মাসিক কবিতাকণ্ঠ (আক্টোবর-২০) ১৩তম বর্ষ, সংখ্যা-৫৪
পরিচালনা পর্ষদ
সম্পাদক :
এম, আব্দুল্লাহ আল মামুন
নির্বাহী সম্পাদক:
কবির পথিক
প্রধান শিক্ষক(উপশহর আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়,বগুড়া)
উপদেষ্টা সম্পাদক:
কাজী হানিফ
(সিনি: ইন্সটাক্টর, টিটিসি)
আব্দুল্লাহ দি মাহমুদ
(প্রভাষক বাংলা- বিয়াম মডেল কলেজ,বগুড়া)
প্রচ্ছদ:
এম, আব্দুল্লাহ আল মামুন।
আর একজন নজরুল চাই
----------------------------------------------
কালপুরুষ
অর্নঃঈক্ষন
আমার ধুসর দেয়ালে
তোমার আকা গ্রাফিতি
আমায় করেছে সুবোধ প্রেমিক।
মুখোশের আড়ালে ঢাকা
গভীর ভেজা চোখ
আমায় করেছে শহুরে ডাহুক।
ফানুসের মত উড়ে
মেঘের সাথে বসবাস
বৃষ্টিবিলাসে আমি আহত চাতক।
সেদিনের সেই নিরবতা
অসহ্য নিরব ব্যাথা
হয়েছি আমি প্রজাপতি ঘাতক।
আবেগের ভাঁজ
সেলিম আলতাফ
সম্মোহনী বাক্স খুলে
এখানে দাঁড়াও ছন্দসুরে,
আবেগের ভাঁজ ভেঙ্গে
চোখ রাখো চৌকাঠের ওপাশে-
এখানে আমি আছি
সঞ্চারণের মোহময়তায়
তোমার আদিগন্তে অনাবিল।
এদিকে এসো উচ্ছলা পায়ে,
যেখানে আছে শাদা শাদা
কাশফুল কিশোরীর হাসি,
তুমি ছুঁয়ে দিলেই উঠোন জুড়ে
দোল দোল নাচের সাড়ম্ভর উৎসব।
ভোরের সৌরভ মেখে
উন্মনা পানসিতে এসো
এই রূপমঞ্জরি বিলাসী ছায়ায়,
মাটির বিছানায় টুপটাপ
পড়ে যাওয়া শিউলি শরীর
একে একে তুলে নিও
তোমার হাতের ঝুড়ির মায়ায়।
আমি নারী
আশিকুর রহমান
আমি নারী, আমি হানি ঐ নরপশুদের মুখে লাথি!
বিদ্রোহিণী আমি, রণোন্মাদিনী আমি- নব বিপ্লবে মাতি!
ধর্ষণ করে স্বামী দেবতায় বর্ষণ করে গাল,
আমি উঠিয়াছি, আমি ক্ষেপিয়াছি - তিষ্ঠিবে ক্ষণকাল?
মৌন যৌন-দাসী নই, শিকল খুলিয়া দিয়াছি স্বামীরে ফাঁসি!
থু থু ছুঁড়ে ঐ লাশের মুখে হাসি হা হা অট্টহাসি!
কালনাগিনী আমি-ছোবল হেনেছি উদ্ধত করি শির!
মরণ-ছোবলে জর্জরিত কায়া বিশ্ব-বিধাত্রীর!
উল্কার সম ছুটি সংসার-বন্দীশালা ভেঙে,
সত্যের খঞ্জর উঠিবে বক্ষ-পিঞ্জর খুনে রেঙে।
টেনে ছিঁড়ি আমি হুজুর-পীর-ফকিরের ছাগল-দাড়ি,
ধর্মগুরুর আস্তানা জ্বালি দুর্গার বাণ ছুঁড়ি!
আমি নারী, আমি হানি ঐ নরপশুদের মুখে লাথি!
বিদ্রোহিণী আমি, রণোন্মাদিনী আমি- নব বিপ্লবে মাতি!
ঘরের শোপিচ নই রে আমি, নই আর রাঁধুনি,
আমি ছিঁড়ে বেরিয়েছি ঘর হতে মোর হাত-পা'র বাঁধুনি।
ভোগের পণ্য নই আমি, নই সন্তান-উৎপাদী,
ধর্ষদণ্ড দাঁতে ছিঁড়ে আমি দানব-উল্লাসে মাতি!
আমি নই পরজীবী, নই পদসেবী, নই ক লক্ষ্মীদেবী,
প্রতি আঘাতের প্রতিঘাত হানি - খাসিলতে খুনখুবী।
আমি নারী, আমি সারাদিন কেন রান্নার হাঁড়ি ঠেলি?
