মাসিক ‘কবিতাকণ্ঠ’ (আগষ্ট-২০২০) বর্ষ-১৩, সংখ্যা-৫২
পরিচালনা পর্ষদ
সম্পাদক :
এম, আব্দুল্লাহ আল মামুন
নির্বাহী সম্পাদক:
কবির পথিক
প্রধান শিক্ষক
(উপশহর আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়,বগুড়া)
উপদেষ্টা সম্পাদক:
কাজী হানিফ
(সিনি: ইন্সটাক্টর, টিটিসি)
প্রচ্ছদ:
এম, আব্দুল্লাহ আল মামুন।
আর একজন নজরুল চাই
----------------------------------------------
গত (জুলাই-২০) মাসের শ্রেষ্ঠ কবিতা বিজয়ী
নব কুমার (ভারত) । কবিতার নাম- হোক ধর্ষণকবিতার নাম্বার- ১০৯
সম্পাদকীয়
সকল কবি ও পাঠকদের জানাই ঈদ মোবারক। এটা কবিতাকণ্ঠের ৫২তম সংখ্যা। প্রতিটি সংখ্যায় প্রতি মাসের এক তারিখেই বের হয়েছে। কোন পরিবর্তন হয় নি। কবিতাকণ্ঠ এই ধারাবাহিকতা রাখার চেষ্টা করবে ইনশাল্লাহ। তাই আজ পবিত্র ঈদের দিনেও পত্রিকাটি প্রকাশ হলো। সকল কবিদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে আগামীতে কবিতা দেওয়ার সময় কবিতার নিচে জেলার নাম লিখবেন। এটা দেওয়ার জন্য অনেক পাঠক রিকুয়েষ্ট করেছেন। কবিতাকণ্ঠ প্রকাশের পর যাদের কবিতা প্রকাশ হয়েছে তারা অবশ্যই পোষ্ট টি শেয়ার করবেন আপনার কবিতার নাম ও নাম্বার সহ। এজন্য বিশেষ ভাবে আপনাদের অনুরোধ করা হলো। আপনার কবিতায় কোন ভুল থাকলে ইনবক্স এ এসএমএস করে জানাবেন, আমরা তা সঠিক করে দিব। আপনারা যে কেউ কবিতা সমালোচনা করতে পারবেন। তবে অবশ্যই তা প্রতি মাসের ২০ তারিখের আগে পাঠাতে হবে। ধন্যবাদ সবাইকে।
এম, আব্দুল্লাহ আল মামুন।
জুলাই-২০ মাসের কবিতা সমালোচনা
আব্দুল্লাহ দি মাহমুদ চমৎকার একটি কবিতা লিখেছেন আপনি । আপনার কবিতায় কলম ধরা আমার সাধ্য নাই। এবার প্রকাশ্যে গালি দিতে পারলেই সমাজ বদল হবে বলে মনে হয়। সেলিম আলতাফ তো বরাবরই গুনি লেখক। শব্দ চয়ন ভাল লেগেছে। অর্ণঃঈক্ষণ আপনার আরো ভাল কবিতা চাই। ১০ বছর আগে আপনার কবিতা প্রিন্টেড কবিতাকণ্ঠে পড়েছি- আরো ভাল লেগেছিল । এ কে আজাদ এপার ওপার বাংলার প্রথিতযশা কবি ও গীতিকার। তার কবিতায় কলম ধরা আমার কি সাধ্য? জীবনের , সমাজের সবখানেই যে ছন্দের অমিল তা শুধরে নিতে হবে সবাইকে। আরো কবিতা চাই, কবি। ১০৮, ১১২ নং সাধু ও চলিত ভাষার মিশ্রণ, লক্ষ্য করতে হবে। সাধু ভাষায় না লেখাই ভাল বলে মনে হয়। ১১৫, ১২১ আরো একটু সংক্ষিপ্ত হওয়া চাই। তা ছাড়া সবার লেখাই খুব ভাল লেগেছে ।
সমালোচক
কবির পথিক
(প্রধান শিক্ষক)
(উপশহর আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়, বগুড়া)
লকডাউন (১২৬)
আব্দল্লাহ দি মাহমুদ
প্রভাষক (বাংলা)
বিয়াম মডেল কলেজ, বগুড়া।
মৃত্যুর মিছিলে আমরা করছি পার
আমাদের সময়ের ঘোর অন্ধকার
বেদনার দীঘল রজনী অবাক করা পৃথিবীর
নির্বাক সময় অতিথির মুখে দেখি মৃত্যুর পরোয়ানা
কাটছে আতংকের কাল
বহুকাল আমরা আতংকিত হইনি
বিশ্বব্যাপী এতো যুদ্ধ এতো ধ্বংসযজ্ঞ দেখেও
আমরা এতোদিন আতংকিত হইনি এতোটুকু
এখন প্রিয়তমার মিষ্টি চুম্বন আর
গাঢ় আলিঙ্গনেও আজরাইলের গরম নিশ্বাস বুকে লাগে
চোখের মদিরায় ভাসে তার রক্তচক্ষু
বহু বহুকাল পর কাটছে আতংকের কাল।
যখন শুনেছি হাওয়ায় কথা বলা যায়
মহাকাশে স্টেশন নভোচারিরা
ভেসে বেড়ায় দিনের পর দিন
সাগরের তলদেশে নতুন পৃথিবী
হাতের মুঠোয় বিশ্বজগত
কিছুই মনে করিনি ঘটেনি কোনো ভাবান্তর।
অথচ গতিশীল এই পৃথিবী যখন
এক লহমায় স্তব্ধ হয়ে যায়
লকডাউন নামক শব্দের নতুন আবিষ্কারে
অবাক হয়েছি এক জীবনে এই প্রথম অবাক হলাম!
