মাসিক ‘কবিতাকণ্ঠ’ মার্চ-২১, বর্ষ-১৪, সংখ্যা- ৫৯ |

পরিচালনা পর্ষদ
সম্পাদক :
এম, আব্দুল্লাহ আল মামুন
নির্বাহী সম্পাদক:
কবির পথিক
প্রধান শিক্ষক(উপশহর আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়,বগুড়া)
উপদেষ্টা সম্পাদক:
কাজী হানিফ
(সিনি: ইন্সটাক্টর, টিটিসি)
প্রচ্ছদ:
এম, আব্দুল্লাহ আল মামুন।
মার্চ- ২০২১ (বর্ষ- ১৪, সংখ্যা- ৫৯)
আর একজন নজরুল চাই
তারুণ্য ডেকে নাও
মোঃ রায়হান কাজী
তারুণ্য ডেকে নাও দুর্গম এই পথে,
সকলের মন থেকে ভয় ভাঙিয়ে দাও এক হয়ে।
নিজেদের ঘরে আলো জ্বালায় চলো মশাল হাতে,
প্রদোষের পাড়াতে কালো ছায়াকে সঙ্গে করে।
মিথ্যা কথাবার্তাকে পিছনে ফেলে বিস্তৃত অঞ্চলে,
যত দুঃখ যত ভয় সত্য ভেবে দ্বারে দাঁড়িয়ে।
তোমার উজ্জীবিত আলো ছড়িয়ে দাও মানবের তরে,
থেমে যাক ওদের বুকের কাঁপন ছায়া যাক মিলিয়ো।
কত রজনী আসে যায় পূর্ব দিগন্ত জাগ্রত হয়ে,
কখনো পিছপা হয়ইনি জীবন হারানোর ভয়ে।
সেখানে মিশে গেছে কাছের পরিচয় পরিস্ফুটিত হয়ে,
চিরলাবণ্য হারিয়েছে তার নিজসত্তা দেয়ালের কাছে।
যাদের আসন ছিলো পাঠ্যশালায় জ্ঞান আহরণে,
বুকে আঁকড়ে ছিলো তারি বাসনা শয্যা মস্তিষ্কে।
পর্দা আজ সরিয়ে দাও সকল গ্লানি মুছতে,
বিশ্ব দরবারে উন্মোচিত করো আলো আনন্দের সাথে।
এই দ্বারে তোমার রূপ বৈচিত্র্য তুলে ধর,
যজ্ঞের অগ্নি শিখাতে ছাই হোক নিমিষে।
জীবনের সুখ দুঃখকে বির্সজন দিয়ে,
জ্বলে উঠুক তেজের শিখায় দীপ্ত হয়ে সম্মুখে।
আপন যে ছিলো আপনার পর হয়ে রক্ত রাঙিয়ে,
সবি ঢাকা ছিলো মোটা পর্দার আড়ালে নিস্তব্ধে।
সাহস সঞ্চার করে লঙ্ঘন করবো জীর্ণতাকে,
ছিনিয়ে আনবোই বিজয় উল্লাস তারুণ্যের বুকে।
আখিরাতের ভাবনা গুলো
রাজীব আহমাদ।
জন্মদাতা পিতা-মাতা ভাই ভগিনী অর্ধাঙ্গিনী
কেউ থাকবেনা সেদিন আমার দলে
সাবাই বলবে ইয়া নাফসী....
চাইবে সবাই মুক্তি পেতে একটু নেকীর ছলে,
ভাবনা কি হয় মোদের হৃদয় মাঝে
কি হবে সেই দিন....
মালিক মোদের দিয়েছে যে একটু সময় ঋণ,
কখন যে কার মরণ হবে যায়না কভু বলা
চলার পথে দিনে রাতে হয়েছে যত গুনা
দয়া করে আমাদের প্রিয় করে দিয়ো ক্ষমা,
আর যদি হায় না হয় দেখা
জীবন চলার এই বন্দরে
ভুলে যেও স্বজন বন্ধু প্রিয় মানঅভিমান
মনে রেখো না দ্বন্দ্বরে...