দেব আজি স্বামী দেবতার গায়ে তপ্ত জল ঢালি!
আমি নির্যাতিতা, নিষ্পেষিতা, ধর্ষিতা দেবশিশু,
রোষে জ্বলে অণ্ডকোষ টিপে মারি মানবরূপী পশু!
আমি নারী, আমি জন্মেছি দেবী দুর্গার তেজ হতে,
হস্তে ঝলসে খড়্গ - নামিব মহিষাসুর বধে।
আমি নারী, আমি হানি ঐ স্বামী দেবতার মুখে লাথি!
বিদ্রোহিণী আমি, রণোন্মাদিনী আমি - নব বিপ্লবে মাতি!
আমি দাহন করিব নিখিল-বিশ্ব প্রলয়াগ্নি হেনে,
নীতির জগদ্দল শিলা ওড়ে প্রবল ঝড় তুফানে!
ঘোমটা ওড়াই - দ্যাখ রূপসীর রণোন্মত্ত রূপ,
প্রশান্ত ভাব নাশিয়া অশান্ত ভাঙিয়া মুখের কুলুপ!
পতির সতীত্ব নেই, তবু কেন আমি হব আজ সতী?
বলাৎকারের শিরে লাথি মারি - ধ্বংসযজ্ঞে ব্রতী!
আমি মানবী, মহামানবী - নহি কারো পোষ্য,
খোরপোষ দিই আপনারে, আমি শয়তান-শিষ্য!
আমি উল্কা, অগ্নি-হল্কা ছড়ায়ে ছুটে চলি মহাবেগে,
প্রভুদের তেজ নিভু নিভু, ওঠে - 'ত্রাহিত্রাহি' রব জেগে!
ভগবানে করি অপমান আমি অদৃষ্ট লয়ে খেলি!
দ্বার নই, দ্বারী দোযখের - কালাগ্নিতে ঈশ্বরে ঠেলে ফেলি!
আমি নারী, আমি হানি বিদ্বেষী জালিমের মুখে লাথি!
বিপ্লবী আমি, উন্মাদিনী আমি - নব বিদ্রোহে মাতি!
হোক ধ্বংস বন্দীশালা
ন্যান্সি দেওয়ান
ভিক্ষাগ্রস্ত হাত কেড়েছে মানুষের নজর,
বন্ধীশালায় নিপীড়িত নির্যাতিত
মানুষ করছে করুণ আর্তনাদ।
হারিয়েছে কত শত প্রাণ
আজও অজানা তাদেরই নাম ।
ঝরে পড়ছে অচিরে অন্ধকার জগতে,
হে সৃষ্টিকর্তা!!
কেন এমন মরণ দশা,
দেখ, তোমারই সৃষ্টির
কি করুণ চিত্র।
আর কত
বলবো আর কত!
সইতে হবে এই
যন্ত্রনা গুঞ্জনা?
নিপাত যাক, নিপাত যাক ।
অশ্রু হলো সান্তনা
লাঞ্ছনা কেবল শোয়ে গেল।
ভিক্ষা দাও এক টুকরো শান্তি দাও
অচিরে ধ্বংস হোক বন্ধীশালা ।
প্রেমের আহাজারি
ফারহানা রিনি
দাও মোরে আরেকটু ভালোবাসা ওগো প্রিয়ো
হৃদয় সঙ্গমে লিখি প্রেমের কাব্য।
দাও মোরে আরেকটু আবেগি ছোঁয়া ওগো প্রিয়ো
মায়া জড়িয়ে লিখি প্রেমের ছন্দ।
বিবাগী মন তোমার পরবাসী
প্রেম রচনায় এঁকেছো নীল আঁখি।
আরেকটু ভালোবাসা দাও মোরে প্রিয়ো
তৃষ্ণা মেটাই আবেগি নেশায়।
বিরহ বিদায় যাও দূর ওই দূর প্রান্তর।
আকাশে নিলীমা মুছিতেছে মেঘ দিবারাত্রি
মনের খেয়ায় দিয়াছি দিগন্ত পাড়ি।
পলাশ ফুলের আর্তনাদে মুঠো সুখ মিশে
জেগেছে প্রেমের আহাজারি।
তৃণসম দেহ মিথ্যার কাছে
মোঃ রায়হান কাজী
ন্যায়ের দন্ড প্রত্যের কাছে পৌছানোর
যে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ অর্পণ করেছি নিজে।
নিয়েছি শাসনভার শিরোধার্য সবিনয়ে,
সে গুরুসম্মান কার্যে কখনো ভয় করিনা।
দুরূহ কাজকর্মের কারণে আদেশ দেওয়া,
ক্ষমা যেন রুদ্র জলধারার অববাহিকায়
ক্ষীণ দুর্বলতা অসুবিধার ফাঁকে সুকৌশলে।
যেন হতে পারি নির্দেশক এই পথে ঘুরেফিরে,
ক্লান্ত বরষণময় দিনে আগুনের দমকা ছুটে।
মিথ্যার যোগে রসনাময় কথাবার্তা গুলি শুনি,
তাল মিলাতে গিয়ে একটুও না ভেবে শুরু করি।
সত্যবাক্য বুঝি আড়াল খোঁজে মিথ্যার কাছে,
ন্যায়দন্ড কেন আজ পিছিয়ে আছে থমকে জনসমুদ্রে?
