মাসিক কবিতাকণ্ঠ’ আগষ্ট’২২, বর্ষ- ১৫, সংখ্যা-৭৬
পরিচালনা পর্ষদ
সম্পাদক :
এম, আব্দুল্লাহ আল মামুন
নির্বাহী
সম্পাদক:
কবির পথিক
উপদেষ্টা
সম্পাদক:
কাজী হানিফ
(সিনি:
ইন্সটাক্টর, টিটিসি)
প্রচ্ছদ:
এম, আব্দুল্লাহ আল মামুন।
আগষ্ট- ২০২২ (বর্ষ- ১৫, সংখ্যা- ৭৬)
আর একজন নজরুল চাই
অগো প্রভূ
মোঃ ইব্রাহিম
অগো প্রভূ
কেন চোখ বুঝে আছ কভু?
চোখের পাতা খোলে
আজও নিলেনা আমায় কোলে ।
অবহেলায় আর অনাদরে
রাখলে আমায় ভবের পাড়ে
রোদ বৃষ্টি আর কাদা জলে
আমিই ছিলাম সবার পায়ের তলে ।
আগুনের কত ছায়া
দিয়েছ আমার এই কায়ায়
পেতে কৃপার তৃষ্ণার জল
হন্যে হয়ে খুজেছি আমি
অনেক সাগরের তল।
মরুভুমির প্রান্ত পথে
কতইনা হেটেছি আমি
নয়নমাখা জলের সাথে,
তবোও পাইনি কোন দিশা
আজও ছুটছি আমি
তুমার কৃপার নেশায় ।
লাঞ্চনার এত আঘাত
আমি সইব কি করে
তুমি যদি মুখ ফিরিয়ে নেও একেবারে,
কাঁদাও যত কাঁদব তত
ভবের জ্বালা দাও যত
তবোও আমার মাথা
তোমার কাছে রাখব নত ।
ভবের ব্যাথা আমায় দিয়া
কি সুখ পাও নিরবে হাসিয়া
অন্তর পুড়ে দুঃখের ছাই
তবোও তোমার দেখা না পাই
তোমার দেওয়া যাতনা
সইতে আর পারিনা ।
আশা নদীর বালুচরে
এখনো আছি পরে
অকুলেরই কূল তুমি
তোমার দয়ার আশায় আছি আমি ।
এক পশলা স্মৃতিবর্ষণ
সৈয়দা তৈফুন নাহার
সময় পার্লারে সেজে পালিশ পুতুল হয়ে উঠছে মানুষেরা আজকাল ,
শুধু তোমরাই সাজতে পারনি কখনো , তবুও তোমরা জ্বলছই সমুজ্জ্বল প্রদীপের আলোশিখা হয়ে --
জানতো , আজ খুব মনে পড়ছে ২০১৬ সালের কোরবানির ঈদটাকে -- যেটা তোমার জীবনের শেষ ঈদ ছিল -- সেই বোধহয় আমার দেখা প্রথম কোন ঈদে অন্যদের বাদে কেবলমাত্র মাকে নিয়ে বেরিয়েছিলে তুমি -- কে জানতো বলো ? সেদিন তুমি চিরকালের জন্য ঈদের শেষ নামাজ পড়েছিলে !
কেউ তো না,এমনকি তুমিও জানতে না -- তোমার প্রিয়জনদের হাত সেদিন ছিলনা তোমার হাতে , একাকী ঈদের নামাজ পড়ে মাদ্রাসা হতে ফিরে -- মাকে নিয়ে গেলে বড় ফুপুর বাড়ি , যেখানে না গেলে তোমার স্বস্তি হতনা , ঈদ মানে বড় বোনের বাড়ি সারাটাদিন তোমার , দুপুরবেলা ওবাড়ি খাওয়া ছিল সকলের রুটিন , শুধু বাড়িতে থেকে ঘর পাহারায় থাকতো আমার মা , খাবার চলে আসত তার জন্যে ঠিক সময় মতই ,
আর ঐ দিন মানে সেবারে আর কেউ ছিলনা এ বাড়িতে -- মূলত আর কারো যাবার সময় এখন হয়না , নিয়মেরা বাঁধনহারা এখন , তাই আগের মত দৌড়েও কেউ বাড়ি আসেনা কষ্ট করে । ঐদিন আমাকেও ফুপু বাড়ি বলেছিলে যেতে, আমিই যাইনি ইচ্ছে করে নিজে -- ঘরে বসে গান শোনা , অন্যদের সাথে ফোনালাপে কথা বলা , এসব নিয়ে ভালই সময় কাটছিল আমার --
কিন্তু অবাক করে কয়েক ঘন্টা পরেই দুপুরের আগে তুমি একা ফিরে এলে, মাকে রেখে এলে তোমার প্রিয় ভাগনীর আবদার উপেক্ষা করতে না পেরে -- মিথ্যে শরীর খারাপের দোহাই দিয়ে ফিরে এলে তুমি -- জীবনে কোনদিন এমনটা হতে কেউই দেখিনি
কেউ বুঝতে না পারলেও আমি বুঝেছিলাম তুমি ফিরে এসেছ নিশ্চিত কোন কারনে , ও বাড়ি হতে না খেয়ে ফিরে আসাটা তোমার জন্য অসম্ভব অস্বাভাবিক আমি জানতাম ৷ আমিতো তোমারই আত্মজা --
পরে অবশ্য জেনেছিলাম আমাকে নিয়ে মনগড়া মিথ্যে বাজে কথা বলেছিল তোমার অতিপ্রিয় ভাগনে , তোমাকে তাচ্ছিল্য করেছিল , যেটা তোমার মেনে মিতে পারার মত ছিলনা , ভীষণ অপমানিত বোধ করেছিলে , আঘাত পেয়েছিলে অনেক অনেক বেশি !