আনমনে তে আসবো যখন
স্মৃতি ফুলের গন্ধতে
নয়ন বুজে দেখে নিও
ভালোবাসার এই অন্ধরে,
দো'আর মাঝে রেখো সবাই
মৃত মুমিনের প্রতি
আল্লাহ্ তুমি রেখো খেয়াল
রোজ হাসরে মোদের হয়না যেন ক্ষতি।
অশান্তির সংমিশ্রণে জগতবাসী
এম এ হালিম শিশির
অশান্তির সংমিশ্রণে নিজকে যদিও বলি সুখী,
হৃদ গহ্বরে লুকিয়ে রেখেছি অজস্র
রোগ ব্যধি।
ঘর থেকে বের হয়েও লোকারণ্যে দেখি আজকাল
কতশত মানুষের চোখের অশ্রু ঝরে নির্বিকার।
অচিনা হলেও মনের ব্যাকুলতায় যাই তার কাছে,
তার ব্যথার বহিঃপ্রকাশে মন ব'লে কেউ নেই সুখে।
মুখে এক চিলতে হাসি নিয়ে মানুষকে বলি আমি বেশ,
হৃদয়ের ক্ষতবিক্ষত পুঁচ যদিও তার নেই শেষ।
অপরের ব্যথিত মনের করুণ সুরে ভারি হয় নিজ ব্যথা,
দুঃখী মানুষগুলোর দুঃখের বিশ্লেষণে নিজ দুঃখ করি হালকা।
এই সমাজের উঠোন জুড়ে যদিও দেখি শুধু সুখের ফোয়ারা,
আসলে বাস্তব জীবনে দুঃখের চাপাকান্না জড়িয়ে আছে
সবার জীবন চালিকা।
দুঃখের যদিও রঙ নেই, আছে তার ভিন্নতা
একেক মানুষের একেক দুঃখ, দুঃখ মুক্ত মানুষ নেই জগৎ কারখানায়।
দুঃখের অশান্তি নিয়েই আমরা তবুও মুখে বলি আলহামদুলিল্লাহ।
অতঃপর অশান্তির সংমিশ্রণে থেকেই যেন করি সবার শান্তি কামনা,
আল্লাহ যেন আমাদের অশান্তির সংমিশ্রণে এনে দেয় সুখের বাসনা।
এই ফরিয়াদ করি মাওলানা তুমি যে আমার অন্তর্যামী,
তুমি ছাড়া একে-অপরের অশান্তিতে শান্তির বার্তা নিয়ে আসবেনা কেউ সকলে জানি।
আবু জাহেল !
মো আব্দুর রহিম
আবু জাহেল !
পৃথিবীর প্রতি পতে পতে
প্রান্তে প্রান্তে তোমার নিশানবাহীর
অত্যাচারে।
কাহেল,
মুসলিম ঘরে ঘরে।।
তোমার অমানবিকতার মাপকাঠির
আদলে মুসলমানের ক্ষীনকায়
দেহের বেলুন ফুলে,
উড়িয়ে আহলাদ তোমার নিশানবাহীর।
মেরুদন্ডহীন মুসলিম জাতি
মারাত্মক ক্ষীপ্রতা ভুলে
ধ্বংসের অতলে,
ঘুরে দাঁড়াবার চেষ্টাটুকুও
যেন গেছে ভুলে।
আবু জাহেল !
তুমি নেই তাতে কি?
উত্তরসুরীরা তোমার নীতি আর আদর্শ ভোলেনি।
এদিকে মুসলিম !
ভুলে গেছে রাসুলের বাণী,
আদর্শের প্রচার, ভিন্ন মত আর পথ
প্রচারে তাদের গুণগুণী।
আবু জাহেল!
তুমি কি হাসছ?
তোমার প্রাপ্য অবস্থানের অতল
গহ্বর থেকে।
মুসলমানের এমন করুণ হাল দেখে।।
শান্তি ও স্বাধীনতা
আমিনুল ইসলাম
আমাদের সেই নির্মল গ্রামটা
সবুজ গাছের ছায়ায় ঘেরা,
ফুল ফল ও সোনালী ফসলের
রমরমা গন্ধে,
আত্নীয়তার কোমল হৃদয়ে হৃদয়ে ছিল
মমতার স্নেহে ভরা।
রাস্তার দুধারে ছিল গাছের সারি
রকমারি ফলের গাছে ঢাকা ছিল বাড়িগুলো
সবুজে সবুজ চারদিকে,
তাকালে যেন জন্মের প্রশান্তি আসে -
এখন সেই সবুজাভ চিত্রটা কেরে নিয়েছে
সবিস্তর টাকার উন্মত্ত নেশা,
ঘোলাটে পাথরের ধুলো দিয়ে,
মেশিনের তপ্ত চুলোর ধোঁয়া দিয়ে।
এখনকার দেয়ালে ঘেরা বিশাল সম্রাজ্য,
তখন ছিল নান্দনিক বিস্তির্ণ সোনালী মাঠ,
কৃষানেরা চৈত্রের ঘাম সিক্ত তাপদাহে-
গাছের ছায়ায় বসে শুকরিয়া জপতো,
সহধর্মিণীর মায়াবী হাতে বানানো -
তৃপ্তিময় লেবুর শরবত খেতো।
কৃষাণের সেই তৃপ্তি কই?