ভর দুপুরে (১২৭)
কাজী হানিফ
সিনি: ইন্সট্রাক্টর টিটিসি (ঢাকা)
এই ভর দুপুরে বৃষ্টি আমার জীবন সাথি তুমি,
হাড়িয়ে গেলে কেন আজ।
বৃষ্টিতে ভিজে খেলেছি কত দুজনে হাত ধরে।
মাঠের মাঝে তুমি আর আমি কেউ নেই কাছে,
বজ্রপাতে জড়িয়ে ছিলে মনে আছে আজ বৃষ্টি দেখে।
পানিতে তোমার চুলগুলো কপাল বেয়ে বুকের মাঝে,
ভিজে কাপড়ে মায়া শরীরে জড়িয়ে ছিলো লাজুক দেহ নিয়ে।
হাতেহাত খালি পায়ে লুটোপুটি মাঠের মাঝে,
হংশমিথুন ডানা ঝাপ্টিয়ে খেলছিলো পানিতে।
মনে পরে তোমায় এই ভর দুপুরে বৃষ্টির দিনে।
ছোঁয়া যায়, ধরা যায় না (১২৮)
কবির পথিক
(প্রধান শিক্ষক-উপশহর আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়, বগুড়া)
তোমাকে নিয়ে প্রত্নত্বাত্তিক গবেষনায়
আমি এক উদভ্রান্ত হোরোডাটাস।
প্রাগ-ঐতিহাসিক,ঐতিহাসিক, আর্য-অনার্য- বৈদিক ঘুরে
অতি সম্প্রতিকালের ওয়ারী-বাটেশ্বর।
সামান্য চোখ আর হাসির রহস্যের পাঠোদ্ধার করতে ,ছিন্ন ভিন্ন বিশ্ব ব্রম্মান্ড।
মাকড়সার জালে বেধে ফেল সৌরজগৎ
গোলাপের হৃদপিন্ডে আবাস গড়ো লক্ষ কীটের,
আদমের গলা টিপে ধরে-
হৃদয়ের জলসাঘরে তোল বাজুবন্দের ঝংকার।
নর্দমায়-ডাস্টবিনে-ওষ্ঠ পিষ্ঠে জয়নুলের তুলি বেধে ফেলে
নিজের বুকে চালাও বুলডোজার।
একপলক চাহনীতে-
তোমার পায়ে নজরানা দিতে হুমরি খায় সমগ্র গোলার্ধ।
তুমি মুচকি হাস ! ছোঁয়া যায় ধরা যায় না,
হৃদয়ের ঘুলঘুলিতে বসে থাক ঘাপটি
দেখতে তব পাইনিা।
পূণ্যভূমি (১২৯)
যাযাবর তুষার (প্রভাষক)
ইকবাল সিদ্দিকী কলেজ, গাজীপুর।
অস্তগামী অরুনের
রক্তিম
আভায়,
ভাবলেশহীন চিত্তে
ভাবছি
তোমায়।
শহুরে
জীবনে
হাসির
মুখোশ
পরে
আছি,
হাসির
অন্তরালে লুকিয়ে
আছে
দুঃখ
রাশি
রাশি।
দূর্বা
ঘাসের
ডগায়
শিশির
বিন্দু
বরই
ডালে
আচ্ছাদিত স্বর্ণলতা,
শহুরে
নিরস
জীবনে
কেউ
নেই
পাশে
নিঃসঙ্গতায় কার
সাথে
কব
কথা..??
পল্লী
ঝিলে
ডুব
দিয়ে
উড়ে
যাওয়া
বুনো
হাস
ডানার
ঝাপটায়
ফেলে
যায়
জল,
ধনে
ফুলের
গন্ধে
ব্যাকুল করা
বিকেল
আর
কোথায়
পাব
বল?
ইট
পাথরের
এই
শহরে
নিঃসঙ্গ নিষ্প্রাণ জীবন,
জন্মভিটার প্রতিটি ধূলিকণা
নিখাদ
আপন।
গ্রাম্য মেঠোপথের
ডানপিটে ছেলের
দল,
তাচ্ছিল্য করে
বলে
কতটা
সুখে
আছিস
বল..?
তুমি
আমার
প্রিয়
জন্মভিটা
স্মৃতিময় পুণ্যভূমি,
যেথায়
থাকি,
যেমনি
থাকি
হৃদয়ে
আছ
তুমি।।
জল উপাখ্যান (১৩০)
সেলিম আলতাফ (খুলনা)
জলজোছনায় ভিজে ভিজে
কিসের তুফান জাগাও তুমি ?
ভালবাসার জলঅক্ষরে
নাম লিখতে গিয়ে
কিসের ঢেউ তোলো জলসরোবরে ?
আমার ভিতরে ফোঁটে
জলশ্যাওলার গাঢ় সবুজ ফুল,
হৃদয় জুড়ে পেখম ম্যালে
জলময়ুরের রঙ্গীলা লেজ,
তবু তুমি উদাসী জলপরী হয়ে
সুখের জলপ্রপাতে কিসের
জলতরঙ্গের খেলা খেলো ?
গোলাপ প্রিয় মেয়ে -
এসো সব ভাসিয়ে দেই জলোচ্ছ্বাসে
দু‘জনে উড়াই ভালবাসার জলপায়রা ।
আক্ষেপ (১৩১)
লেফাফা দুরস্ত
(জয়পুরহাট)
আমি বলিনি আবেগে
প্রথাবদ্ধ দেবার্চনা ডিঙ্গিয়ে
আমি জানি, আমার শারীরিক
সক্ষমতা অর্জনের সামর্থ্য সম্পর্কে।
অভাব নেই স্রস্টার কাছে
অভিযোগ অনুযোগ করার ধর্মভীরু লোকের।
অপেক্ষা নাই আক্ষেপের
নেই কোনো শালীনতা প্রতিবাদে।
সোচ্চার হবার সুযোগ
মুষ্টিবদ্ধ দৈত্যদের দুর্দান্ত মস্তিষ্কে
আছে শুদ্ধস্বর স্তব্ধতার অহংকার।
সাধু আজ দূর্নীতির আগ্রাসনে
প্রতিবাদ তাপস্য সম সম্ভব নয়
আছে প্রান্তে শব হওয়ার সম্ভবনা।
তবুও হারিয়ে যায় প্রতিবাদী অগ্রগতির প্রকৃত যোদ্ধা
মুষ্টিমেয় দৈত্যদের দুর্দান্ত নির্যাতনে।
স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান আজ জিম্মি
দৈত্যদের দুর্দান্ত মস্তিষ্কে।
আসো জাগি নব সম্ভাবনাতে
কতকাল জিম্মি থাকবো দৈত্যদের হাতে?