তবুও কুমন্ত্রণা দিতে হাজারো লোকজন মুখিয়ে থাকে,
ভালোজন খুঁজে পাওয়া ভার এ সময়ের ছেঁড়া জালের অন্তরালে।
সত্যবাক্য ফুটে ওঠে অনেকটা পথ পিছনে ফেলে,
যেখানে মিথ্যায় ছিলো একান্ত কাম্য সবার কাছে।
তবে সত্য উদঘাটনে বদ্ধপরিকর হয়ে যুগান্তরে,
কেউ না কেউ হাতরে বেড়ায় পথেঘাটে জনস্রোতে।
উত্তপ্ত পরিস্থিতির ঝার্ণাদ্বারার কিনারা ঘিরে,
মিথ্যার জালে অনেকে যায় জড়িয়ে অচেতনের বেশ ধরে।
ঘৃণা যেন তৃণসম দেহ অন্যায়ের কাছে যে সহে।
প্রেম ভিখারি
প্রণব চৌধুরী
আজ প্রেম করে অবস্থান মিউজিয়ামে বড়ই আকাল তার সচরাচরে ৷
সময়ের ধরে হাত পেরুতে পেরুতে তার ভিন্ন ভিন্ন খাত পরিবর্তিত সে অন্যপ্রকারে ৷
ভৌগোলিক সীমাবদ্ধতার সীমারেখায় অসীম আকাশ হয়েছে সমীম ৷
সেখানে অবলীলাক্রমে যেখায় করত বিচরণ মুন( চাঁদ)আকাশে হয়ে রক্তিম |
চাঁদের কলায় বাড়া কমায় হত পর্যবসিত যেমন পূর্বরাগ, অনুরাগ, প্রেম, বিরহ,ইত্যাদি ৷
রাজারা দিত প্রেম বিলিয়ে দান, অনুদান, সমাজ কল্যানে করত খয়রাতি ৷
প্রেম ছিল সর্বত্র ছিল তথায় প্রাণের পরশ উদ্বেলিত হত ভালোবাসা অকৃত্রিম |
যার ছোঁয়ায় লু বইতনা বায়ুতে জীবন হরষে হতাম হর্ষিত অনাবিল ৷
সময়ের হাত ধরে ভূগোল ভুলত না কোনো কিছু মনিয়ে নিত সব ৷
ইতিহাস বলত তাকে সদা করো মোরে অনুসরণ সামনে কণ্ঠাকীর্ণ পথ ।
আজ তুমি নেই প্রেম হৃদমাঝারে অঙ্গন করে খাঁ খাঁ ৷
দেওয়া নেওয়ায় দাঁড়িয়েছে দৈহিক প্রেম কর বিনিময়ে তবে পাবে তুমি তা ।
ভালোবাসার স্থান করেছে দখল আজ স্বার্থ পাকাপোক্ত ভাবে ৷
স্বার্থ থাকলেই প্রেম ভালোবাসার হয় বলিদান ছলনার মায়াজালে সে রুদ্ধ হবে ৷
তাইতো আমি আজ প্রেম বিরহে হয়েছি প্রেম ভিখারী হারিয়েছি ভাষা ৷
নতুন করে হবে নাকি চাষ এর ধরণী তলে অকৃত্রিমতার আদলে সোজা ৷
তুমি যে আমার
জুনায়েদ খন্দকার নীর
জানো!
আমার না খুব ভয় হয়।
তোমায় নিয়ে সাজানো স্বপ্ন গুলো,
যদি এক নিমিষে কাল বৈশাখির ঝড়ে
ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়।
স্বপ্ন গুলো যদি অযাচিত স্বপ্ন হয়েই রয়ে যায়।
তবে জেনে রেখো,
আমার অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে কালের স্রোতে
আহত পাখির মত,
শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে করতে
ডানা ঝাপটিয়ে আর্তনাদের করুণ সুরে জানাবো এই পৃথিবীকে,
আমার মাঝে হয়েছে কতোখানি ক্ষত।
চোখের পলকে যাকে হারাতে না পারি।
বুঝতে পারো!
