মাসিক কবিতাকণ্ঠ, ফেব্রুয়ারি-২২, বর্ষ-১৫, সংখ্যা-৭০
পরিচালনা পর্ষদ
সম্পাদক :
এম, আব্দুল্লাহ আল মামুন
নির্বাহী
সম্পাদক:
কবির পথিক
প্রধান
শিক্ষক (উপশহর আদর্শ বালিকা
বিদ্যালয়,বগুড়া)
উপদেষ্টা
সম্পাদক:
কাজী হানিফ
(সিনি:
ইন্সটাক্টর, টিটিসি)
প্রচ্ছদ:
এম, আব্দুল্লাহ আল মামুন।
ফেব্রুয়ারি- ২০২২ (বর্ষ- ১৫, সংখ্যা-৭০ )
আর একজন নজরুল চাই
ভাষার মর্যাদা
আমিনুল ইসলাম
হৃদয়ের ধমনি ছিড়ে
তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে
মোলায়েম রাস্তা জ্যাবজ্যাব করে দিয়েছিল,
সালাম,শফিক বরকত ভাই,
শুধু মায়ের ভাষা,
বাংলাকে রক্ষার জন্য!
আমরা সেই ভাষায় মানুষকে গালি দেই,
বজ্জাৎ কত আমরা? সে ভাষায় মিথ্যা বলি!
আমরা সে ভাষায় ওয়াদা লঙ্ঘন করি,
আমরা সে ভাষায় অক্ষরের ব্যবসাও করি,
সে ভাষায় রঙ মেখে সং সাজিয়ে
অযথার্থতার মোহে নৃত্য করি।
সে ভাষায় মিথ্যাকে সত্য সাজিয়ে
অকথ্য গল্পে প্রতিহিংষার রাজনীতি করি।জব্বার ও বরকত ভাইয়ের আত্নাগুলো
পাওনা সওয়াবের তৃষ্ণায় ধুঁকছে সারাবেলা,
আমাদের সেদিকে চর্চা কই?
চলো তারুণ্যের ছন্দে--
অরুণের প্রতিভাস হয়ে,
চলো যুবক, চলো আবালবৃদ্ধবনিতা,
ভাষাকে সম্মান করি,
সত্যের আদলে, সত্য মানুষ হয়ে
সত্য কথায়, সত্য কিছু লিখে লিখে --
বাংলা ভাষায় কথা বলি।
সোনাহাটস্থলবন্দর, কুড়িগ্রাম।
শেষ পাতা
ন্যান্সি দেওয়ান সামিরা
বইয়ের একটি শেষ পাতা।
পড়ছিলাম বারান্দায় বসে,
আমার বাসার বারান্দার সামনে বড় terrace এ বাবা লাগানো
হাসনাহেনা ,গন্ধরাজ ,জবা ,গোলাপের সুবাসও পাচ্ছি ।
বসন্তকালে শেষ সপ্তাহ
আমার আধখানা বইয়ের পৃষ্ঠা
নিশ্চুপ, হয়ে পড়ছিলাম
" তপ্ত পরিসরে"
জাগিলো নয়নে ।
দুটি নয়ন যেন এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে
দুইজন প্রেমিকার দিকে,
প্রেমিকার হাতের ফুল
কবিতায় কবি তাই বলেছেন,
প্রেমিক হৃদয়ে আবেগ জাগিয়ে তুলেছেন এই কবি,
ছড়ালো ভালোবাসা
প্রেমিকা বলে ভালবাসার কাছে সবকিছু হার মানায় ।
কবি সেটাই বলে তার কবিতায়।
বইয়ের পাতায় প্রতিটি পৃষ্ঠায়
যেন ভালোবাসার বহির প্রকাশ ঘটেছে
বইয়ের শেষ পৃষ্ঠা ।
জুড়ে আঁকা রঙিন ছবি,
মোবাইল ফোন আমার কলটি বেজে উঠলো।
পুনরায় সেই অফিস সেই মিটিং
ছুটির দিনগুলো সেই হলে ফিরে যেতে হবে সেই অফিস
আজ তবে এই আটখানা থাক পৃষ্ঠা। পরে পড়বো বলে।
চোখ
প্রণব চৌধুরী
চোখের চাক্ষুষে যখন চড়কগাছ |
চলন্তিকায় নেইকো চাকা চষে চারপাশ ৷
কর্ষণে কর্ষিত কার্য কালান্তরে কর্মহীন I
কড়িৎকর্মারা তবুও কড়কড়রে করমন্ডলে অন্তরীণ ৷
আবহতে আসীন তারা অবান্তরে এই অবেলায় ৷
আলয়ে আলয়ে আনে অন্তের আহ্বান অবণীতে হায় !
