লাভ (উপন্যাস) পর্ব-১১
লাভ
এম, আব্দল্লাহ আল মামুন
উপন্যাস পর্ব-১২
হৃদয় ও বাবু বগুড়া থেকে ঢাকা কোচে উঠেছে। বাসে চড়ে দু’জন হাসি ঠাট্টা
করছে। ইচ্ছে মত গল্প করছে। এক সময় বাসটি টাঙ্গাইল থামলাে। বাবু বাহিরে
তাকিয়ে দেখে এক ছেলে একটি মেয়ের দিকে তাকিয়ে আছে।
-বাবু হৃদয়কে বললাে,
বল দেখি ঐ ছেলে কোন দিকে তাকিয়ে আছে।
-হৃদয় বললাে, পুরুষের চোখ নারীর বুক
ছেড়ে আর কোথায় বা যাবে? সুন্দরীদের সব সুন্দরই তাে বিধাতা ঐখানেই গড়ে
রেখেছেন।
-বাবু মুচকি হাসতে হাসতে বললাে, সত্যিই পুরুষ প্রথমে নারীর বুকের
দিকেই তাকায় ।
-হৃদয় বললাে, নারীদের বুক হচ্ছে সব কিছু। স্তনবিহীন বা
ক্ষুদ্ৰস্তনধারী নারীর দুঃখ অসীম। আর যে নারী বক্ষ সম্পদে সমৃদ্ধ সে নারীই
অহংকার করতে পারে।
-বাবু বললাে, তােকে একটা প্রশ্ন করবাে উত্তর দিবি?
-কি
প্রশ্ন বল?
-বল দেখি মেয়েদের কাছে দুটি জিনিস প্রিয়। সেই দুটি কি কি?
-হৃদয় বললাে, মিথ্যা কথা বলা এবং বিছানায় শােয়া। আরাে শােন্ কোনাে মেয়ে
যখন ১৫ বছর বয়স অতিক্রম করে এবং সে যদি স্বাস্থ্যবতী হয় তবে সে চাইবে যে
কেই তাকে চুষুন করুক। আর সঙ্গে নিয়ে ঘুরুক।
-বাবু বললাে, তুই ঠিক বলেছিস
তবে তােকে আরেকটা চালাকি প্রশ্ন করি ।
-বল দেখি পারি কিনা।
-বাবু বললাে,
আচ্ছা বলতাে আমাদের কলেজে কার প্রিয়সী কুৎসিত।
-হৃদয় বললাে, তুই প্রশ্ন
করতেই ভুল করেছিস। কারণ শুধু কলেজ কেন এই সারা বিশ্বের কারাে নিজের
প্রিয়সী কুৎসিত নয়। আর কখনাে কুৎসিত হয় না। প্রশ্ন তােকে আমি ঠিকই করেছি
কিন্তু তুই যেন না পারিস সে জন্য কলেজের কথা বললাম।
-হৃদয় তার পাশের ছিটে
একটি ছেলে ও একটি মেয়েকে গল্প করা দেখে বললাে, বন্ধু শােন।
-বাবু বললাে,
কি? বাঙ্গালী মেয়েদের ঐ একটা ভীষণ দুর্বলতা প্রশংসা করলে ওরা গলে যায়,
সেই জন্যই তাে একটা কথা আছে, ছেলেরা চোখে দেখে ভালবাসে আর মেয়েরা কানে
শুনে ভালবাসে। মেয়েরা মিষ্টি কথার দাসী ।
-বাবু
হাসতে হাসতে বললাে, তাইতাে সাহিত্য শিখেছিস। তুইতাে আবার বাংলা সাহিত্য
খুব পছন্দ করিস। একটা উপন্যাস লিখেছিস।
-হৃদয় বললাে, রাখ তাের সাহিত্য।
গাড়ি থেমেছে তুই বস আমি বাদাম কিনে আনি। -বাদাম খেয়ে কাগজটি ফেলে দিতে
চোখে পড়ল কাগজে সুন্দর একটি কথা লিখা আছে।
-বাবু দেখ এই কাগজটিতে খুব
সুন্দর একটা কথা লিখা আছে।
চিঠি থেকে হয় ফুল
ফুল থেকে হয় মালা
মালা থেকে
হয় প্রেম
আর প্রেম থেকে হয় জ্বালা।
-বাবু বললাে, কাগজটা ফেলে দিসনা আমাকে
দে আমি রেখে দেই। এই বলে বাবু কাগজটি ডাইরীর মধ্যে রেখে দিল ।
-হৃদয় বললাে
দেখি তাের ডাইরী। এই বলে হৃদয় ডাইরী নিয়ে পড়তে লাগলাে। কিরে বাবু তুই
দেখি নারীদের বিপরীতে খুব সুন্দর সুন্দর কথা ডাইরীতে লিখে রেখেছিস । পড়