এখোনো কি সময় হয়নি প্রতিবাদে সোচ্চার হবার?
আর কতো হারিয়ে যাবে অকাল প্রাণ।
বেঁচে আছি (১৩২)
অর্নঃঈক্ষন
( রাজশাহী)
জানতে কি চাও তুমি
কতটা ভালোবাসি
শুনতে কি পাও তুমি
কষ্টের সিম্ফনি
বেচে আছি শুধু বেচে আছি।।
তোমার দেয়া প্রেমানলে
পুড়ে
পুড়ে
ছায়
হয়ে
চলে
যাওয়ার পথে
আজও
চেয়ে
থাকি
বেচে
আছি
শুধু
বেচে
আছি।।
সবটুকু কেড়ে নিয়ে
নিঃস্ব করে
দিয়ে
একবুক
বিরহের সাথে
সাপলুডু খেলি।
বেচে
আছি
শুধু
বেচে
আছি।।
মুঠোয় আটকে জীবন (১৩৩)
(ভারত)
মুঠোফোনে মুখ গুঁজে সারাদিন
জীবনকে ভাবছি করবো রঙিন
রাগ-ঘৃণা হাসি ভালোবাসা দিয়ে
ভাবনার লেনদেন হবে জমিয়ে।
আড্ডা জমেনা বসে মুখোমুখি
ফোনেই
খুশি
বুড়ো
থেকে
খুকি
আন্তর্জালে আজ পড়েছি ধরা
একশো
ডাকেও
দিইনা
সাড়া।
কোনো কাজেতেই লাগেনা মন
আটকে
গিয়েছে মুঠোয়
জীবন
স্পর্শের মায়ায়
আসক্তি প্রবল
জনজীবনে তার
পড়ছে
কুফল।
মাদকের চেয়েও গভীর নেশা
ক্ষণিকের সুখ
বড়ো
সর্বনাশা
তবুও
ঘেরাটোপে বন্দী
সবাই
ভুলভুলাইয়ার ভুল
পথে
ধায়।
আসক্তির বাণে হচ্ছে ক্ষতি
পাচ্ছেনা সুখ
কেউ
একরতি
ভার্চুয়াল নদে
না-ভেসে আর
মিথ্যার জগত
করো
পরিহার।
কালের খরস্রোতে দিয়ে ডুব
কুড়ায়ে আনো
অলীক
সুখ
ডিঙিয়ে গিয়ে
নেশার
প্রাচীর
সম্পর্করা হোক
আবার
গভীর।
উত্তরণ (১৩৪)
জাহেদ রনি
(ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া)
যে অভিশাপ আমাদের হাতে হাত
রাখা হতে বঞ্চিত করে
আমি তার থেকে মুক্তি চাই,
যে অভিশাপ আমার মায়ের
বুকে আগলানো থেকে বঞ্চিত
করে আমি তার থেকে মুক্তি চাই,
আমার প্রিয়তমার কপালে হাত
রেখে ভরসা দেয়ার আধিকারটুকু
যে অভিশাপ কেড়ে নেয় আমি তার
থেকে মুক্তি চাই,
প্রকৃতির জারি হওয়া এই অভিশাপে দাহ্য হৃদয়
আবার সতেজ হবে,
আবারো প্রকৃতিতে অভিশাপের বদলে
গোলাপের সতেজতা মাথাচাড়া দিবে,
আবারো আমি আমার মায়ের বুকে
মাথা রাখবো নতুন করে,
আবারো আমার প্রিয়তমার কপালে
হাত রেখে নিশ্চয়তা দেয়ার অধিকারটুকু পাবো,
প্রকৃতি তুলে নিবে তার জারি হওয়া
সকল অভিশাপ,
অভিশাপের তিক্ত কালো ধোঁয়ার
পরিবর্তে এ পৃথিবী আবারো ভরে
যাবে ভালোবাসার সৌরভে।
ভালবাসনি (১৩৫)
নিলাসা নওরিন (নাটোর)
ভালো তো বাসতে বলিনি
বলিনি প্রতিদিন এস দেখতে আমায়
কাজের অগোচরে ভেবো না আমায়
বলিনি নিয়ম করে
রোজ বিকেলে নিয়ে ঘুরতে,,,
রাস্তার ধারে দাড়িয়ে ফুসকা খাওয়াতে,,,
বলিনি সময়ে অসময়ে
অভিমান, খুনসুটি দেখতে
আনমনে তোমার মাঝে আমাকে নিয়ে
ভাবতে,,,
এত না এর মাঝে শুধু বলেছি মনের মাঝে
আমাকে রাখতে।।
কেউ দেখবে না,
জানবে না কেউ
কে রয়েছে মনের ভিতর
আমি পারিনি (১৩৬)
নুসরাত শরমি
তুমি চলে যাওয়ার পর কতো কেউ
আমায় ভালোবাসি বলেছিলো!
আমি একবারো ফিরে চাইনি,
আমি পারিনি ভালোবাসা
অনুভব করতে!
আমি বুজতে চাইনি
তাদের
করুণ
আর্তনাদ!
আমি
বিশ্বাস করতে
পারিনি
আমাকে
আবার
ভালো
রাখার
প্রতিশ্রুতি!
আমি বুঝতে চাইনি
সব মানুষ এক নই!
মানুষ
আলাদা
আলাদা
শ্রেনিতে ভিভক্ত,
সবাইকে ভাগ
করতে
হয়
আলাদা
আলাদাভাবে!
আমি বিশ্বাস করতে পারিনি
ভুল
মানুষ
চলে
গেলে,
সঠিক
মানুষ
আসে!
আমি
একবারো তাদের
ভালোবাসার এই আবেদন
গ্রহণ
করতে
পারিনি!