তার বিয়োগে হতে পারে কতোটা আহাজারি।
তুমি তো বলেছিলে জীবনে মরণে,
থাকবে শুধু যে আমারই সনে।
অবন্তিকা!
তবে কেন এতো অভিমান।
জানো!
অভিমানের ঝড় বয়ে যাচ্ছে তোমার চিত্ত জুড়ে।
কালো মেঘের ঘনঘটা কখন যে যাবে উড়ে!
উষ্ণ দমকা হাওয়া এসে অভিমান গুলো দূর করে দিবে তোমার হৃদয়াকাশ থেকে,
ফিরে তাকাবে নাহ্ ওগো আমার আকুতি ভরা ডাকে?
যদি তোমার মান অভিমানের কখনো সমাপ্তি না হয়।
তবে হোকনা অবিরাম বর্ষণ।
ভিজিয়ে দিয়ে যাক আমার আঁখিযুগল,
তবুও আমি বলে যাবো অনর্গল।
একমুঠো স্বপ্ন আকড়ে প্রতীক্ষা করবো তোমার,
বাস্তবতায় অধরা থাকলেও কল্পনায় শুধু তুমি যে আমার।
উমা আসছেন।।
ভীষণ ভয়ে কুঁকড়ে আছি,এই বুঝি সব ধ্বংস হলো,
ভয়ঙ্কর এক মহামারী এসে পুরো বিশ্বটা টলিয়ে দিলো।
প্রতি মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যায়,এই বুঝি গেল আটকে শ্বাস,
দূষিত এই পৃথিবীটায় করি রোগের সাথেই রোজ সহবাস।
রোগ কি শুধু শরীরেই হয়??মনেরও তো আজ রুগীর বেশ।।
নিচুসমাজের মলিন চিন্তা রোজ মনটাকে করছে শেষ।
মেরুদণ্ডটা বাঁকতে বাঁকতে ভেঙেই যাওয়ার যোগাড় প্রায়,
সমাজ আজকাল হ্যাশট্যাগ দিয়ে সব দায় ঝেড়ে ফেলতে চায়!
যে পুরুষগুলো প্রতিবাদ করে ধর্ষিতাদের বিচার চেয়ে,
তারা ভিড় বাসে সুযোগ পেলে শরীর হাতরায় বিভোর হয়ে।
আরেক শ্রেণীর পুরুষ আছে,সব দেখে থাকে চুপ তারা,
খুব বেশি হলে ফেসবুকে দুটো লাইন লিখেই দায় সারা।
চুপ করে যান মহিলারাও,বেইজ্জতির ভয় পেয়ে,
কেউ কেউ খুব গর্জে ওঠেন,এইটুকু সন্মান চেয়ে।
লাভ হয়না বিশেষ কিছু,নরপিশাচ আজ সবাই প্রায়।
একটার থেকে পালিয়ে বাঁচলে অন্য পাঁচটা হাত বাড়ায়।
মেসেঞ্জারে নোংরা কমেন্ট বাবার বয়সি লোক দেরও,
বিচিত্র সব প্রশ্ন তাদের,সঙ্গে নানান আবদারও।
প্রিয় তারকারা যাচ্ছেন চলে,পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে,
বছরটা বুঝি শপথ করেছে,নেবেই নেবে সব কেড়ে!!
একটা,দুটো খসছে তারা,পৃথিবীটা আজ আঁধারময়,
কলুষিত এই ধরণীটা থেকে কালজয়ীরাও মুক্তি চায়।
সর্বগ্রাসী দুহাজার কুড়ি,ধ্বংসলীলায় মত্ত খুব,
ভুলেই গেছে,এসেছে শরৎ, তৈরি হচ্ছে মায়ের রূপ।
আর কটাদিন সবুর করো,মর্তে নামুক আমার মা,
দেখেনিও সব ঠিক হয়ে যাবে,দুঃখ কিছুই থাকবে না।
উমা মা আমার আদ্যাশক্তি,দুর্গা,গৌরী, কৌশিকি,
দুআঙুলের ওই দুহাজার কুড়ি মায়ের সাথে পারবে কি??