দেখি এক পৃষ্ঠা শুনি ।
-তুইতাে লিখেছিস শুনে আবার কি করবি ।
-বাবু বললাে,
তবুও বল, একটু শুনতে ইচ্ছে করছে। হৃদয় বললাে, শােন তাহলে।
-আজকালের নারীরা
জিদ করলে জয়ের চেয়ে পরাজয়ের ভাগই বেশী। কথায় আছে, পুরুষেরা জিদ করলে
হয় বাদশা, মেয়েরা জিদ করলে হয় বেশ্যা । সত্যি মেয়েদের জিদ ভাল নয়।
আবার নিচে লিখা আছে, নারী শব্দের অর্থ ‘না’ সর্ব ভাল কাজে বাধা, ভাল, মন্দ
জিজ্ঞেস করলে উত্তর আসবে না'। ভাল স্বামী, ভাল সংসার তবুও তার মুখে থাকবে
‘না’, আরাে কিছু তাদের দাও। এই নারীর চাওয়ার যেন শেষ নেই।
না দিয়ে গঠিত
এই নারী। রী’ নারীরা স্বামীতে খুশি নয় বাড়িতে খুশি। নারীরা স্বামীর চেয়ে
স্বামীর বন্ধুদের সাথে কথা বলে আনন্দ পায়। নারীরা স্বামীর চেয়ে স্বর্ণ
অলংকার পরে স্বাচ্ছন্দবােধ করে। নারীরা স্বামীকে শুধু ছায়া ভাবে । মনের
সঙ্গী হিসাবে নয়। সঙ্গী তাদের চাই । স্বামীর বন্ধু, নাইট ক্লাব,
মার্কেটিং, স্বর্ণ অলংকার, বাধাহীন ঘুরাফেরা, এতে নারীদের সুখ-আনন্দ।
-হৃদয় বললাে, ডাইরীতে খুব সুন্দর সুন্দর কথা লিখা আছে। বাড়ী গিয়ে
পড়বাে।
-বাবু বললাে পড়িস চল আমরা ঢাকায় এসেছি।
-বাড়িতে গেলে খালাআম্মা
ভীষণ খুশি। কি আমার সােনার ছেলেরা কেমন লাগলাে বাড়ি থেকে ঘুরে এসে।
-বাবু
বললাে, খুব সুন্দর খালাম্মা Very beautiful.
-খালাআম্মা বললাে, তােমরা হাত
মুখ ধুয়ে খেতে এসাে। অনেক দূর থেকে এসেছে মুখ দেখে মনে হচ্ছে ভিষণ খিদে
পেয়েছে তােমাদের । হৃদয় বললাে, জি খালাআম্মা খিদে পেয়েছে খেতে দিন।
-খেয়ে দেয়ে বাবু হৃদয়কে ঘরে নিয়ে গিয়ে মন খারাপ করে বললাে, বন্ধু আমি
তাের একটি বিরাট ক্ষতি করেছি। এ ক্ষমার যােগ্য নয়। তুই আমাকে যে শাস্তি
দিবি আমি তাই মেনে নিব আমার কাছে ক্ষমার যােগ্য নয় এমন কোন ক্ষতি আমার নেই
।
-আছে।
-ঠিক আছে বল । যত বড়ই ক্ষতি হক না কেন তােকে আমি ক্ষমা করে দিব।
-বন্ধু শান্তি কোন ভুল কাজ করেনি। সে নির্দোষ। তুই আমার জন্যই শান্তিকে ভুল
বুঝেছিস।
-হৃদয় আশ্চর্য হয়ে বললাে বলিস্ কি?
-হ্যা, যে দিন তুই শান্তিকে
অন্য এক ছেলের সাথে গল্প করতে দেখেছিস সে হচ্ছে আমি। আমার জন্য আজ তাের এই
অবস্থা। আমি ভেবেছিলাম তােকে বাড়ি যাওয়ার আগেই বলবাে। তারপর ভাবলাম
বাড়ি থেকে এসে বলবাে। তুই এভাবে চিন্তায় চিন্তায় শুকিয়ে যাবি আমি
ভাবতেই পারিনি। যুক্তা আমাকে এই সমস্ত করিয়েছে। আমি ভেবেছিলাম যুক্তাও
ঠাট্টা করছে পরে শুনলাম যুক্তার সঙ্গে শান্তির ঝগড়া হয়েছে তাই সে এরকম
কান্ড করেছে।
-হৃদয় রেগে বললাে, ছিঃ বাবু তুই আমার সঙ্গে এরকম কাজ করবি
আমি ভাবতেই পারিনি। আমি এখন শান্তির সামনে কিভাবে দাঁড়াবাে?