তুমি চলে যাওয়ার পর সে যে
কি বিষন্নতায় কেটেছে দিন রাতভর!
কিন্তু তবুও
আমি
কারো
ভালোবাসায় আকৃষ্ট হতে
পারিনি!
কেউ পারেনি আমাকে মুগ্ধ করতে,
পারেনি আমার
মনকে
ছুঁয়ে
দিতে,
পাইনি
কেউ
আমাকে
নিয়ে
সপ্ন
দেখার
অনুমতি!
পাইনি
কেউ
ভালোবাসার অনুভূতি!
তুমি চলে যাওয়ার পর,
অনেক
অশ্রু
বিসর্জন দিয়েছি,
তিলে
তিলে
কস্ট
দিয়েছি নিজেকে
তবুও
চাইনি
কারো
একটু
বিনয়!
চাইনি
কারো
সহানুভূতি!
তুমি চলে যাওয়ার পর,
আমি
আজো
ভালোবাসতে পারিনি!
আমি
আজো
কাছে
ডাকতে
পারিনি!
ক্ষত (১৩৭)
সুমাইয়া ইসলাম
টুপটাপ বৃষ্টি, চুপচাপ তুই
জলে ভেজা সন্ধ্যা
হাতে তোর রজনী গন্ধা
অবাক দুচোখে,
চোখে রেখে চোখ
ভালোবাসি খুব, বললি তুই
ভালোবাসা কি?
অপেক্ষা নাকি উপেক্ষা!
অপমান না অবহেলা!
স্বার্থের টানে, আসা আর যাওয়া?
সয়ে যায় সব
না পাওয়া তোকে
আর চাই না পেতে
নতুন ক্ষত কে চাই বল?
পুরোনো ক্ষততেই
আজও ব্যাথা হয় রোজ
রোজ তাতে প্রলেপ পরে
সময়ের প্রলেপ.
সুমাইয়া ইসলাম
আত্ন শুদ্ধি (১৩৮)
রাজীব আহমাদ (বগুড়া)
মালাকুল মউত এসে
যদি দেখায় মৃত্যুর স্বাদ
পারবেনা নিতে কভু
এ ধরণীর ফের স্বাধ,
চোখে দেখেছি বেঁচে থাকতে
কত শত মানুষের মরণ
আখের
গোজারের ভয়ে
আমি
তবু
হইনি
সচেতন,
সৎ পথে
আছে
বাঁধা
নেই
তো বিছানো ফুল
সেই
ভয়ে
হোচট
খেলে
সেটা
হবে
বড় ভুল,
মৃত্যুর কোন ঔষধ নেই
লোভের
নেই
তো শেষ
কর্মের ফল ভুগতেই হবে
চোর
হও কিংবা সাধু দরবেশ।
হেদায়েতহীনতার অভিশাপে (১৩৯)
মোঃ শাহিনুর রহমান রাসেল
বাতাসে আজ গন্ধ ভাসে,
বিবেক পঁচা মানুষের লেলিহানে।
হায়েনাগুলোও আজ আতঁকে ওঠে,
মৃত্যু লাশে;
বিবেক পঁচা মানুষেরা স্বার্থ খোঁজে।
ধর্ষকেরা আজ ধর্ষণ
খেলায়
মত্ত
থাকে
এক কষ্ট ভুলিতে না ভুলিতেই আরেক
কষ্টের জন্ম
তোলে,
মায়ের
মনে
ব্যাথা জাগে,
গগণ
বিদারী চিৎকারে বাতাস
কাঁপে,
সমাজ
পতিরা
আজ বিবেকের কাঠগরাতে দায়সারে,
ধর্ষকেরা আজ নির্বিঘ্নে ঘোরে।।
বাতাসে আজ গন্ধ
ভাসে
বিবেক
পঁচা
মানুষের লেলিহানে।
নিলজ্জাও আজ কুঁড়ে কুঁড়ে মরে,
মনুষ্যত্বহীন বেহায়াপনা দেখে।
তাইতো আজ,
যুগে
যুগে
করোনারা আসে
অসুস্থ বিবেকের সুস্থতা দিতে।
বিধাতারী অদৃশ্য বলে সর্তকবাণী হয়ে,
তবুও
ওরা
মগ্ন
থাকে
আত্মখেলায় নগ্ন
হয়ে,
হেদায়েতহীনতার অভিশাপে!!