মড়করূপী এ অসুর টাকে দুর্গা আমার করবে নাশ
ধ্বংস করে সকল রিপু,করবেন তিনি জয়োল্লাস।
তার উল্লাসের কণা ঝরে ঝরে পৃথিবীর বুকে পড়বে যেই,
শস্যশ্যামলা হবেন ধরণী,দারিদ্রতার চিহ্ন নেই।
উমা আসছেন,জেনে রাখ তুই,বছররুপী অসুররাজ,
শেষ হবে তোর সকল দফা,উড়বে মায়ের জয়ধ্বজ।
দুর্গা আমার দোলায় আসবে,ফিরবে গজের পরে,
সঙ্গে নিয়ে যাবেন তোকেও,ত্রিশুলে বধ করে।
তৈরি থাকিস রাক্ষস দল,তোদেরও চড়বে বলী,
উমা আমার স্বর্গে ফিরলে,আসছেন মহাকালী।
কলমে দেবলীনা।।
ধর্ষক দেখি দর্শক হয়ে
ফরিদুজ্জামান।
আমি দর্শক হয়ে ধর্ষক দেখি,
নিরবে মাথা নুইয়ে,
আমি মৌনতা পালন করি সদা
বিবেকটা লুকিয়ে।
দুর্বল আমি সাহসের কাছে
নতজানু করি মাথা,
চিৎকার করে বলিতে চাই
ফুটে না মুখে কথা।
আমি প্রতিবাদী নয়,বলি কথা
সবার পিছে পিছে,
ধর্ষক আমায় দেখে তাই,সদা
মুচকি হাসি হাসে।
প্রতিবাদ আমার মুখে নেই তবু
প্রতিবাদী আমর অন্তর,
পারিনা বলতে মুখে তাই কষ্টে
ফেটে যায় বুকের ভিতর।
আমি দর্শক হয়ে ধর্ষক দেখি
আমার চারি পার্শ্বে,
আমি অবাক হয়ে স্বভাব লুকাই
মানবতাটুকু মুছে।
আমি গুটিয়ে রেখে নিজেকে
আজো দেখাই ভদ্রতা,
আমি মানুষ, আমি এ দেশের
অবাক জনতা।
মানবতা
মোঃ ইব্রাহিম মিয়া ।
একি শুনি আজব কথা
মানবতার কেন এত দুর অবস্থা
যেথায় তথায় কেনা বেচা
মানবতা নামের খাচা,
জ্ঞানী গুনি সব জনে
গেল আজ কোন বনে
মানবতা নামের পণ্যপাতা
কেন আজ বাজারের শেষের মাথায়।
লজ্জা ভরা লাজুক মুখে
তারা কি আজ খুবই সুখে
যারা কথায় কথায় লিখে
কাগজের পাতায়
সবার উপর মানবতা ।
তবে কেন রাস্তার তরে
মানবতার এত রক্ত ঝরে
এ প্রশ্ন বিশ্ব বিবেক পাড়ে,
কাঁটা বিধে এই অবুঝ মনে
তারা আজ গেল কোন খানে
যারা মঞ্চ কাঁপাত
সেজে মানবতার কনে ।
কোথায় বলব আমার কথা
মানবতার শানিলতা
কাঁদে আজ খবরের পাতায়,
দিন দুপুরে লোকালয়ের ভীরে
গৃহ বধূকে যারা ধর্ষন করে
মানুষ রুপে হায়ান তারা
মানবতাকে এভাবে রক্তাত করছে যারা ।
রাত জাগা স্বপ্ন বোনা পাখি
তুমি কি দেখছ, খোলে তুমার আখিঁ ?
সবুজ শ্যামল ছায়ায় ঘেরা
তুমার এই বাংলায়
হাসছে সবাই
মানবতার করুন নির্মম খেলায়।
ভালোবাসার ছয় ঋতু
সৌরভ মজুমদার
তুমি গ্রীষ্মকালের গরম রোদে
গাছের মতো ছাউনি হয়ে থাকো।
তুমি বর্ষাকালের ছাতার মতো
আমায় মাথায় করে রেখো।
তুমি শরৎকালের গরম-শীতের আদলে
আমায় একটু ভালোবেসো।
তুমি হেমন্তের সেই শিউলি ফুলের সুবাস হয়ে
আমায় নিশ্বাসের মিশে থাকো।
তুমি শীতকালের উষ্ণতা দিয়ে
আমায় শক্ত করে আগলে রাখো।
তুমি বসন্তের সেই নতুন সাজে কোকিল এর ডাকে
আমায় আদর করে নামটি ধরে ডেকো।
কোথাও নয় নিরাপদ
বাবুল আখতার
সব মেয়েরাই মায়ের জাতি
পবিত্র সম্মানের পাত্রী,
তবে কেনো আজ মা জননী
কাঁদছে দিবারাত্রি?
আমার মেয়ে তোমার বোন
এই যদি হয় পরিচয়,
তবে কেনো আজ সেই আদুরী
সবচেয়ে বড় অসহায়?
তোমার মেয়ে কান্না শুনে
কেনো থাকো নিরব?
কন্যা দিবস পালন করে
এই হচ্ছে লাভ?
নারী পুরুষ সমান সমান
শুনি কত শ্লোগান,
নারীবাদী মানুষ গুলোর
কেনো আজ পিছুটান?