-বাবু বললাে,
আমি শান্তিকে এখানে নিয়ে আসছি। নিয়ে এসে তাের আর শান্তির সামনে ক্ষমা
চেয়ে নিবাে। এই বলে বাবু টেলিফোন করে বললাে, শান্তি হৃদয় খুব অসুস্থ তুমি
এখনি আমাদের বাড়ি এসাে।
-শান্তি
ছুটে এলাে হৃদয়কে দেখতে। এসে দেখে হৃদয় সুস্থ। বাবু বললাে, আমি আপনাদের
কাছ থেকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য আপনাকে ডেকেছি । আমার জন্যই আপনাদের এই ভুল
বােঝাবুঝি । আমাকে ক্ষমা করে দিন। আমি যানতাম না যুক্তার সঙ্গে আপনার কথা
কাটাকাটি হয়েছে।
-শান্তি রেগে বললাে, তাহলে যুক্তা এসমস্ত কাজের জন্য
দায়ী। শান্তি ও হৃদয়ের ভুল ভেঙ্গে গেলাে। বাবু কাঁদতে কাঁদতে অন্য ঘরে
গেলাে । শান্তি ও হৃদয় এক ঘরে ।
-হৃদয় বললাে, আমি তােমাকে ভুল বুঝে অনেক
কথা বলে তােমাকে কষ্ট দিয়েছি। আমাকে ক্ষমা করে দাও। ছিঃ হৃদয় ঐ সমস্ত কথা
বলতে নেই। ভুলতাে মানুষই করে। আমি তােমার উপর একটুও রাগ করিনি।
-হৃদয়
বললাে, সত্যি বলছাে?
-শান্তি হৃদয়কে জড়িয়ে ধরে বললাে, সত্যি বলছি সত্যি।
-শান্তি তুমি শুধু আমার আর কারাে নয়। পরের দিন বেলা ৩টার দিকে সবাই
খাওয়া-দাওয়া করে ঘুম দিয়েছে। আঃ রব সাহেব বাড়ি নেই । হৃদয় ঘুমে
বিভাের। এই সুযােগে বাবু কাপড় গুছিয়ে ব্যাগে ভরে কাউকে না বলে বাড়ি থেকে
বের হয়ে যাচ্ছে । এমন সময় শান্তি হৃদয়ের কাছে আসছে। শান্তি দরজায়
ঢুকতেই দেখে বাবু বাইরে ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে রিক্সার জন্য।
-শান্তি
বললাে, কি ব্যাপার বাবু কোথায় যাবে?
-বাবু শান্তিকে বুঝতে না দেওয়ার জন্য
বললাে, এক বন্ধুর বাড়ি যাচ্ছি কাল আসবাে। -শান্তি বললাে, হৃদয়কে বলেছাে?
-জি বলে এসেছি।
-এই বলে শান্তি ভিতরে গেলাে। শান্তির একটু একটু সন্দেহ
হলাে, বাবুর কথায় তাই সে দ্রুত হৃদয়ের কাছে গেলাে। -বাবু বাড়ি থেকে
সামনে দিকে হেঁটে গেলাে রিক্সার জন্য ।
-শান্তি হৃদয়কে এসে ঘুম থেকে ডেকে
তুলে বললাে, এই হৃদয় উঠো বাবু কোথায় যেন যাচ্ছে । তােমাকে নাকি বলে গেছে।
-হৃদয় লাফ দিয়ে উঠে বললাে, না, আমাকে কিছু বলেনি কাল থেকে ও আমার সাথে
কথাই বলেনি। ও কিভাবে যাচ্ছে? -বড় এক ব্যাগ ভর্তি কাপড়।
-এই
কথা শুনার সঙ্গে সঙ্গে হৃদয় ছুটে গেলাে রাস্তায়। রাস্তায় গিয়ে দেখে
বাবু নেই। নিশ্চয় বাস টার্মিনাল গিয়েছে। হৃদয় ঐ খালি পা অবস্থায় টেম্পু
নিয়ে গাবতলী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখে বগুড়ার গাড়িতে উঠার জন্য
দাঁড়িয়ে আছে। হৃদয় পিছন থেকে হাত ধরে বললাে, কিরে কোথায় যাচ্ছিস?