কানাচে লেবুর গাছগুলোও তো
ধুলোর ঝাপটাতে নিরবে কাতরে মরে!
ঘরে ঘরে গৃহস্থালির সেই আনন্দ কই?
নিজ হাতে চাষ করা সতেজ সবজি কই,
মাচা ভরা ধান,
জাম,লিচু, কাঁঠলের আম্র ঘ্রাণ,
শীতের পিঠাপুলি ও
নতুন ধানের মিষ্টতায়-
পায়েস পোলাওয়ের ব্যস্ততা কই?
ঘরে ঘরে গোয়াল ভরা গরু কই?
সেই ঘটি ভরা জমানো দই,
জামাই আদরে গুড় মাখা চিরে কই?
এখন আর কেউ গৃহস্থ নেই,
উঠানে ইয়া বড় খড়ের ঢিবি নেই।
খড় সড়িয়ে শক্ত পাথর আর
কয়লার পালা,
হিবুজিবু ধারালো টুকরোগুলো গুলো
নিয়েছে ঠাই।
তখন টাকার ব্যস্ততা ছিল কম,
সুস্থতায় তৃপ্তির ঢেকুর তুলে -
নির্মল বাতাসে বেঁচে থাকা
গেট ছাড়া বাড়িতেও রক্ষিত ছিল -
অন্দরের সাজানো সম্ভ্রম।
মাছে ভাতে বাঙ্গালি ছিলাম,
বিশুদ্ধ পানির সতেজ মাছগুলো,
পিওর আমিষের তৃপ্তি মেটাতো।
এখন কয়লার কৃষ্ণতা আর
সাদা ধুলোর বিষাক্ততায়-
মাছগুলো প্রাণভয়ে দৌড়ে বাঁচে নিরুপায়
শুদ্ধ অভিযানের জন্য।
তখনও কেউ উপোস ছিলনা
শুধু স্বল্প টাকার হিসাব ছিল,
এখন শুধু টাকা টাকা টাকা,
টাকার কারণে অনেকেই হয়েছ বন্য।
এখন ঘরে ঘরে টাকার কচ্চি
বিস্তর টাকা ঢুকেছে পকেটে,
রোগতত্বের উড়ো চিঠিও লিখা হয়
হৃদয় কলিজার গুপ্ত সকেটে।
এলাকার লোকদের ধনি হওয়ার
ছবি তোলে কেউ,
ধনিরাই শেষে দৌড়ে এসে
কৌশলে কত চিত্র আঁকে,
এলাকার গরীব মানুষগুলো থেকে গেলো -
লেবার শ্রমিক,
কয়লার ভিরে পাথরের নীড়ে
সদা ঠাক ঠাক শব্দে খেলে ঢেউ।
কভু দুষি না বাহিরের কাহারো,
আমরাই যে দুই টাকার লোভে
দুশো টাকার চাদর বিছিয়ে দেই তাহারো।
মাটির কাঁচা মেঝেটাও ছিল প্রশান্তির কতো
এখন পাকা মেঝের উপর
লুটোপুটি খাই পাথরের ধুলোর সাথে
আটা ময়দার মতো।
আগে আবাদের ধানে পেটের পুর্তি ছিল
এখন চালের বস্তা কিনে খাই,
ভাগিতে ভর্তারও ভাগাভাগি ছিল,
এখন মাংস কিনে ঘরে চুপ করে খাই।
তখন ঘরে ভাত না থাকলেও তুই ভাই যে,
এখন পকেটে টাকা অনেক,
তুই কে রে?
আগে শিশুদের মাতোয়ারা ছিল
পথ প্রান্তরে স্বাধীনতায় ঘুরে,
এখন পাথরের ঢিবির দেয়ালে
আবদ্ধ ওদের দামাল দৌরাত্ম,
দল বেধে খেলা করার --
মমত্বের শিকল টাও গেছে ছিরে।
রাস্তায় হেটে কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরা
স্কুল কলেজে যেতো,
এখন ওরা মৃত্যুর ঝুঁকিতে
ভয়ার্তের নিঃশ্বাস ফেলে
ট্রাকের জ্যামে জীবন অতি বিব্রত।
উন্নতি হয়েছে অনেক এলাকার মানুষের,
অবনতি কিছু কি হইতেছে -?
সন্ধান করেছে কি ;
কোন সচেতন ব্যক্তি এসে?