বাংলাদেশ নামক এই বাড়িতে
মা জননী শেখ হাসিনা,
তুমিই পারো বিচার করতে
তুমিই শেষে ঠিকানা।
তোমার মেয়ে ঘরে বাইরে
কোথাও নয় নিরাপদ!
মেয়ের কান্না থামাতে মাগো
নিতে হবে দৃঢ় শপথ।
সপ্ন
লেফাফা দুরস্ত
সপ্ন তার পেটপুরে খাবারের
হঠাৎ করে চেতনা ফিরে, খাবারের সন্ধানে
পেটের ভিতর ক্ষুধা নিবারনের তাগিদ
তাই খাবার খোঁজে এদিক সেদিক।
ক্ষুধার তাড়নায় আজ সে
জরাজীর্ণ দেহকে নিয়ন্ত্রণে আপ্রাণ চেষ্টা করে।
এতোটা ক্ষুধার্ত কখনো হয়নি কোনো কালে,
তাই আজ সে ক্ষুধা নিবারনের জন্য এতোটাই চেষ্টা করে।
মনের গহীনে লুক্কায়িত সপ্ন ভালো কিছু খাবারের,
নেই কোনো সন্ধান, কোথায় আজ কিসমতে তার জন্য আহার?
কবে যে খেয়েছে পেটপুরে মনের খায়েশে? নেই জানা!
তবুও তার জন্য এদিক সেদিক চলতে, ফিরতে, আছে মানা।
ডাস্টবিনের দিকে তাকিয়ে আছে সে
ধনীর উচ্ছিষ্ট খাবার কখন ফেলবে?
এখানেও নেই তার শান্তি,
উচ্ছিষ্ট নিয়ে কুকুর গুলো করবে টানাটানি।
এ আর নতুন কি? আয়াশের নেই কমতি।
খাবারের উচ্ছিষ্ট দিয়ে, পঁচা বাসীতে,
নিত্য দিন তার হয় ভুরিভোজ।
এভাবেই চলছে বেস,নেয়নি কখনো তার কেউ খোঁজ?
দুটো লোকে আজ গল্প করে, সরকারের আমলা নিয়ে
হঠাৎ কি যেন ভেবে, কানটা সে ঐ দিকে সজাগ করে
জনৈক সুদক্ষ লোকে গল্প করে
খিচুড়ি খাওয়ার সৌভাগ্য হবে।
কারন কি? জিগ্যেসা মনে!
জনৈক জনে খোলাসা করে বলে,
দেশি-বিদেশি খিচুড়ি রান্না শিখতে
আমি পারি দিতে চাচ্ছি বিদেশে।
জনৈক জনে বলে,আমিও হাত ধোঁয়া মোছা শিখতে যাবো
প্রশিক্ষন সেন্টারে, আধুনিক ভাবে কি করে পরিস্কার করে স্বচক্ষে দেখবো বলে।
পাগল,,এ-সব কথা শুনে হঠাৎ করে চেতনায় ফিরে
কিএক আজানা কারণে, হঠাৎ করে হা,হা করে হাসতে থাকে।
পাগলের পাগলামি দেখে জনৈক লোকে তারাতাড়ি ছুটেচলে
ভাবে পাগল, কতোদিন হাত ধুতে পারিনি,
কুকুর সব উচ্ছিষ্ট খেয়ে ফেলবে বলে।
কতোদিন খিচুড়ি খাওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করতে পারি- নি
একবেলা পেট পুরে।
কি এক পাগলের মেলা, এরা কি করে প্রলাপ বকে
আমিতো আছি তাহলেই খুব শুখে।
দুনয়নে আজতার চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটে
স্বপ্নে সে শুধু হাত ধোয়,আর খিচুড়ি খেয়ে পেট ভরে।
মুটো ভরা বন্দনাবাক্য রামায়ণের কাহিনি অবলোকনে
সপ্ন তার ধুলি কনাতে,
হঠাৎ সে সহমরনে হারিয়ে,
সূদুর জাগতিক বন্দনা ছেরেছে।
আজ আর জরাজীর্ণ দেহ নেই নিয়ন্ত্রণে,
নেই কোনো উচ্ছিষ্ট গ্রহনের তৎপরতা,
বিস্তৃত সংকট থেকে সে আজ নিয়েছে ছুটি
প্রভু আজ তাকে দিয়েছেন জাগতিক মুক্তি।
নারীর মান
হাসিনা আক্তার আইরিন
নারী তোমার বুদ্ধি কম দিচ্ছ তার প্রমান
গলা বাড়িয়ে হাত উঠিয়ে
কমাও তোমার মান।
তোমার মান পুরুষের উপরে
ইসলামী আইন বলে
অধীকার নিয়ে যুদ্ধ করা কি
মুসলীম নারীর চলে?