-বাবু
বললাে, বাড়ি যাব একটু, হৃদয়কে না বুঝানাের জন্য বললাে।
-হৃদয় কাঁদতে
কাঁদতে বললো, পাগলামি করিসনা বাড়ি চল।
-পাগলামি নয় আমি তাের সঙ্গে থাকতে
পারবাে না। তুই আমাকে ক্ষমা করিসনি আর কোন -------
-তুই তো কোন দোষই করিসনি
ক্ষমা করবো কি?
-নারে বন্ধু, বন্ধুর ক্ষতি করে সে আর বন্ধু থাকে না শত্রু
হয়ে যায়।
-আরে পাগল তােকে ছাড়া আমি একদিনও থাকতে পারবাে না। তুইতাে আমার
আপন ভাইয়ের চেয়েও আপন । তাছাড়ও তােকে ছাড়া খালাআম্মা খুব কষ্ট পাবে।
হয়তাে সইতে পারবে না।
-না আমি আর এখানে থাকবাে না। তাের প্রতারক বন্ধু
হয়ে। এই বলে বাবু যেতে লাগলাে । দাড়া বাবু, কাঁদতে কাঁদতে হৃদয় বললাে,
তাের মাকে যে কথা দিয়েছিলি হৃদয়ের সাথে সারা জীবন থাকবি । খালাআম্মাকে
যদি কষ্ট দিতে পারিস। আর আমার এতাে দিনের ভালবাসা যদি তুই উপেক্ষা করে যেতে
পারিস তাহলে যা । আমি বাধা দিবাে না। এই বলে হৃদয় চোখ মুছতে মুছতে পিছনে
ফিরতেই বাবু কাঁদতে কাঁদতে বললাে, দাঁড়া হৃদয়, আমাকে সঙ্গে নিয়ে যাবি
না?
-হৃদয় আনন্দে বাবুকে জড়িয়ে ধরে বললাে, সত্যি বলছিস বন্ধু সত্যি
বলছিস।
-বাবু বললাে তােকে ছাড়া আমি থাকতে পারবাে নারে।
-চল বাড়ি চল ।
-পরের দিন কলেজে গিয়ে শান্তি গিয়ে যুক্তাকে বললাে, যুক্তা তুই এতাে নীচ
সামান্য এক বই এর জন্য এরকম কাজ তুই করতে পারলি? আজ তাের জন্য বাবু ঢাকায়
থেকে চলে যেতাে। তুই জানিস হৃদয়ের সাথে বাবুর কত বন্ধুত্ব? ভাইয়ের চেয়েও
বেশী । যে মানুষের ক্ষতি করে সে নিজেরই ক্ষতি করে। আমি বললাম তুই সত্যিই
একদিন ভালবেসে ব্যর্থ হবি। যে মানুষের ক্ষতি করে আল্লাহপাক তার ক্ষতি করে।
কথাটা মনে রাখিস এই কথা বলে শান্তি ক্লাসে গেলাে।
যুক্তা
তার ভুল বুঝতে পেরেছে। সে ঠিক করল বাবুর কাছে সে ক্ষমা চেয়ে নিবে। ক্লাস
শেষে বাবুকে যুক্তা ডেকে বললাে, আমি আসলে বুঝতে পারিনি আমাকে ক্ষমা করে দিন
।
-বাবু মুচকি হাসতে হাসতে বললাে, ক্ষমা কিসের। আমি ভেবেছিলাম তােমার সাথে
শান্তির বন্ধুত্ব আছে। কাজটি তুমি এমনি করতে চেয়েছে। যাই বাড়ি না গেলে
খালাআম্মা রাগ করবে। এই বলে বাবু চলে গেলাে, যুক্তা মনে মনে ভাবলাে, বাবু
সত্যিই ভাল ছেলে । এতাে বড় ক্ষতি তার করলাম কিন্তু সে আমাকে কিছুই বললাে
না। বাড়িতে গিয়ে যুক্তা শুধু বাবুকেই ভাবতে লাগলাে, পরদিন ক্লাশ শেষে
যুক্তা বাবুকে বললাে, বাবু আমি তোমাকে ভালবাসি।
-বাবু আশ্চর্য হয়ে বললাে,
অসম্ভব আমি তােমাকে ভালবাসতে পারবাে না।
-কেন আমি খারাপ বলে তাই।
-না, না,
তা কেন। এমনি আমি ভালবাসতে পারবাে না।
-বাবু মনে মনে ভাবলাে, বাবুর মনে
শুধু জুসিরই স্থান। আর কারাে নয় । এই বলে বাবু চলে গেলাে।