কিছু সুবিধাবাদী শিক্ষিত লোক
ঘরে ঢুকে মায়েরে ছলনার গল্প শুধায়,
সেই আমারই আরেক সহোদর,
শুনে মমতাময়ী মা আমার
আবেগে গলে যায়।
ঘরের দুয়ারের কাশির কলিজা জমি টার
আংশিক দিল ছুঁই,
ওতপেতে আছে আরো,
কতটুকু মোর বাপের স্থাবর ভুঁই।
সরলমনা কিশোর যুবকেরা ছিল
আদর্শের চাদর পড়ে,
এখন ওরা পথভ্রষ্ট, উন্মাদ,
ঘুমের বিছানা ছেড়ে ঘৃণ্যতায় মিশে,
কুকর্মে লিপ্ত আহা রাতের অন্ধকারে!
বলতে বেজায় লজ্জায় মরি
পতিতা খদ্দেরদের নাকি আনে ধরি,
যা শুনিনি কোনো কালে,
মদ গাঁজার গন্ধে গন্ধে
জীবন অতি দুঃসহ,
আনিছে ডেকে প্রজন্মের টীকায়
অনারোগ্য মহামারী।
এখন টাকার অহংবোধ, আর
বাঁকা বাঁকা বুলির বক্তব্য ভাব,
আমিত্বের উর্দি পড়ে চিন্তার অপব্যবহার,
মুই কি হনুরে গর্বে ছেয়ে গেছে সয়লাব।
উন্নতির জোয়ার বইছে আস্ত স্বীকার করি
বলতে পারবেন কি কেউ,
অবনতিও কিছু ঘটেনি কারো জীবনে?
তবে শ্রমিকরাই মরিতেছে ধুলা খেয়ে
মশাই, আপনি কেন লুকিয়ে থাকেন
নিশ্চুপ অন্দর গোপনে।
সরলমনা ছেলেমেদের পড়ালেখা
এখন হাজারো উছিলা খোঁজে,
মেশিনের শব্দ, পাথরের ঠক ঠাক
ট্রাকের হর্ণ,আর মানুষের গ্যামজ্যামে
কি করে পড়তে বসি এ সবের মাঝে?
স্কুলের বেতন জোটে না,
মাগনা কি কেউ প্রাইভেট পড়ায়?
ইত্যাদি কথার বাহানা,
শেষে লোড আনলোডের লোভে
পড়ালেখা ছেড়ে কড়াই বেলচা ধরে,
দুটাকা কামাই করে শখে
অনেক কিছু ঘটে আরো রাত বারটার পরে।
ঝরে যায় কাঙ্খিত ভবিষ্যৎ
শক্ত পাথরের ঢিলে,
শুধু আপনার মতো টাকা আর করো নেই
এমন অঙ্কটাই কষে হয়রান মশাই -
সভ্যতা যে কাতারে মরছে
কখনো কি দেখেছেন চোখ খুলে?
উন্নয়নকে অস্বীকার করছি না জনাব,
তবে অবনতির কেন এত অবহেলা?
সারাদিন তো টাকার হিসাবই কষলেন
মসজিদে গিয়েছেন কয়বেলা?
স্বীকার করি সুখীও হয়েছে অনেকেই
নিদারুণ দুঃখ ভুলে,
কই সেই আল্লাহর শুকরিয়া করে কেউ
সুখের পরাণ খুলে?
সরি জনাব, এতক্ষণ যা লিখেছি আবেগে
কবিত্বের নান্দনিক সুর তুলে!
মূলত যুগের পরিবর্তনে প্রকৃতি বদলে যায়,
নতুনত্ব রূপ নেয় কাঙ্খিত চাহিদার,
বদলে যায় মানুষ, বদলে হয় রুচি।
টিকিয়ে থাকতে হয় মহাযুদ্ধ করে
প্রকৃতি ও মানুষের মাঝে,
তবুও এ হৃদয় প্রত্যশা করে-
একটুকরো শান্তি ও স্বাধীনতা।
প্রসঙ্গঃ সোনাহাট স্থলবন্দরের উন্নয়ন ও অবোন্নয়ন।
এতটুকুই তো ছিল আশা মোর মনে
প্রণব চৌধুরী
এতটুকুই তো ছিল পাওয়ার,
এতটুকুই তো ছিল চাওয়ার,
প্রজাপতির ডানার রঙে রঙিন হয়ে রঞ্জিত হতাম,
পুস্পরাজিতে ভ্রমনের নিমিত্তে অমৃত পান করে,
হয়তো বা তোমাদের মত অমরত্ব লাভ করতে পারতাম না,
কারন আমি তো রক্তরস পান করতে পারিনা ৷
তবে একটা কথা কি জানো ?
