Header Ads

মাসিক কবিতাকণ্ঠ, নভেম্বর’২২, বর্ষ-১৫, সংখ্যা-৭৯

কবিতাকণ্ঠ

পরিচালনা পর্ষদ

সম্পাদক :

এম, আব্দুল্লাহ আল মামুন

 

নির্বাহী সম্পাদক:

কবির পথিক

 

উপদেষ্টা সম্পাদক: 

কাজী হানিফ

(সিনি: ইন্সটাক্টর, টিটিসি)

 

প্রচ্ছদ:

এম, আব্দুল্লাহ আল মামুন।

নভেম্বর- ২০২২ (বর্ষ- ১৫, সংখ্যা- ৭৯)

আর  একজন   নজরুল   চাই


অন্তর্জালা

নাজমুল

 

ভরা যৌবনা নদি, কাশ ফুল,

ঝরা পাতা,কৃষ্ণচূড়া

মৌমাছির অবিরাম কান্না

একে একে হারিয়ে ফেলবে তাদের নিজের প্রশান্ত সময়।

নিজ বাসভুমে কষ্টের কোকিলগুলো চিনবেনা তাকে।

পেছনের শুন্য চেয়ার, পরিপাটি খাট আর জানালার পর্দায় থাকবে আবির মাখা বিকেলের অন্তর্জালা।

স্বার্থপর প্রজাপতি, মধুকর আর ঘাসফরিং স্মৃতির কৌটাটুকু

পূর্ন করবে আবার ভালবাসার মধুর সংলাপে।

এমনিকরে আবার

চন্দ্র,সূর্য আর বসন্তের বাতাস সেই শূন্য চেয়ার আর পরিপাটি খাটের সব যন্ত্রনা মুছে দিবে অফুরন্ত আবেগে।

ধুয়ে দিবে সব যন্ত্রনা।

কিন্তূ তাতে কি----

তুমি আমিই তো নেই---

আমি তো ওভাবেই প্রতিটি

গভীর রাতে দূর আকাশের

কোন এক নিঃসঙ্গ তারা হয়ে থাকবো। এমনি তো হয়--

শুধু অন্ধকার আঙ্গিনায় কেউ স্মৃতি হয়ে জ্বলবে মিট মিট করে।

আর হয়তো অন্যদের কোন বোধই নেই।

 

কোথাও অলসতা

সেলিম আলতাফ

 

উপলব্ধি জল সরোবরে আনাগোনায়

নতুন ঢেউ সম্ভার-

এতদিন আছড়ে পড়েছে চেনা সমুদ্রের

আপন জলস্রোত,

তাতে মাঝে মাঝে অজানা কিছু উঁকিঝুঁকি-

পুরনোর মিশ্রণে বিলিন হতো সময় প্রহরে।

এতদিন জীবন চলেছে

শরতের সাদা নীল নিমগ্ন সৌরভ আমোদে,

তাতে যে ঝড় বা বৃষ্টি আসেনি-

এমনটা বলতে চাইনা অস্বীকার উচ্চারণে।

এতদিন কেউ দেখেনি

আমার ভিতরের শ্যাওলা জমা ছবির দেয়াল,

আমিই বন্ধ রেখেছি

নিজের আর সবার সুখী মুখ দেখার লোভে।

আজকাল নতুন ঢেউ

অজানা রঙে ক্রমাগত ছুটে ছুটে আসছে -

ভাবনা ঘরের তরঙ্গে

আগে এসবের আয়োজন ব্যঞ্জনা ছিলোনা।

এখন কোথাও অলসতা-

বাগান জুড়ে নিত্য ঘুরে বেড়ায় মন খারাপ,

এখন নিজেকে চিনছি -

অন্য কোন আদল পরিস্ফুটন মাখামাখিতে।

 

মানব সভ্যতার একাল ও সেকাল

প্রণব চৌধুরী

 