আলো (১৪০)
রীতম দত্ত (ভারত)
প্রকাশ হও,বয়ে যাও
ওরে কল্পনাবাসী মেয়ে
প্রেম যে আমার আসছে ধেয়ে।
এমনি তোমার চোখ লাগানো
আগুন
ঝরানো
রূপ
মনে
হয় যেন পারতাম যদি
আমি
দিতে
ডুব।
তোমারি ঠোঁটের এক কোণেতে
আমায়
দেখে
দেওয়া চিলতে
হাসি
বিশ্বাস করো,মনেও রেখো
বাজায়
মনে
প্রাণে প্রেমেরই বাঁশি।
তুমি কি জানো
সাথে
কি মানো
যে,
সাতসমুদ্র পার
করে
বিশালাকার তরী
এনে
যাবো
নিয়ে
পালিয়ে
মৎস্যকন্যা,সাথে
সাগর
রাজাও
জানাবে অভ্যর্থনা
সমুদ্র লুণ্ঠন জ্বালিয়ে।
নিয়ে তোমায় যাবো আমি
আমারই
কল্প
দেশে
থাকবে
সেথায়
মহা
আড়ম্বরে
আমারই
রাণী
বেশে।
বইবে হাওয়া,খানিকটা ঝড়ো
সেই
পরিবেশ ভালোবাসি আমি
বড়ো।
প্রকৃতি নাচবে হাওয়ার তালে
থাকবে
তাতে
ছন্দ
মনের
আলোয়
তাও
পারবে
দেখতে
যদি
হও প্রেমে অন্ধ।
যদি দেখো মনের ভেতর
ঈশান
কোণে
কালো
দেখবে
তারই
পাশে
দাঁড়িয়ে আমি
নিয়ে
মনের
আলো।
আমার ছোট্ট বেলা (১৪১)
আল ফারুক আহম্মেদ
পুরো বাড়িটা শুধু নিজের মনে হত
সকাল থেকে সন্ধে শুধু খেলা আর দৌড়া দৌড়ী করে কাটতো সারাবেলা
লাটিম ঘুরাতে মজা পেতাম বেশ
সেই সাথে গোল্লাছুট আর কানামাছি খেলা
খেলায় এতই ছিলাম মত্ত
সন্ধ্যা নামত যখন
টের পেতাম তখন
মা বলত ঢেকে
তোর খেলা শেষ হবে কবে
ঘুড়ি বানাইতাম রঙ বেরঙের
খোলা
মাঠে
মনের
সুখে
উড়াইতাম সেই
ঘুড়ি
মাঠের
আকাশটা ছিল
ঘুড়ির
দখলে
ঘুড়ি
কাটাকাটি খেলা
চলত
সারা
বেলা।
বাড়ীর উঠোনটার কথা পড়ছে মনে বেশ
বৃষ্টি নামত
যখন
ভিজতে
নেমে
যেতাম
তখন
পরম
সুখে
উঠোনের কাঁদা
গুলো
মেখে
নিতাম
সারা
গায়
তাড়াতাড়ি উঠ,
মা দিতেন বকনি
ঠাণ্ডা লেগে
জ্বর
আসলে
বুজাবো তখনি।
পেয়ারা গাছটা ছিল উঠোনের এক পাশে
পাতার
ফাঁকে
ফাঁকে
পাকা
পাকা
পেয়ারা
পেড়ে
পেড়ে
খেতাম
কি যে মজা পেতাম।
পাশের জাম গাছটা একটু নুড়ে গেছে
দোলনা
বানিয়ে সেখানে মনের
সুখে
দোল
খেতাম
সকাল
বিকেল
সেখানে
ঘরের পাশেই বরই গাছ
খানিকটা হেলে
গিয়ে
পড়েছে
চালের
উপর
টক মিষ্টি বরই
সবর
করতে
কি পারি
মাছ ধরাটা ছিল খুবই মজার ব্যাপার
বাড়িতে ছিল
পুকুর
পাশে
নালা
ডোবা
রই কাতলা কই পুটি
সবই
ছিল
তাতে
মাছ
ধরতাম
খলি
ভুরে
বরশি
আর জাল পেতে।
যখন স্কুলে ভর্তি হলাম
মাস্টার মশাইয়ের কথা
কিছুই
বুঝি
না যা তা
মন বসে না ক্লাসে
বসে
বসে
ভাবি
কখন
যে যাব বাড়ি।
মহামারী (১৪২)
মোঃ আমিনুল ইসলাম
(কুড়িগ্রাম)
প্রকৃতির নির্দিষ্ট ক্ষেত্রফলে
সৃষ্টির বিচিত্রতা উদ্ভাস করে,
যেখানে মানুষের কাঙ্খিত চাহিদার চাপে
প্রকৃতির উদরে উদরাময় ডিহাইড্রেশন ঘটে।
মানুষ বাঁচার জন্য মরিয়া হয়,
বাঁচার জন্য
সুখ
আর সুখের জন্য-
বিনষ্ট বিবেকের অশালীন চর্চা,
বিভ্রম বিলাসী মস্তকের অনর্থক শখ্যতায়,
প্রকৃতি আবারও
অতিষ্ঠ,
মৃত্তিকার অসাম্য ক্লান্তি
বিষাক্ত বাতাসের তৃপ্তিহীন আপত্তি,
পানির
নিরব
তরঙ্গে বিশুদ্ধতার আকুতি-
মুর্ছিত প্রাণে কেঁদে
মরে
গাছপালা।
পত্র
রন্ধ্রের অবরুদ্ধ শ্বাসকষ্টে সালোকসংশ্লেষণ থমকে
যায়।
নেতিয়ে পড়া কটির শক্তি সঞ্চার করে
প্রকৃতি উঠে
দাঁড়াবার চেষ্টায় মরে-
মানুষকে বাচাঁবে বলে,
কিন্তু মানুষ
তো অজ্ঞের তালে নৃত্য করে!
আর কতটা ধৈর্য আছে প্রকৃতির?
অতএব,
প্রকৃতি বাচাতে চায়!
অসহ্য
ক্লান্তি শেষে,
অসাম্য বলের
আঘাতে-
একটা
বিপরীত প্রতিক্রিয়া করে,
সেই
বলে
মানুষ
পৃষ্ট
হয়,
ভয়াবহ
আক্রান্তের জালে-
অদৃষ্টের পরিহাস হেরি,
'করোনার মতো
সৃষ্টি হয়
-
অকাল
মহামারী।
বয়ফ্রেন্ড (১৪৩)
শাহপরান তপাদার
মেয়েদের একটা বয়ফ্রেন্ড থাকা চাই।
বয়ফ্রেন্ড, যে কিনা তোমাকে দীর্ঘ পথ একসাথে পাড়ি দিবে
গোলাপ হাতে প্রতিদিন দাড়িয়ে থাকবে
রাস্তায় নিরাপদে চলার সহচর হবে।
যে কিনা তোমাকে বখাটেদের হাত থেকে রক্ষা করবে।
মেয়েদের একটা বয়ফ্রেন্ড থাকা চাই।
যে বিপদে হাতটা শক্ত করে ধরে রাখবে।
সমাজ
নিয়ে
ভাবছো?
যে বয়ফ্রেন্ড থাকা মেয়েটাকে কলঙ্ক দিবে।
সমাজ
কখনো
পেরেছে
নারীর
নিরাপত্তা দিতে?