ছোট্ট ছোট্ট চাওয়া পাওয়া,
ছোট্ট ছোট্ট ইচ্ছা গুলি পূরণের মধ্যে থাকে অনাবিল আনন্দ,
তবেই তো তোমার অতল জলধী অতলে থাকবে,
নচেৎ বিন্দু বিন্দু বারি গুলি কখন যে বালিকণা হয়ে-
মরু সাহারায় পরিনত হয়েছে,
তোমার অলক্ষ্যে,
আর তুমি তোমার স্বপ্নের মন পাথারে বাণিজ্যিক মালপত্র নিয়ে,
তাতে রঙ্গিন বাদাম টাঙ্গিয়ে,
বানিজ্য রায়ুর পরশের অভিপ্রায়ে জলকেলিতে নিজেকে ব্যস্ত রাখো,
তোমার স্বপ্নের নিশাকে তাড়িত করে সেই ছোট্ট ছোট্ট স্বপ্ন গুলি নতুন নবারুণ কে আহ্বান করে,
পুবের আকাশে আসন পাতিয়ে স্বাগত জানাবে,
তখন তোমার স্বপ্নের নিশি,
দুঃস্বপ্নের নিশিতে পরিনত হবে না তো ?
কারন তুমি তো এতটুক চাওয়া পাওয়াকে পূর্ণ করাতো দূরের কথা,
কর্ণপাত করোনি ৷
তুমিতো তো বাজারে অনেক মলমই তো ফেরী করে বেরাচ্ছো,
হাত ব্যথা,
কান ব্যথ্য,
হাঁটু ব্যথা,
এমনকি মস্তিকের ও !
কিন্তু মনের মণিকোঠার অঙ্গণে,
আগুন তুমি জ্বালিয়েছো,
তার মলম কি তুমি নিয়ে এসেছো বাজারে ?
নাকি হাঁটু ও কানের মলমের মতই নাকি,
মলমের জন্য মলম,
শুধু পরসার ও সময়ের অপচয়,
আমাদের মতো হা-ভাতেদের ৷
তোমার আর সময় কোথায়,
ছোট্ট ছোট্টদের প্রতি,
এভারেষ্ট, কাঞ্চণজঙ্ঘা, K2 দের সামলাতে,
আবার প্রশান্ত ও ভারতমহাসাগর তার অবস্থান পরিবর্তন করতে চলেছে,
কারন এতটুকু চাওয়া
ও পাওয়া কে
সম্মাণ প্রদর্শণ করোনি ৷
তাহলে তো world worming ঘটবেই,
মিশ্রনের মিশ্রন কতটা
নব পৃথিবী রুপায়ন করতে পারবে,
তার পথিকৃৎ হবে ছোট্ট ছোট্ট ইচ্ছা ও স্বপ্ন গুলি ৷
ভবিষ্যৎ সেই কথা বলবে ।
অনেক দূরে
মোঃ ইব্রাহিম
সব আয়োজন থমকে রেখে
ঘড়ির কাটা আটকে যাবে
কোন এক বেলা শেষে,
ব্যাথায় ভরা শোকে
ভাসব যখন হাওয়ায় ভেসে
চোখের কোনায় কিছু জল
করবে তুমার টলমল
হাত বাড়িয়ে আশে পাশে
পাবেনা আমায় অবশেষে ।
কলকল নদীর ঢেউ
বয়ে যাবে সেদিন ঠিকই সই
পাখির গলায় মধুর সুর
বাজবে সেদিন সুমধুর
তখন হয়তো থাকব আমি অনেক দূর।
ভ্রোমরের ফুলের মেলায়
ফুটবে কত নতুন ফুল
আকাশের ঐ রঙধনুটা
রঙ ছড়াতে করবে না কোন ভূল ।
মেঘের পালে সাদা ভেলা
করবে সেদিন খেলা
রোদ্রের হাসির লুকোচুরি
দেখতে লাগবে অপরুপ ভারী
সেদিন আমি থাকব না আর ভবের বাড়ি ।
মিলে মিশে চলার পথে
বিন্দু বিন্দু স্মৃতি হতে
কিছু কিছু কথা
চোখের জলে হয়ে ব্যাথা
কাঁদাবে শুধু চোখের পাতায়
তখন আমি থাকব তুমার মনের খাতায় ।
সাথি হারা দুঃখের কণা
চোখের কোনায় দিবে হানা
অনুতাপের জলের ধারা
ভাসবে তুমার চোখের তারায়।
একুশে ফেব্রুয়ারি
ফরিদা ইয়াসমিন
মাতৃভাষার দাবী আদায়ে বাহান্নর ভাষা আন্দোলনে হাজার ছাত্র জনতা ঢাকার রাজপথে উত্তাল বেগে নেমেছিল স্লোগানে।
রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই উর্দু করো দূর
কাজে-কর্মে বাংলায় হবে রাষ্ট্রভাষার সুর।
বলদর্পী সরকার গুলি চালিয়ে একশত চুয়াল্লিশ ধারায়,