কবে আর এই তমসাঘন ,

কুয়াশায় আবৃত কুৎঝটিকা পূর্ণ ,

করাল রজণীর হবে অবসান ,

সেই প্রতীক্ষায় আজ মোরা সেই যে আবাহমান কাল থেকে করছি অপেক্ষা

মনে পড়ে ,

এই তো সেইদিন ,

সিন্ধু সভ্যতার বিকাশ কালে,

আমরাই তখন অনিল আমি ,

সবে মাত্র গুরুগৃহে পর্দাপণ করেছিলাম ,

প্রথম পাঠ নিতে

তখনও মালবিকারা অন্তরালের অভ্যন্তর থেকে ,

রবিকরের উষ্ণ ছোঁয়ার অনুভূতিতে ,

সবেমাত্র আপ্লুত হবার অভিপ্রায়ে গুটি গুটি পায়ে , ঘরের চৌকাঠ পেরিয়ে ,

উঁকি মারছে সুনীল আকাশের দিকে ,

তখনও তো আবহের আবহাওয়া ,

যেখানে সেখানে গড়ে তোলেনি প্রতিরোধ |

সেই সভ্যতার জন্মলগ্ন থেকে এখন অবধী প্রতীক্ষিয়মান |

মানব সভ্যতা নাকি তড়তড় করে ,

উত্তরণের পথে উত্তরণ ঘটাতে ,

সমগ্র আবহাওয়াকে খাঁচায় বন্দি করে ,

আমরা সবুজ বৃক্ষরাজি বদলে কংক্রীটের জংঙ্গলে ধাবিত হচ্ছি

মানতার মানবের জায়গায় হচ্ছে দাখিল যন্ত্রমানব জানিনা আমরা প্রকৃত অর্থে ,

কি ধরনের সভ্যতার লক্ষে ,

নিজেদের সভ্য ভেবে চলেছি

কোন মহা শুন্যের পথে আমারা ,

এখনই প্রত্যক্ষ করছি ,

মোদের অবয়ব কে অবিকৃত রেখে ,

মন পাথারের মননে যেন এক সারাগোজা নামক অগভীর দূষিত সাগরের প্রতিচ্ছবি

যেখানে একবার পদক্ষেপণ করা অসম্ভব

ভারি বিশ্বয় জাগে মনে,

সেইসময় আমারা পথিমধ্যে একটু কালবিলম্ব হইলে পর ,

আমরা কালহরণ না করে ,

গুরুদেব গুরুদেব বলে আহ্ববাণ করলে ,

অতি শ্রীঘ্রই আমরা তৎক্ষনাৎ প্রতিউত্তর আমাদের কর্ণকূহরে গুঞ্জরিত হত

বৎসে আমি এইখানে কিয়ৎক্ষণ স্থিতি অন্তে পুনরায় গমন করিবো

বৎসে তোমাদিগকে ,

আমি যাত্রা কররার অনুমতি প্রদান করিলাম তোমারা অগ্রসর হও

কিন্তু আজ ,

তথাকথিত অত্যাধুনিক সভ্যতায় ,

প্রতিটি মানব যখন যন্ত্রমানবে পরিনত,

তখন কোনো আমাদের কর্ণ কূহরে ,

কোন আর্তনাদ কি প্রতিফলিত হয় ?

পরিচালক সেইখান থেকে ,

বোতাম টিপে যা করতে নির্দেশ দান করে সেই মত কার্যক্রম তোমার দৃশ্যপটে দৃশ্যত হইবে

তাতে তোমার আলয় যদি অনলে ভষ্মিভূত হয় হোক না কেনো

তাহলে মানব সভ্যতা কি উত্তরণের পথে ?

নাকি অবতরনের পথে করছে গমন কি বলবে তোমরা ?