এই সমাজে তোমাকে টিকিয়ে থাকতে একটা বয়ফ্রেন্ড চাই।
সম্ভ্রম হারা
নারীকে গ্রহণ
করেনি
কেউ।
একটা
ছেলেই
কেবল
পারে
ভালোবেসে তাকে
স্বপ্ন দেখাতে,
সাহস
করে
তার
সাথে
ঘর বাধার।
মেয়েদের একটা বয়ফ্রেন্ড থাকা চাই।
বজ্র
শব্দে
যখন
ভয়
পাবে
বয়ফ্রেন্ডকে জরিয়ে সে ভয়কে জয় কর।
একটা
বয়ফ্রেন্ডই পারে
তীব্র
শীতে
নিজের
শাল
দিয়ে
প্রেমিকাকে জড়িয়ে উষ্ণ
রাখতে।
মেয়েদের একটা
বয়ফ্রেন্ড থাকা
চাই।
প্রিয়ন্তি (১৪৪)
আইনুন্নাহার আল্পনা
(বগুড়া)
প্রিয়ন্তি আশ্বিনের জোছনা নাকি অনেক বেশি সুন্দর হয় জানো তুমি?
সন্ধ্যাতারাটাকে নাকি খুব অসহায় লাগে বোঝ তুমি?
প্রিয়ন্তি তুমি কখনো কদম হাতে বৃষ্টিরজলে ভিজেছো?
কখনো জোনাকির মিছিলে চুপিচুপি সঙ্গী হয়েছো ?
একি প্রিয়ন্তি তুমি নিবাক কেনো?
তুমি কি কিছু ভাবছো?
প্রিয়ন্তি কিছুই বলছোনা যে?
প্রিয়ন্তি কাউকে আর কখনো কিছু বলতে চাইনা কাউকে বোঝাতেও চায়না ভালো মন্দের অনুভূতি সে কথাটুকু বলার ভাষাও প্রিয়ন্তি অপ্রকাশিত রাখতে চায়।
এক জীবন যদি কম হয় সুখের জন্য তবেতো অন্য জীবনের সুযোগ আর আসেনা তাইনা?
তাহলে দুঃখও প্রিয়ন্তিদের প্রলাপ মাত্র।
সুখি হবার জন্য ঘর আছে আসবাবপত্র আছে আরো আছে কত কি?
শিউলির মালা ভেজা কদম আর স্নিগ্ধ জোছনা কি হবে সেসব তো থাকে ঘরের বাইরে।
আমিতো কেবল ঘর চিনি।
বিভ্রান্তি (১৪৫)
শোভন সাহা
প্রকৃত, সে কি সত্যিই প্রকৃত,
আপেক্ষিকের কাছে ?
আপেক্ষিক তো প্রকৃত নয়
প্রকৃত বলে পিছে !
আপেক্ষিক তোর বিভ্রান্তির ফাঁদে
পা দিল সবাই
হেসে হেসে আপন মনে
কহেন প্রকৃত মশাই
আপেক্ষিক সে চাটুকার
ছলনা তার মনে
শুধালো সে বলো দেখি
কি চলছে গোপনে
রহস্যের এই খেলায় মত্ত
প্রকৃত আর আপেক্ষিক
হচ্ছে শিকার মানব জাতি
হারিয়ে ফেলে দিক
দিচ্ছি কি আমরা প্রকৃত সঠিকের সঠিক গুরুত্ব
বাড়াচ্ছি না তো আপেক্ষিকের আপাত পুরুত্ব ।।
করোনায় আত্মনাদ (১৪৬)
নেপাল সরকার (ভারত)
আমি , দেখেছি করোনায় আত্মনাদ।
হকার খুদার জালা ওগো প্রানো নাথ।
আমাদের আর দিও না সাজা, করো রক্ষা।
প্রকৃতি লংঘন করা কত বড় পাপ বুঝেছি সখা।
চিত্রগুলি যখন চোখের সামনে ভেসে ওঠে।
কি জোরে বুকের মধ্যে কেঁপে ওঠে সজোরে।
অসহায় মানুষগুলো দু'মুঠো অন্ন জোটে না।
সরকার হাওয়া খায় ঠান্ডা মাথায় বসে কথা কয়না।
যদিও বলে কথা সেখানে রাজনীতির খেলা।
আমরা জনতা এক অসহায় মেলা।
হাসপাতালে আমাদের ভর্তি নেয় না।
দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয় কেউতো দেখেনা।
অবশেষে মৃত্যু হয় রাস্তাঘাটে।
কেউতো একটু ছুঁয়ে ও দেখেনা পাছে।
কি নির্মম পরিহাস, কতইনা করেছি পাপ।
তারি পাচ্ছি সাজা অভিশাপ।
যে মায়ের বুক খালি হল, সে না কত যন্ত্রণা পেলো।
পিতার হৃদয় ভাঙ্গা দুঃখগুলো টুকরো টুকরো হলো।
তখন তারা প্রার্থনা করে ভগবানের কাছে।
আর যেন কোন পিতা-মাতার বুক খালি না হয় ধরাতে।
লকডাউন এর ঘরে থাকা , খাদ্যদ্রব্য যাচ্ছে না দেখা।
কর্মহীন মানবজীবনে এবড়ো এক সাজা।
বাজারে জিনিসপত্রের দাম আগুন।
একগুন জিনিসের দাম দ্বিগুণ।
সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।
এ ধরনের অন্যায় কি করে সইরে।
যেখানে দেশ এবং মানুষের অর্থনৈতিক বিপর্যয়।
সেখানে এমন কঠোর নীতি কেন করছো দুর্জয়।
চুপ করে বসে থেকো না আর এবার অন্তত কিছু বলো।
করোনায় আর্তনাদে মানুষের জন্য কিছু করো।
চাষবাস (১৪৭)
প্রণব চৌধুরী
(ভারত)
চাষেতে চাষী আজ করে চাষ চামড়া নিকে যায় ৷
চাষবাসে আজ চাষারা করতে পারেনা চর্চা চলিত চর্চায় ৷
জমি আজ নেইতো জমিনে সব জমা হয়েছে জাদুঘরে ৷
মিথ্যেবাদী আমরা সবাই মিছাই করি মেলমেশা মদিরার তরে ৷
আগের হালি আগে আগে বয় হাল জানেনা হাল হকিকৎ |
পশ্চাতের হালি পিছনে পিছনে করে পন্ড হয়না কর্ষন পশ্চাৎ ৷
বৃথায় বৃথায় হয় বিস্তুর বিঘা বিঘা ফল বিষময় ৷
বুনি আমরা বাসমতির বিছন কিন্তু হয় বিস্তার বিদারায় ৷
উর্বরশক্তি গিয়াছে উবে ঊনতে আর হয়না উনিশ |
বিষে বিষে ছয়লাপ বিশ্ব বঙ্গ
বর্তমানে সবেতে বিশে বিষ |
কর্ষনে হয়না কর্ষিত সব কামরুপে পড়েছে কাঁচড়া ৷
কঠিনের করাল করাঘাতে করে কষাঘাত কি করে করবে কর্ষন কাহারা ৷
যেখানে যেথায় ফলত ধান,গম যব যতনে ৷
অসত্যের অভিশাপ অবনীতে করে পূর্ণ অভিলাষ আপনে ৷
অবলীলাক্রমে অনবরত অবিরাম আহুত আমরা আজ অন্যভুবনে।
শেষ খেয়া (১৪৮)
ভালোবাসার সাম্পান
ডুবে গেছে প্রলয়ের মহা তান্ডবে!