তোমার মূল্য স্বর্নের চেয়ে বেশি
আর কি চাও বলো?
মান রক্ষায় তোমরা তাই
ঢেকে ঢুকে চলো।
স্বর্নে লোভ চিল -শকুনের
চির কাল -ই ছিল
তোমরা এর থেকে কম কিসে
আমায় একটু বলো।
তোমার পায়ের নিচে
সর্বোচ্চ সুখ তা জান কি?
যার জন্য দুনিয়ার জীবন
করছ শুধুই মাটি।
শত ভাগ তোমার দাম
হও যদি খাঁটি
অর্ধ ভাগ মানের জন্য
তবে কেন লাফালাফি?
নারী তোমার দাম দেখে
হিংসে চিল -শকুনে
তাই তারা সুকৌশলে
তোমার দাম ক 'মে।
নারী তুমি বোকা না রইয়ো
হও বুদ্ধি মান
কর্ম গুনে রাখো
তুমি তোমার সর্বোচ্চ মান।
স্বার্থের পৃথিবী
রাজীব আহমাদ
পৃথিবীতে নেই আজ স্নেহ ভালোবাসা প্রীতি
সব কিছু আজ যেন অতিত এর স্মৃতি
গুরুজন দের করে না কেউ আজ ভক্তি বোধ
মূর্খের দল ভারী নিতে প্রতিশোধ,
মানবতা নেই আজ মানুষের মাঝে
স্বার্থের পৃথিবীতে লোভী সাধু সাজে
নিত্য নতুন আশা জাগে আমার
জরা জীর্ণ মনে
দু'হাত পেতে রই যে বসে
প্রভু তোমার পানে।।
সব কিছু যায় না করা
মো. আলী আশরাফ মোল্লা
চোখ আছে তবুও সব কিছু দেখতে পারবে না
মুখ আছে তবুও সব কিছু বলতে পারবে না
হাত আছে তবুও সব কিছু ধরতে পারবে না
কান আছে তবুও সব কিছু শুনতে পারবে না।
কিছু বিষয় আছে তুমি দেখবে তো বিপদ তোমার সম্মুখে আসন্ন থাকবে
কিছু বিষয় এমন আছে তুমি বলতে যাবে তো বিপদে তুমিই আগে পরবে
কিছু বিষয় এমন আছে যে তুমি ধরবে তো শেষ রক্ষা আর হবে না তোমার
সব বিষয় শুনবে তো তাহলে তোমাকে এ প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে অযাচিত ভাবে জোড়পূর্বক চলে যেতে বাধ্য করা হবে।
চোখ আছে বলেই সব কিছু দেখতে হবে
কে বলেছে তোমাকে?
মুখ আছে বলেই সব কিছু বলে দিতে হবে! কেউ কি বারণ করে নি তোমায়?
হাত আছে বলেই সব কিছু ধরতে যাবে
হাত জ্বলছে যাবে কেউ বলেনি তোমায়?
কান আছে বলেই সব কিছু শুনবে!আজ পর্যন্ত কেউ নিষেধ করেনি তোমায়?
মনে রেখোঃ ঘুনে ধরা সমাজে মুখ দিয়ে সত্য কথা যায় না বলা খুব সহজে
অসত্য আর মিথ্যার দাপটে তোমার সততা আর প্রজ্ঞার মূল্য নিতান্তই দূর্বল।
চালাক লোকেরা তাই বলে মিলে মিশে থাকো
পাথর্ক্য করতে যেয়ো না ভালো আর মন্দ।
সামনে যা পাবে বাচ বিচার না করে তাই গ্রহণ করবে অতি সানন্দে
তবেই তুমি হবে খুব ভালো ভদ্র ছেলে।
ভাবি এই নির্জন পরিভ্রমণে
বাংলা ছেড়ে কোথা যাবো
আমি কোন পরবাসে ?
দেখতে কি পাবো সেথা ?
এমন জারুল ফুল ঝোপের
গায়ে লেগে অাছে অনায়াসে।
বিলের সুরমা জলে কলমি ফুল
কেমন নেচে চলছে ঢেউয়ের তালে।
ফিঙেটি কেমন শিকার-ধ্যানে বসে
আছে জিকে গাছটির বাঁকা ডালে।
দেখতে কি পাবো ?
ডোবার ধারে ডাহুকের কেমন
সতর্ক বিচরণ জলডুমুরের ধামে ধামে।
গোধূলি বেলায় নীড়ে ফেরা পাখিটি
ক্লান্ত ডানায় কেমন মিশে যায় দূর গ্রামে।
দেখতে কি পাবো ?
