Header Ads

মাসিক কবিতাকণ্ঠ, ডিসেম্বর’২৩, বর্ষ-১৬, সংখ্যা-৯১

 

কবিতা

 পরিচালনা পর্ষদ

উপদেষ্টা সম্পাদক

নাজমুলহক

 

সম্পাদক :

এমআব্দুল্লাহ আল মামুন

 

নির্বাহী সম্পাদক:

এমরেজা

লাভলী খন্দকার

 

বর্ণবিন্যাস

সিনথিয়া

 

প্রচ্ছদ:

এমআব্দুল্লাহ আল মামুন।

ডিসেম্বর২০২৩ (বর্ষ- ১৬, সংখ্যা- ৯১)


 

তোমাকে ছোঁয়ার স্বাধীনতা

সৈয়দা তৈফুন নাহার

 

না চাইতেই তোমাকে ছোঁয়ার স্বাধীনতা একদিন তুমিই দিয়েছিলে,

কমলা-পৃথিবীতে অকস্মাৎ দেখা দিলো অমাবস্যায়ও একটা পূর্ণ গোল চাঁদ -- জোস্নাশাড়ীতে জলকণ্যা তখন নদীরাজ রাজকুমারী --- সাঁঝের মায়ায় শান্ত স্নিগ্ধ ফুলবনে আমরাই হাজার রঙ প্রজাপতি

মনে আছে কি তোমার ?

জোর করেই সে রাতে আলোয় ভরিয়ে দিয়েছিলে তুমি ---

আনন্দে খসে পড়েছিল কিছু নক্ষত্র--

সন্ধ্যাতারা খুঁটে নিজের হাতে সাজিয়েছিলে আমাকে --

নেবনা নেবনা করেও আমি হয়ে গেলাম এক জলকন্যা !

হাজার দ্বিধা দন্ধ নিয়ে এক আকাশে উড়তে উড়তেই ধীরে ধীরে আড়ষ্ঠতা কাটতে থাকল , একটা সময় পর আষাঢ় মেঘ সরে গেলো --হেমন্তের এলো চুল দিশাহীন হলো -- বসন্ত ঋতু আর ফাল্গুনি হাওয়া নিয়ে উঁকি দিলো নতুন সূর্ষ রশ্মি --ভুবনটা রাঙিয়ে দিয়ে নতুন চরের মত জেগে উঠল আমার জন্য একটা অন্যপৃথিবী , নৃত্যরত ময়ূর পাখনায় রঙধনু রঙ ছড়িয়ে কাছে টানলে আজন্ম এক গোধূলী কিশোর তুমি 

সেদিন কমলা আকাশ জ্বলে উঠতে শুরু করলে-- আমিও নির্দ্বিধায় ছুঁয়ে দিলাম তোমাকে ,সে হতে যখন তখন আমি ছুঁয়ে দি তোমাকে , কখনো ভাবনার ফুসরত মেলেনি ঘুম ভাঙলে হারানো স্বপ্নের মত হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে আমার তুমিটা , আলুথালু হবে ছোঁয়াছুঁয়ি খেলাটা -- অবলীলায় হারাবে মানতে শেখা নতুন সত্যিটা !

যে সত্যিটা তুমিই একদিন দিয়েছিলে জোর করে হাতের ভেতর -- একমুঠো স্বপ্নীল বিশ্বাসের মালায় জড়িয়ে মন্ত্রের মতেই বেঁধেছিলে -- হৃদ্যতার লকারের একান্ত গোপন একটা আপন পাসওয়ার্ড দিয়েছিলে সে সিন্দুকের -- বলেছিলে ওটা একদম আনকোরা ! শুধুই আমার জন্যে তোলা ছিল চিরকাল

অথচ কত সহজে ভুল অংকের হিসাবে এখন কেবলই গড়মিল ,সরলাংকের নিয়ম উঠে গেছে বহুদিন আগে --সারাক্ষণই লাভ লোকসান আর ডেভিড ক্রেডিট এর মিলতাল , স্বপ্ন ভঙ্গের ভয়ংকর সময় এখন -- বিনা খতে আসতেই থাকে নানারূপের সমন ,

ভুল আর ভুল চারদিকে ভুলেরই দাপট ---

তবু আমি ছুঁই -- আজো আমি ছুঁয়ে থাকি তোমাকে --আজো স্বপ্ন দেখি , বুননে বুননকৌশল শিখি তোমার দেওয়া মিথ্যে অধিকারে !!