হৃদয়ের মন্দিরে তবুও নিশিতার অক্ষত প্রতিমা।
স্বজনহীন চারিধার;
মৃতরাও যেন
মরে
গেছে!
সুখের
স্বপ্ন গুলো,
ধর্ষিত হয় রোজ
অসুভ
শক্তির কাছে।
উত্তরীয় বায়ু আজ ধেঁয়ে
আসে
ঐ বুঝি ; অর্থহীন এ জীবনের দিকে
শেষ
খেয়া
এলো
বুঝি
সে হাওয়ায় ভেসে ভেসে...
আমাকেও যেতে
হবে
দূরে....!
গরিবের নিয়তি (১৪৯)
ফারহানা রিনি
(নাটোর)
জীবন
নদীর
মাঝি
তুমি
হাওয়ার
তালে
ভাসাও
ভেলা
ছুটে
চলো
কোন
তরঙ্গে?
দিশা
নাহি
তার
চারিদিকে আবছায়া
ভাসে।
ঐ
যে
দেখা
যায়
সাহিত্যের দিগন্ত
তবে
কি
পাবো
ভরসা
খুঁজে?
নাকি
সেথায়
অগ্নি
কুন্ডলা
পুড়িয়ে
দেবে
সব
কুঁড়ে।
নিয়তি
তুমি
নিষ্ঠুর বড়ই
চোখের
কূল
যায়
যে
ভেঙ্গে
তবুও
যেন
লাভা
থেকে
অগ্নিজল ছিটে
আসে।
শুষ্ক
ওই
মরুভূমির বুকে
বাঁধিলো হাজারও
অট্টালিকা
আকাশ
ছোঁয়ার
নেশায়
চড়ে।
ভুখাদের ভেলায়
আশ্রয়
নিয়ে
দিলো
হাজারও
লাথি
ছুড়ে,
চওড়া
ওই
দেয়ালের ভীরে
কত
যে
ভাসমান
অনাহারে।
নিয়তি
তুমি
নিষ্ঠুর বড়ই
চোখের
কোনে
খুন
ঝরে,
এ
দিকে
পাশের
ডাস্টবিন থেকে
পচা-দূর্গন্ধ ভেসে আসে।
হাওয়ার
তালে
মড়ক
ভাসে,
উচু
ওই
দেয়ালে
ছুটিয়া
চলে।
তবুও
নাহি
শিক্ষা
হয়,
গরিবের
কান্না
কে
বা
দেখে?
নিয়তি
তুমি
নিষ্ঠুর বড়
হাজারও
হৃদয়
চূর্ণবিচূর্ণ!
ইচ্ছে ছিলো (১৫০)
মোঃ তাইজুল ইসলাম (তাজ)
ঠাকুরগাঁও
আমি দূরত্ব চাই নি, আমি চেয়েছিলাম দূরত্বকে আরও নিকটবর্তী করতে !
দামী কোন উপহার দিয়ে নয়, বাগানের একগুচ্ছ গোলাপ হাতে তোমাকে দেখতে !!
আমি বলি নি সব সময় ফোনালাপে কথা বলতে হবে,
আমি চেয়েছিলাম যখন মনে পরবে তখন না হয় খবর নিও !
আমি চাই নি তুমি হারিয়ে যাও, আমি চেয়েছিলাম আরও কিছুক্ষণ থাকো আঙুল ছুয়ে !
অনেক ইচ্ছে ছিলো, তোমার নিয়ে সাত সাগর পাড়ি দিব !
অনেক স্বপ্ন, তোমায় নিয়ে রং মহল সাজাবো মনের মতো করে !!
শুধু্ একবার, তোমার হাতে হাত রেখে সারা বিশ্বে ঘুরতে ইচ্ছে জাগে বড্ড !
তুমি ভালোবাসলে, আমি আমার মন ও প্রাণ উজার করে দিতাম !
ইচ্ছে জাগে আজও, তোমায় নিয়ে ঐই রাস্তার পাশের মামার দোকানের বিরিয়ানী খাওয়া !
নদীর তীরে বসে গল্প মধ্যে হারিয়ে যাওয়া !!
আজও আমার ইচ্ছে গুলো লুকোচুরি খেলে হৃদয়ের মধ্যে খানে !!
ইচ্ছে ছিলো কোন এক অচেনা শহরে হারিয়ে যাব বুঝবে না কেউ কোন দিন !