কেননা, তুমি খুব ভাল করে জানতে তোমার সন্তানকে । তুমি চিনতে বুকের ভেতর হতে -- তুমি ধরে ফেলেছিলে তোমার প্রিয় ভাগমের অনেক জোচ্চুরী , তুমি নিজে দেখেছিলে, শুনেছিলে, জেনেছিলে এবং বুঝেওছিলে তার অজস্র ছল চাতুরী !
সেই সে দিনের মত আজো কোরবানি বাবা , আজ আর ঈদ করতে এ বাড়িতে দূর হতে তোমার অন্যান্য সন্তানেরা আসেনা প্রানের টানে বা দায়িত্ব কর্তব্য মেনে -- হৈ চৈ হয়না , গরু, খাসি আসেনা ---
সেই রকম হয়না রান্নার ঝনঝনানি , মজা করে পায়চা, তন্দুর, কাবাব খাওয়া হয়না --
ভুড়ি কোপ্তা কত কিছু যে হত -- ছবির মত ভাসে এখন তা সব মন ক্যানভাসে ---
এক পশলা বর্সার মত ভিঁজতে ইচ্ছে করে ভীষণ -- ইচ্ছে করে তেমন দিন ফিরে পেতে আবার , কাজ সেরে ঘরে ফিরে আবার তোমার কোলের পাশে শুয়ে থাকতে ভীষণরকম ভাবে মনটা চাই ইদানীং --
জানি সব পাবনা তবুও কিছু হয়ত ফিরে পাব এ আশায় জেগে থাকি , তোমাদের দেখানো পথ চেয়ে রঙধনু খুঁজি রাতের আকাশ খুলে -- তোমাদের প্রিয় স্বজনদের জন্যে ভাবনারা এলো চুল হয়ে ওড়ে -----
বর্ষার মত ঝরে পড়া ফোঁটার মত আশা জাগে -- আশা জাগে প্রজন্মের পর প্রজন্ম আসুক এখানে , দিনের আলো মুছে যাওয়ার মত সব আলো না হোক ম্লান -- নেচে উঠুক এ বাড়ির প্রাণ , হোকনা একটু কম সুন্দর -- হোক না ছোট বা অগোছালো পুরনো কোন টিনচালা ঘর --------
তবুও চিরকাল তোমাদের ছুঁয়ে বেঁচে থাকুক অমর অমৃত অক্ষত এ আবাস ---
ভুলে ছুটা
ফরিদুজ্জামান।
বেশ তো চলে চলছে তো বেশ
রুটিন মতো কাজ,
খাওয়া দাওয়া আরাম আয়েশ
চলাফেরা রাজ।
চলছে তো বেশ আলাপ প্রলাপ
নানান আয়োজন,
হচ্ছেও জোগাড় করছোও সব
যা যা প্রয়োজন।
করলে তো বেশ কাটালে সময়
করে বিশ্বের কাজ,
কাজের ফাঁকে ভুলে গেলে মিছে
পড়তে হবে নামাজ।
কিসের তরে কবে কার জন্যে
আসলে তুমি ভবে?
ভুলে গেছো নাকি ভুলে আছো
মিছে মোহে সবে?
ওরে আসবে যখন যাওয়ার সমন
রইবে পরে কাজ,
সে-ই কাজের খেয়া বইবে অন্যে
ভুলবে তোমার রাজ।


কোন মন্তব্য নেই