয়ে চলছে মানুষ
ভেবে আপন কথা ।
নিজের পেট ভরলে দুনিয়ায়
ভাবেনা কারো ব্যাথা।।
আমার আমার করতে করতে
হবেই তুমি একা।
কঠিন দিনেও আর পাবেনা
আপন জনের দেখা।।
যতই ভাবো পেয়েছ তুমি
সাত রাজার ধন।
এসব কিছুই নয় যে তোমার,
আপন শুধু জীবন।।
ভাবনা গুলো আজ বদলে গেছে
সবার মনের মাঝে।
ভগবানও আজ খুব চিন্তায়
সকাল দুপুর সাঁঝে।।
কোন মন্তব্য নেই