বাংলাভাষায় কথা বলার অধিকার চাইলো দিতে থামিয়ে।
বুকের রক্ত দিল রফিক সালাম জব্বার বরকত প্রমুখ,
প্রাণের বিনিময়ে চাইলো বাংলা ভাষা আসুক।
বাংলার ইতিহাস এভাবেই উঠলো গড়ে
প্রতি বাঁকে বাঁকে এর নির্মল রক্তবিন্দু ঝরে।
বারে বারেই ফাগুন আসে পলাশ শিমুল কৃষ্ণচূড়া ফোটে,
শহীদ মিনার ফুলের বন্যায় যায় ভেসে
আবাল-বৃদ্ধ-বণিতার ভালোবাসায়।
কোকিল কুহু সুরে গানে মৌমাছি ফুলে ফুলে মধু গুঞ্জরনে,
ভ্রমর উড়ে বেড়ায় ফুলে ফুলে দক্ষিণা বাউলা সমীরণে।
বাংলার হৃদয় ব্যথায় কাঁদে শহীদ তোমাদের স্মরণে,
চির অমর একুশে ফেব্রুয়ারি চির অমর ভাষা আন্দোলন
চির অমর হে বাংলার সূর্য সন্তান বাংলা মায়ের জওয়ান।
তোমাদের রক্তে বাংলা মায়ের ভাষা মুক্তি পেয়েছিল একদিন,
ভাষার পথ ধরে এসেছিল মুক্তিযুদ্ধ বিজয়ের অর্জন গড়ে উঠেছে বাংলার মুক্তি যুদ্ধ বিজয়ের ইতিহাস,
হে বীর সন্তান তোমাদের স্মরণে বাংলার
কবি-সাহিত্যিক
লিখ্ছি গল্প নাটক কবিতা উপন্যাস মুক্তির জয় গান,
ভাষার জন্য তোমরা করেছিলে সেদিন বুকের তাজা রক্তদান,
তোমাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা আজ উড়িয়েছি
বাংলার আকাশে রক্তে রাঙানো বিজয় নিশান,
আমরা ভুলিনি তোমাদের ভুলবো না কোনদিন।
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি ?
জাল ; সে কি আর অতীত আটকায়
রীতম দত্ত
হয়েছি কি আমি আবদ্ধ
তোমারই করা হাহাকারের করুণ স্বরে
নাকি হয়েছি মুক্ত
তোমার দেওয়া বিচ্ছেদের তরে।
রঙ মশাল জ্বেলে যাই
রঙের নিচে রঙহীন রয়ে যায়
কে আটকায় এ মনের বেদন
আটকায় কে এই কান্নার শ্রাবণ।
হয়তো সেই আগুন তোমায়
কোনো এক অজানায় হারায়
যে আগুনের ছাইয়ের নিচে
আছে এক চোখ; যে ভিজে।
আছো কিনা জানি না
আটকেছো কোন মায়াজালে
আমি কি আর জড়াতে পারি
তুমি বিনা কোনো নব প্রেমাজালে।
মায়ের ভাষা
ফরিদুজ্জামান।
তোমার মুখের বুলি মাগো
সবচেয়ে মোর দামী,
ফুল হতে তাই শহীদমিনারে
প্রথম প্রহরে আমি।
ভুলি নাই মাগো তোমার সাথে
প্রথম পথচলা,
তোমার কথায় তোমার ভাষায়
প্রথম কথা বলা।
একুশের সেই ত্যাগের কথা
যাইনি আজো ভুলে,
তাইতো তাদের শহীদমিনারে
শ্রদ্ধা জানাই ফুলে।
তোমার ভাষার তরে মাগো
জীবন গেছে যাদের,
শ্রদ্ধায় মাথা নত করে আজি
স্বরণ করি তাদের।
যতদিন রবে রক্ত এ দেহে
ততদিন রবে আশা,
ততদিন মাগো থাকবে মুখে
তোমার মুখের ভাষা।
তোমার কথায় চলবো মাগো
তোমার ভাষায় বলবো,
তোমার ভাষায় বলতে কথা
মরতে হয় আবার মরবো।
ঋ বর্ণ নীলপৃথিবী
সৈয়দা তৈফুন নাহার
বাঁশপাতা ভাঁজে জল-আরশী ছায়ানৃত্য দেখলে বেলা গুলো শিশুর মত ঘুমিয়ে যায় , ঋ বর্ণ নীলপৃথিবীর কার্নিশ ধরে ঝুলন্ত বালিহাঁস খেলে এলার্মঘড়ি এলার্মঘড়ি --- পানকৌড়ী ছাঁপ অতলে তল ঠেকা পড়শী --
শীত শীত বাকি সব বর্ণগুলো প্রতিযোগী প্রতিবেশী !!