জনতার জনমন জল্লাদের হাতে হচ্ছে জবাই এ যেন জন্মান্তরবাদ |
জল্পনার জলশাঘরে জ্বলে উঠে জীবন্তলাশ জীবন বরবাদ ৷
আঁখির কি দোষ বল অবলোকনে আলোকপাত অন্তরে অন্তরায় ৷
আসীমের অসীমতা আজ শুধু নয় আসমানে আসরে আসর জমায় ৷
চিত্তের অন্ধতা
ফরিদুজ্জামান
নেচে তাধিন ইচ্ছে স্বাধীন
হাজার স্বপ্ন মনে,
উড়ছে ঘুড়ি লাটাই ছাড়ি
ছুটছে আকাশ পানে।
ছুটছে ঘুড়ি ছুটছে জোরে
মাতাল হাওয়ায় ভেসে,
বেতাল হয়ে লেজ দুলিয়ে
আপণা খায়েশে।
আকাশ পাড়ি দিবে আজি
নীল ছাড়িয়ে শেষে,
লক্ষ তারার পাশ কাটিয়ে
যাবে চাঁদের দেশে।
চাঁদের বুড়ির চরকাটা সে
করবে এবার চুরি,
পরীর দেশের নীল পরীটার
মনটা নিবে কাড়ি।
সূর্য্যি মামার বাড়িটাও সে
আসবে এবার ঘুরে,
রংধনুর সব রঙ মেখে
যাবে অনেক দূরে।
হাজার রকম স্বপ্ন দেখে
উড়ছে যখন ঘুড়ি,
ঠিক তখনি সুতোর টানে
গেল নীচে পড়ি।
নীচে পড়ে বেতাল ঘোরের
কাটলো চোখের ধাঁধা,
দেখলো একি জীবন যে তার
লাটাইর সুতোয় বাঁধা।
ময়না পাখি
মোঃ ইব্রাহিম মিয়া
আমার প্রাণ ভোমরা ছোট ময়না
মাঝে মাঝে কথা কয়না
করুন চোখের মিষ্টি পলক
নামে শুধু শ্রাবন ধারার ঝলক,
টিপ টিপিয়া পরে পানি
কাঁদে তাহার চোখের মনি
সাথি পালক ছেরে একা
বন্দী জীবন লাগে ফাঁকা
দূর আকাশে চেয়ে থাকে
ডানা মেলে উরবে কখন আপন সুখে ।
লুকিয়ে রাখা বন্ধুর স্মৃতি
জমাট বেধে হইল প্রেমপ্রিতি
সকাল সন্ধা বন্ধুর কথা
ভাসে পাখির চোখের পাতায়,
তাইতো পাখির প্রাণে ব্যাথা
ভূলে গেল আহার নিদ্রার কথা
চুপচাপ মেজাজ ভারি
সর্বদাই দেয় আড়ি
আদর সোহাগ যতই দিলাম
তবুও পাখির মন না পেলাম ।
আমার হবে এই ভরসায়
শিকল বেড়ী দিলাম খাচায়
পোষার আশায় ভালবাসা
সুখের ঘরে বাধব বাসা
এইতো ছিল মন বাসনা
প্রাণ পাখিটা বুঝল না
ভাটার জলে সুখের ভেলা
নোঙর করে অবেলায় ।
দিন হারিয়ে বুঝলাম আমি
মনের চাওয়া পাওয়ার অনেক দামি
মন বাঁধার শিকল কড়া
কারো হাতে হয়না গড়া।
টাডুম টাডুম
বুলবুল হাসান
শীতের হাওয়া লাগল গায়ে...
ঘরেই হাঁটি জুতো পায়ে.......
লেপের ভিতর শুয়ে থেকে...
মন যে করে টাডুম টাডুম....।
কমছে না শীতের প্রকোপ
কোথাও যে হচ্ছে বরফ,
বেড়েই চলছে ঠাণ্ডা আরও!
এমন ভীষণ জালায় পরে.....
ঘরের মাঝে বন্দি হয়ে.........
মন যে করে টাডুম টাডুম....।
শীতের বুড়ি কোথায় গো
আজ বিনয় করে বলি গো...
নিয়ে যাও প্রবল শীত!
এই শীতেরই ফান্দে পরে....
কম্বল মুড়ে গরম হয়ে...
মন যে করে টাডুম টাডুম.....।
আমি জেগে রই
মোঃ মাহাবুবুর রহমান
আমি জেগে রই
আর তুমি ঘুমিয়ে পড়,
তোমার নিস্তব্ধতা আমায়
কাঁদায় বারবার ।
আমার অব্যক্ত আবেগ
আমায় কুড়ে কুড়ে খায়,
সেই থেকে আমি এক
অগ্নিঝরা গোলাপ
তোমার হৃদয় আঙ্গিনায়
এমন শীতের রজনীতে ।
এতটুকুও খেয়াল করার
সময় তোমার নেই,
সেই কবে উঠেছিল চাঁদ
জোৎস্নাভরা রাতে
আজ ও মনে পড়েনা,
ঘুমিয়ে গেছে মন ।
আমার হারিয়ে যাওয়া তুমি
হয়তো পাশেই ঘুমাও
না হয় চলে যাও
দূর থেকে দুরান্তে
নীল আকাশের ওপারে ।
আজ ও ফুটে ফুল
তুমি দেখেও দেখনা,
আজ ও হৃদয় গঙ্গায়
উঠে ভীষণ ঝড়
তুমি অনুভব করনা,
নির্বাক রয়ে যাও।
আমি জেগে রই
তোমার ঘুম ভাঙ্গার আশায়,
বাতাসে ভরা অক্সিজেনে
তোমার আমার জীবন
শুধু ভিন্ন রকম জীবন
ও ভিন্ন অবয়বে গড়া ।
তবুও মানুষ তুমি ও আমি
এই ধরাধামে,
একই হৃদয়ের বন্ধনে আবদ্ধ
আজীবন, আমরন ।
কোন মন্তব্য নেই