-কিন্তু যুক্তা
বাবুকে সত্যিকারের ভালবাসে বাবুকে ছাড়া সে বাঁচবে না ।
-যুক্তা ভাবলাে,
বাবুকে না পেলে আমি আত্মহত্যা করবাে।
-দুদিন পর পিয়ন একটি চিঠি দিয়ে
গেলাে, বাবুর নামে কিন্তু বাবু সে সময় বাসায় ছিল না। হৃদয় সেই চিঠি
পেয়েছে। চিঠির উপরে লিখা আছে বাবুর নাম।
-কিন্তু লিখাটি হৃদয়ের খুব চেনা
চেনা মনে হচ্ছে।
-হৃদয় লিখা দেখে বললাে, এতাে জুসির হাতের লিখার মত লিখা।
আজ খুলে পড়বাে দেখি কে লিখেছে ।
-হৃদয় চিঠি খুলে দেখে, হৃদয়ের ধারণা ভুল
নয়, জুসিই বাবুকে চিঠি লেখছে। হৃদয় চিঠিটি পড়ে সব কিছু বুঝতে পারলাে।
জুসি বাবুকে ভালবাসে।
-কিন্তু কি আশ্চর্য হৃদয় ভাবতেই পারেনি বাবু জুসির
মত গরীব মানুষের মেয়েকে ভালবাসবে । হৃদয় ভীষণ খুশি। কিন্তু হৃদয় বাবুকে
বুঝতে দিল না । দেখি বাবু আমাকে কি বলে?
-বাবু আজই হৃদয়কে সব কিছু খুলে
বলবে ঠিক করলাে। বাড়িতে এসে বাবু হৃদয়কে বললাে, বন্ধু আরাে একটি ভুল কাজ
তাের কাছে আমি করেছি। এ ল ক্ষমা করে না দিলে আমার আত্মহত্যা ছাড়া কোন পথ
নেই।
-বাবু বললাে, আমি -আমি,
-আমি করছিস কেন বল কি বলবি ।
-ভয়ে বলবাে না, নির্ভয়ে বলবাে।
-নির্ভয়ে বল।
-ঠিক আছে তাহলে
বলি, হৃদয় আমি জুসিকে ভালবাসি । আমি জানি তুই কখনাে মেনে নিবিনা। কিন্তু
আমি জুসিকে ছাড়া বাঁচবাে না।
-বাবু কাঁদতে কাঁদতে বললাে, বন্ধু তাের কাছে
আমি মিনতি করছি। তাের পায়ে পড়ছি তবুও মেনে তােকে নিতেই হবে।
-হৃদয় যে
চিঠি পেয়েই বাবুকে মেনে নিয়েছে সে কথা বুঝতে না দিয়ে, অভিনয় করে রেগে
বললাে, অসম্ভব । আমি জুসিকে একজনের সঙ্গে বিয়ে দিবাে ঠিক করেছি তাকে ছাড়া
কাউকে দিতে পারবাে না। -বাবুর মুখ চোখ লাল হয়ে গেছে, চোখ দিয়ে পানি
পড়ছে।
-বাবু সহ্য করতে না পেরে বললাে, খবরদার হৃদয় একাজ তুই করবি না।
আমার জীবনটা তুই নষ্ট করিস না বন্ধু করিসনে ।
-হৃদয় মুখ ভার করে বললাে,
আমি যে ছেলের সাথে বিয়ে দিব সেই ছেলে ঢাকায় থাকে বাবু আশ্চর্য হয়ে
বললাে, কে সে?
-সে ঢাকা থেকে লেখাপড়া করে বাড়ি বগুড়া। তারা দুই ভাই মিলে
ঢাকায় আসছে এক উকিল সাহেবের বাসায় থাকে। সেই উকিলের কোন সন্তান
-বাবু
অবাক হয়ে বললাে, ভাল করে বল কিছুই বুঝতে পারছি না। সেই ছেলেতাে আমি।
-হৃদয় হাসতে হাসতে বললাে, আরে তাের কথাইতাে বলছি। বাবুর আনন্দে বুক ফেটে
যাচ্ছে, তুই তাহলে মেনে নিয়েছিস?
-মেনে নিয়েছি মানে যেদিন জুসির চিঠি
আমার হাতে পড়লাে সেদিনই মেনে নিয়েছি কিন্তু তােকে বলেনি।
-বাবু হাসতে
হাসতে বললাে, আমি ভাবতেই পারিনি তুই মেনে নিবি। আমিও ভাবতে পারিনি বাবু
আমার বােনকে ভালবাসবে।
চলবে.................


কোন মন্তব্য নেই