চোখ বন্ধ করে হিস্ হিস্ কিছু একটা খুঁজে পেতে চাইলে -- বুকের ভেতর যে রাত জেগে রয়, তা দিয়ে আমি ঘুড়ি বানাই , মাঞ্জা দেওয়া সীমানার অদূরে ঋ বর্ণ পৃথিবীতে কতগুলো প্রজাপতি দলবেঁধে হিংস্র কুকুর ,
সূতোর সুত্ররা মেঘ-ধারাপাত পড়ে অবলীলা উচ্চারণে ---এক নিঃশ্বাসে গেয়ে যায় ই ঈ,হতে বিসর্গ চন্দ্রবিন্দু ---
চিত্রার জলে গাঁ ধুয়ে বলেশ্বর পাড়ি দেয় চেনা খেয়াঘাট , কৈশোর থেকে আজো ওখানে আছে ঝিঁঝিঁ ডাকা গ্রাম আর বুনোফুল অগ্রহায়ন গৃহস্থালি , মায়ের শরীরের তাবৎ ঘ্রাণ নাকে শুড়শুড়ি পরায় একদম ৯ লি বর্ণ ,
তবুও বাঁকা নাও ভাঙা অর্ধেক চন্দ্রবিন্দু জীবনটা কখনো কখনো হাঁপিয়ে ওঠা কাপাসিয়া নদী , দরজার কপাটে করোটি ছায়া , এখানেও বক্ররেখায় দাঁড়িয়ে থাকে ইচ্ছে নগর ইতিহাস চাঁদ ,তারই আঁচলের খোটে নতুন পাহাড়দিন প ফ ব এর শূণ্যঘর পূর্ণতার অপেক্ষা --
শুক্লাদ্বাদশীতে এখানে এখন ঊষার আলো মেখে পড়ে থাকা খালি এম্পুল আমি , চুড়িভাঙা কাঁচ টুকরো প্রেমটুকুই আমার সম্বল , শেষরাতে তারা ঝরা নীলাম্বরী ঈশারা উড়াণে সে -- পাহাড়ী ফুলকি কুড়ানো নাজুক জটাবুড়ি ;
৩ এর নামতায় মেঘভাঙা পদ্মপাতা বলে আমি তাকে ডাকি !
এখানেও ফেব্রুয়ারী আসলে ফাগুন ষ্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা অদ্ভূত যাত্রী আমরা --
আর অ-- বর্ণের মত আমাদের জীবন গুলো ভীষনই অদ্ভূতুড়ে সময় জংশন !!
কাব্যগ্রন্থ ঃ নীল পাহাড়ের কাব্যকথা
বসন্ত বরণ
সামিয়া আক্তার
প্রকৃতি সেজেছে নতুন সাজে ;
শীতের বিদায়ী বার্তায় ,
বসন্তের আগমনী হাওয়ায় |
কৃষ্ণচূড়া , রাধাচূড়ায় বেজেছে মাতম ;
বসন্তের ঝিরিঝিরি মিষ্টি হাওয়ায় |
কচি পাতায় সেজেছে ডালপালা ;
প্রকৃতির কি অপরূপ ,
সৌন্দর্য্যের বিচিত্র মায়ায় |
শিমুল , পলাশ ফুলে লেগেছে আগুন ;
এই যেন প্রকৃতিতে ,
বসন্তের আগমন জানান দিয়ে যায়।
আম্রকাননে মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে ;
মাতোয়ারা চারদিক,
সেই এক অপরূপ সৌন্দর্য্যের ছোঁয়ায় |
কোকিলের কুহু কুহু ডাকে ;
বসন্ত ঋতু নিজেকে খুঁজে পায় |
বসন্তের নবীন আনন্দে ;
জীবনের হৃদয় দুয়ার যায় খুলে |
শীতের জীর্ণ সাজ ফেলে ;
প্রকৃতি সাজে এক নবরূপে |
বারো মাসে তেরো পার্বণ ;
এর দেশ এই বাংলা |
বাঙালির সুখ দুঃখের জীবন যেন ;
প্রকৃতির বিচিত্র মায়ায় থাকে ঘেরা |
ভালোবাসা মোড়ানো ঋতু রঙে ;
বাসন্তী রঙের শাড়িতে সাজে ,
বাঙালি ললনা |
সকল প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে ;
শীতার্ত প্রকৃতির ঘুম ভাঙিয়ে ;
প্রকৃতি হয়ে ওঠে,
এভাবেই ঋতুরাজের রঙ্গশালা ||
ফাগুনের ডাকঘর
মাহামুদুল হসান মিথেন
কিছু ভালোবাসা
আক্ষেপ ঠাঁসা!