বেকারত্ব (১৫১)
পাপাই
কুমার
বিশ্বাস
(ভারত)
শৈশব
বয়সে
দু
চোখেটে
স্বপ্ন
ছিল
শতো,
প্রাপ্তবয়স্কে সেই
স্বপ্ন
আজ
মরীচিকার মতো।
হেঁটেছি, দৌড়েছি যেখানে
পেয়েছি কাজের
খোঁজ,
চোখের
কোণে
বৃষ্টি
ঝরে,
উত্তরের অপেক্ষায় বসে
থাকি
রোজ।
শাসক
শুধু
ঘোষণা
করে
দেয়
চাকরির
আশ্বাস,
ভোটের
পর
ভোট
এসে
যায়,
আর
হয়
না
কোনো
বিশ্বাস।
চাকরি
শুধু
ফর্মে
সীমাবদ্ধ, পরীক্ষার ঘরে
তালা,
কন্যাদের হাতে
হাতে
আজ
কন্যাশ্রীর বালা।
অভাবের
কালো
আঁধারে
প্রদীপের আলো
গেছে
নিভে,
অবিবাহিত দিদি
আজও
ঘরে
,পণ
দিতে
না
পারায়
হয়নি
তার
বিয়ে।
অসুস্থ
মাতা
বিছানায় শুয়ে,
রোগ
ব্যাধিতে চিৎকার
করে,
বিনা
চিকিৎসায় প্রহর
গুণে,
মৃত্যুর অপেক্ষায় রহে।
এক
অফিস
থেকে
আরেক
অফিসে
ছুটে
বেড়িয়েছি দিন
কিবা
রাত,
কাজের
কাজ
হয়নি
মোটেই,
মাথার
উপর
ছিল
না
দিদিমণির হাত।
সার্টিফিকেটে বস্তা
বন্দী,
ওগুলো
শুধু
কাগজ
নেই
কোনো
দাম,
বেকারদের নিয়ে
সবাই
চুপ,
হোক
সে
রাম
কিবা
বাম।
কলকারখানার ভেঁপু
বাজে
না
আর
, নির্গত
হয়
না
আর
ধোঁয়া,
শ্রমিকদের ঘরে
অভাব,
লাল,
নীল
পতাকায় মেলায়
যন্ত্র
যায়
না
আর
ছোঁয়া।
বেকারত্বের নিদারুণ জ্বালা
বুঝবে
না
এই
সভ্যতার মানুষ,
ভক্ত
সকল
গেয়ে
যায়
আপন
আপন
প্রভুর
মিথ্যা
ফানুস।।
আত্মা (১৫২)
সুশান্ত দত্ত
(ভারত)
শরীর মাঝে বাসা তোমার
জীবের মাঝে তুমি।
তোমার জন্য হয়েছে সৃষ্টি
এই পৃথিবীর ভূমি।।
শরীর শুধু হয় সৃষ্টি
করতে তোমায় ধারণ।
তুমি চলেগেলে আবার
শরীর ছুতেও বারন।।
তোমায় বিনা শিশুও হয়
অচ্ছুত মায়ের কাছে।
সবাই ভালো বাসে যদি
তুমি থাকো মাঝে ।।
শরীর থেকে চলে গেলে
ঠাই দেবেনা কেউ।
অচ্ছুত সবাই বলবে তখন
তোমাকে আর আমাকেউ।।
একা মানুষ (১৫৩)
সামিয়া আক্তার
আমি সুখের বৃষ্টি দুঃখে ঝরে যাই
আমি স্বপ্নের পূজারী কল্পনাতে হারিয়ে যাই।
আমি সন্ধ্যার প্রদীপ সকালে নিভে যাই।
আমি নীল আসমানের নীলামা কালো মেঘে ঢেকে যাই।
আমি ফুটন্ত ফুলের অলি নির্যাশ শেষে ফুরিয়ে যাই।
আমি তুমি হীনা একা তোমাতে হারিয়ে যাই।
আমি গোধূলির শেষ আলো রংধনুর সাতটি রঙে মিশে যাই।
আমি জোছনার মায়াবী আলো অন্ধকারের
কালো মায়ায় মিশে যাই।
আমি একা মানুষ যাকে সবাই ভুলে যায়।
ধীক্কার (১৫৪)
হাসিনা আক্তার আইরিন
(রাজশাহী)
ধীক
তোমাদের শত
ধীক
এ
জগৎ
সংসারে,
স্ত্রী
আছে
যার
ঘরে
তব
অন্য
মেয়ের
দিকে,
নিজেকে
লালায়িত করে
ধীক
তোমাদের শত
ধীক
এ
জগৎ
সংসারে
বোন
হয়ে
যে
বোনের
ঘরে
আগুন
জ্বালে
বোনের
সুখ
হরন
করে।
ধীক
তোমাকে
শত
ধীক
এ
জগৎ
সংসারে
যারা
হীন
স্বার্থ চরিতার্থ করার
জন্য
প্রেম
করে।
ধীক
তোমাদের শত
ধীক
এ
জগৎ
সংসারে
যারা
পিতা
-মাতা
কে
আঘত
করে
আত্নিয়
সম্পর্ক ছিন্ন
করে
স্রষ্টার দানকে
অস্বীকার করে।
নিজের
স্বার্থকে বড়
করে
দেখে
আমি
জানাই
বারং
বার
তাদের
-ই
ধীক্কার।
এখনো (১৫৫)
শিশির আজাদ চৌধুরী
(চট্রগ্রাম)
এখনো শ্রাবণের বর্ষণের মতন
আকাশ জুড়ে কান্নার সুরো ধ্বনি ওঠে
আমাকে বিষণ্ণতার চাদরে হরণ
করে। অবিরাম ক্লান্ত চাতকের ঠোঁটে
শুধু তোমার তৃষ্ণা, শুধু তোমার তৃষ্ণা।
একচেটিয়া হিসাব খাতায় লিখতে
গিয়ে; কবিতার মতন প্রেমো রোশনা
দিগন্ত থেকে দিগন্ত উদ্বীপ্ত করতে
কবেকার বসন্তী ফুল শুকনো হয়ে
প্রতীক্ষার প্রহর গুনে বহু বছর।
এ আকাশ ঘর্ষণে যখন ক্ষয়ে ক্ষয়ে
ঝরে পড়ে, তখনো পৃথিবীর ওপর
দাঁড়িয়ে ইতিবৃত্ত করি তোমার নাম।
যদিও তোমার আকাশে চৈতালী বায়ু
আজো ছোঁবো বলে কী দিলাম কী নিলাম?
শুধু শ্রাবণের বর্ষণে বাড়ছে আয়ু।
শুভ কামনা রইলো পরিবারের প্রতি
উত্তরমুছুন