অতঃপর শীতকাঁথা হই রাতটুকু জড়িয়ে --রাতের সাথে চলে ছোঁয়াছুঁয়ি খেলা আমার --জলবাসর বজরায় ভাসায় স্বপ্নীল ছোঁয়াচে ভেলা  জানি মিথ্যে হয়ে গেছ সবটা -- তবু

এভাবেই আমাতে থেকে যায় তোমাকে ছুঁয়ে দেওয়ার স্বাধীনতা ।।

 

এইরূপ তো কথা ছিল না এলিনা

প্রণব চৌধুরী

 

এইরূপ তো কথা ছিল না এলিনা ?

এণাক্ষীর এমনতর অনুরোধ তো এমনি এমনি হয় না,

ঈশারার ইমারতে ঈমাণ যখন ঈশান কোনে ইবাদতে,

ইতি তখনও ইতরের ইতরামিতে জানায় নি ইতি এমন ইত্যবসরে 

তখনও তোমার তপোবনে তন্দ্রার তমসা,

তপন কিন্তু তরুতলে তথায় তার তণু তপর্ণে,

তৎক্ষনাৎ কিন্তু তমালের আহ্বাণে তরুবর তটিনীর তীরে

হয়ে তৎপর,

তথাপি তথায় নেই কোনো কোলাহল তমলিকা,

তচ্ছরূপের তাতলে তখনও তাপসী তিলক কেটে তপস্যার তটে,

তলানির অতল তলে কিন্তু তবুও সে ভাবে তিলোত্তমা তাই নয় কি তিতলী ?

কি বলবে তুমি কাবেরী ?

কৃষ্ণা  কাবেরী করোতোয়াকে কি করবে কার্পণ্য ?

কাকলীর কলতানে কি শুনতে পাও কিছু ?

কোকীলের কূজনের কলতানে ?

কিভাবে কখন কোথায় কোতলের কুরমানি হবে কি করতলে ?

করবে কসুর নাকি কিচ্ছা কাহীনিতে হয়ে উঠবে কিংবদন্তী ?

কথা কওয়া কি হবে কারার অন্তরালে ?

বসুধার বদনে কিন্তু নেই বদান্যতা বাতাবরণে,

বাদল মেঘ তো বেশী বেশী করে শেষে পরিনত হবে কি বাতুলতায় ?

বলো তো বীণা ?

বিশেষ কোনো বার্তা করছে কি বহন এলিনা ?

তুমি কি বলতে পারবে ?

 

শুন্য ভুবন

লাভলী খন্দকার

 

ভালোবাসা তুমি এতটাই দামি

যে তোমাকে কেনার সাধ্য আমার নাই

তুমি তো কল্পনায় বিচরন করো

বাস্তবে ধরা নাহি দাও,

তোমার মাঝে ডুবতে গিয়ে মরতে পারিনি

এত কস্ট পাই আমি

তবুও তোমার পিছু ছাড়িনি

হাজার কস্টে বিরাগে একটা কথাই

শুধু বলে যায় এই মন

ভালোবাসা ছাড়া শুন্য যে এই ভুবন।

 

এ শহরে আমার কোনো বন্ধু নেই

জান্নাতুন নুর দিশা

 

 শহরে আমার কোনো বন্ধু নেই!

অবশ্য  নিয়ে আমার কোনো আক্ষেপঅনুযোগউৎকণ্ঠা নেই।

বন্ধুহীন শহরের রাস্তায় আমি যে দীর্ঘশ্বাস নিয়ে হাঁটি,

তা বন্ধুহীনতার নয়নয় একাকীত্বের।

কেবল একরাশ ক্লান্তির!

 শহরে ক্লান্তি মুছবার মতো আমার কোনো গামছা নেই।

আমি ফুটপাতে দাঁড়িয়ে নতুন গামছা দেখি।

 শহরে আমরা প্রত্যেকেই তো একেকটা দীর্ঘশ্বাস বয়ে বেড়াই।

 শহরে প্রত্যেকের মন একেকটা সাদা থান পরে আছে।

বিধবা মন নিয়ে সাংসারিক দম্পতি যাপন করছে দিনরাত।

এর চেয়ে নৃশংস নয় আমার বন্ধুহীনতা।

আমি আমার অবসাদ ফেরি করি না কারো দুয়ারে।

যে শহরে সকালের রোদেরা অভিশপ্ত,

হাড়ের সন্ধিতে জমাট ব্যথার মতো অসহ্য জীবন যাপন,

সেখানে আমার দুঃখের কথা বলে আমি কার বুক ভারী করব?

শীঘ্রই ছেড়ে যাব  শহর।

দূরেঅন্য কোনো শহরে গড়ব বসতি,

তবে অত তাড়া নেই।

ঠিক ট্রেনের অপেক্ষায় যদি কেটে যায় একটা জন্ম,

তবু ভুল ট্রেনে চড়ব না।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.