ফেলে ফেলে আসা পথ-
তোমাদের হাতে
ধরা থাক, সাথে
আমার ছোটানো রথ।
ছেঁড়া ছেঁড়া ছায়া,
ঝুলে থাকা মায়া,
ফাঁক গলে দেখা রোদ
হাসি খুশি দিন।
রাত্রির ঋণ
জোনাকির দামে শোধ!
উদাস হাওয়ার বাওলির পাকে ভালোবাসা
জড়াজড়ি হয়ে ঘোরে,
বসন্তের রোদ লাগে তার গায়!
ভালোবাসা উড়ে চলে মাঠ থেকে মাঠে
তার স্বরচিত ঠিকানায়!
কিছু ঠিকানায় আঁকা থাকে আক্ষেপের স্বরবর্ণ
আবার কিছু ঠিকানায় থাকে প্রাপ্তির আড়ম্বর উচ্ছাস।
পৃথিবির সমস্ত ভালোবাসাই প্রেমময় হয়ে উঠুক...
লিপ্সা
চম্পা রায়
ছোট্ট এক পৃথিবী গড়ে বাঁচতে চেয়েছিলাম
সুন্দর ,নিজের মতন করে
তবু কেন এত কদাকার ঝড়
মুচড়ে পড়ে এই ছোট্ট হৃদয়ের প্রান্তরে।
পাখির ডানার ঝাপরে ভেঙে যায় সব
হৃদয়ে ব্যথিত যত মনোরথ
সাজানো সুখের নীড়, মনের সজ্জিত তীর
ভেঙে যায় হৃদয়ের সে গোটা এক পথ।
একে একে সুখো নীড় খান খান চৌচির
এই হারানোর বেদনায়
হৃদয়ের কাঙ্খিত ছবি হওয়া যত সুখ
অজীর্ণ কালিতে লেপিত কালিমায়।
হে বুকফাটা কান্না তুমি কেন জীবন্ত
তুমি কেন বাঁচো এ পথের টানে
কেন এত পথ চেয়ে করো তুমি এত ভীড়
এ পথে রাখো নিজেরে এমন ভিড়ায়ে।
জগতের ত্রাণ পথে দাও শুধু ভিক্ষা
যে ভিক্ষার মাগনায় আছে ভূভুক্ষা অনেক
হৃদয়ের যন্ত্রণা মুছে
হবে মন্ত্রণা
সুখের সে ছবি হবে যতেক যতেক।
আর নাহি ধ্বরা পৃথিবীর এই যত পারা
ঝড়, ঝাপটের, নির্বাণ বাণী
কেঁদে না ভাসিয়ে মুখের সেই হাসি এ
হোক পৃথিবীর প্রান্তে অমর খানি।
এক এক করে ডুবে যাক হিংসা
আসুক ধ্বরার বুকে আনন্দ, প্রশংসা
সুখে !সুখে! থাকার বাসনায় আছি যে বড়
এই চাওয়ারই পরম লিপ্সা।
কিশোর গ্যাং
মুন্সী মোঃ তোফায়েল আহমেদ
কিশোর গ্যাং মানে,
সকলের ভয়ের কারণ।
কিশোর গ্যাং মানে,
সকলের সামনে উদ্ধতভাবে চলা।
ভয় না পাওয়া কাউকে।
কিশোর গ্যাং মানে,
তাদের কারণে ভীত এলাকার সকলে।
কিশোর গ্যাং মানে,
তাদের না মানলে হবে নাকো
কারোই এই অঞ্চলে চলা।
কিশোর গ্যাং মানে,
তাদের মেনে নেও না হলে
এলাকা ছেড়ে পালাও।
কিশোর গ্যাংদের বলছি,
সময় থাকতে মান্য করো বড়দের,
স্নেহ করো ছোটদের,
চলো ধর্মেরই পথে,
সর্বদা স্বরণ করো সৃষ্টকর্তাকে।
কিশোর গ্যাংদের বলছি,
বিপদে পড়লে পাবে নাকো তুমি
রক্ষা কারো কাছ হতে,
কাঁদবে বসে জেলে,
ভাসবে তোমার মা-বাবা
চোখের জলে।
ফাঁসবে তুমি অন্যায়ে।
সময় থাকতে হও গো সাবধান
ওগো কিশোর গ্যাল ভাই ও বোনেরা।
কোন মন্তব্য নেই