পৌষের ভোরে খেজুররস নল
বেয়ে কেমন বিন্দু বিন্দু পড়ে।
ভাঙ্গা কুঠিরের পাশে উত্তরা হাওয়ায়
কলার ছেঁড়া পাতাটি কেমন মৃদু নড়ে।
দেখতে কি পাবো ?
ছোট বড়ই গাছটি নির্জন পথে স্বর্ণলতা
মাথায় করে কেমন দাঁড়িয়ে অাছে।
কচি পাতা নিয়ে বাতাবিলেবুগুলো
কেমন মাটি ছুঁই ছুঁই ঝুলে অাছে গাছে।
দেখতে কি পাবো ?
চড়ুইয়ের ঝাঁক কেমন ধূলিস্নান
করে ডালিম গাছের ছায়াতলে।
দুপুরের ঘুঘুটি কেমন বিরামহীন
ডেকে চলে পরগাছার অাবডালে।
হেটে যাওয়া যাবে কি বকুল ছিটানো
সুবাসিত এমন নির্জন বনপথে ?
বাড়ির নেড়ি কুকুরটি বন্ধুর মতো
যখন আমার সাথে সাথে।
তবে বাংলা ছেড়ে কেন
যাবো আমি দূর পরবাসে?
কোন সুখের আশায়
কোন সৌভাগ্য অন্বেষণে ?
ফিরে না
শিশির আজাদ চৌধুরী
শান্ত সমীরণেও কি ওই দোলনাটি দোলে?
ধীরে ধীরে প্রকৃতির নিস্তব্ধে না কি অনড় অটল?
এখনো কি পাতা ঝরে ঘাসের ওপর?
এখনো কি শহরের নালায়, নর্দমায়
ঘুরে ঘুরে প্রাণ খোঁজে দলবাঁধা টোকাই?
ফেরিওয়ালার প্যাঁ-পু পাদানির শব্দে,
শিশুগুলো আজ বিরতিহীন ছুটে আর ছুটে।
টোকাই, পাতা কুড়ানিরা কিছু কিনুক না কিনুক;
ছুটতে ছুটতে অনেকেই পৌঁছে গেল মিসাইল ডগায়।
মোম আর বাতি হাতে যারা তাদের সন্ধান চালায়
তারাও আসে না ফিরে,
কেউ ফিরে না আর।
রাত ১২টার পর
শেখর
আমি নিস্তব্ধ শহরে হেঁটেছি
রাত ১২ টার পর
ক্ষুধার রাজ্য দেখেছি
দুর্ভিক্ষের দাবানল।
কিছু মানুষ দেখেছি
শুকুনো মুখের ,
কথা নাহি মুখে ফোটে।
ডাস্টবিনেতে নেইকো কুকুর
মানুষই খাবার খোঁজে ,
কুকুর গুলো ভাবনায় পড়ে
এরাও বুঝি আমাদের দলে,
আজ না হয় থাকুক
আমাদের পেট টান ।
পাগল লোকটাও জানে খিদের কি জ্বালা
সব হারালেও খিদে হারায় নিই
এ যে বিধাতার অবহেলা ।
কোন এক মা শুয়ে আছে ল্যাম্পপোস্টের ধারে
অর্ধ নগ্ন শিশুটি ডুকরে ডুকরে কাঁদে।
আমরা তো মানুষ দেখেও না দেখার করি ভান ,
মানবতা যে রেখে এসেছি
ঘরেতে বন্দি করে।
পঙ্গু লোকটি বসে আছে
ধুলে ভরা সারা গা
কুকুরের সাথে ভাগাভাগি করে খাচ্ছে
রাতের খাবার টা।
তিন রাস্তার মোড়ে
কেউ পেতেছে রাতের আবাসটা
শক্ত পিচের বিছানা
মাথায় ইটের বালিসটা।
খাদ্য গুদামে খাদ্য পচে
ফ্রিজের খাবার তাজা হয়েও মরে
তবুও মানুষ কেন ডাস্টবিন খোঁজে ?
আমরা মানুষ !
কে বলে?
মনুষ্যত্ব শুধুই চার দেয়ালে।
আমরা মানুষ !
কতোই না খাবার
ইচ্ছে হলে খাই,
না হলে টেবিল কে খাওয়াই
নরম বিছানায় নিজেকে সাজাই
ফাঁকা বারান্দা ফাঁকাই পড়ে রয়।
আমরা যে মানুষ !
মনুষ্যত্ব চার দেওয়ালেই কেন আবদ্ধ হয় ?
এই নিস্তব্ধ শহরে
রাত ১২টার পড়ে
সত্যিই আমরা মানুষ ?
সে প্রশ্ন আমায় ধরেছে ঘিরে। ।



কোন মন্তব্য নেই