 

কবি যখন ভীষণ একা

সৈয়দা তৈফুন নাহার

 

কবি যখন একা -- বড় একা ; আপন মনে উড়তে থাকে এখানে ওখানে জল বাঁশিতে -----

একা একাই কথা বলে শূণ্যে দূর দিগন্ত অসীমের দিকে তাকিয়ে ,

আকাশ তখন হাসে কবির চোখে চোখ রেখে ,

নির্লিপ্ত সে হাসিতে থাকে নিজস্ব কিছু মুগ্ধতা , চট করে অশান্ত মনটাকে ঘুরিয়ে দেয় ভিন্ন জগতে ---

কবির মন খারাপ সারাতে কখনো পাখির ডাক নিয়ে আকাশ নদী একত্রে হাজির হয় মাঝরাত্তিরে ! কখনো একগুচ্ছ বন্ধু পরিবার ছেলে মেয়ে সব তুলে আনে পলকে পলক ফেলে ,

অজস্র ফুল-শাখায় ভরায় বসার ঘর, ঝুল বারান্দা , বাদ যায় না আঙিনা , ছাদ বা শোবার ঘর হতে মাঝের লম্বা করিডোরটাও ---

হঠাৎ পিয়ানোই বেজে ওঠে প্রিয় ঠোঁট ছোয়া সুর , প্রিয় গানের প্রিয় কলি , চেনা কন্ঠ চেনা আবেগ গুলিয়ে দেয় ঝরা বকুলের মত , কবিই তখন ঝুরো কদম নিজের ভেতর নিজে

কাজল ধোঁয়া দীঘির মত চোখে দৃষ্টি ঝাপসা মাঠ , বৃষ্টি ঝরে অলক্ষ্য অনন্ত অন্ধকারে

বন্ধুদের হতে লুকাতে দোপাট্টার উপর চলে টানাটানি , নয়ত " দাড়া কাপড়টা পাল্টে আসি ! "

প্রেম বিলাসী কবির কল্পনার আজন্ম সাধনা খোঁজে কেবল একজোড়া চোখ , অবিকল সে একজোড়া চোখের মত জীবন কবির শ্বাশত সত্য --- অনিশ্চিত জেনেও সময়ের রশিতে গেরো দিয়ে দিয়ে প্রতিক্ষায় কাটে -- দিন, মাস, বছর , যুগের পর যুগ

তেমরা জানোনা , ডাইনোসার যুগ পেরিয়ে কবি এখন উত্তর আধুনিক বিশ্বের সিঁড়িতে , ডিজিটালাইজেশনের শরৎ শিশির নুপুর পরে কবি হেঁটে যায় অজানায় ,

পেছনে ফেলে আসা সেই একজোড়া চোখের মত অবিকল অন্য একজোড়া চোখের সাথে !!

 

একটা পাহাড়

সুশান্ত দত্ত

 

চাই একটা একলা পাহাড়

ঝর্না তারি কাছে।

আসবেনা কেও দেখতে আমায়

সারা দিনের মাঝে।।

প্রভাত আলোয় সাথে সাথে

ঝর্না হবে লাল।

পাহাড় থেকে দেখবো আমি

এই দুনিয়ার হাল ।।

রাতের বেলায় যোনাক সেথা

ভরে দিবে আলো।

পাখির ডাকে হবে প্রভাত

ঘুচবে রাতের কালো ।।

ক্ষুধা নিদ্রা না থাকুক সেথা

সুখ দুখ আর।

দুনিয়া থেকে অনেক দূরে

হোক সে আমার পাহাড়।।

 

স্বপ্নের পৃথিবী

আনাম

 

তোমার জন্য একটি নতুন পৃথিবী গড়ব।

হেমন্তের কোন জোৎসনায়

দুজনে রাত কাটিয়ে দিব নিদ্রাহীন,

হৃদয়ের সব বাতায়ন খুলে

জোনাকির মত আলো ছড়াব

আকাশের মত উদার চিত্তে।

হৃদয়ের ঠিক মাঝখানে পুষে রাখব

দূর আকাশের সন্ধ্যা তারার মত

নিমিষেই তোমাকে হারিয়ে যেতে দিব না।

তোমার জন্য তাজমহল নয়

নতুন পৃথীবি গড়ব।

স্বপ্নের পৃথিবী।।

 

আমি নেতা

মোঃ তারিকুল ইসলাম

 

আমি নেতা বড় ক্ষমতা ধর

নিমিষেই ভেঁঙ্গে দিবো

তোমার বাড়ী ঘর।

থানা পুলিশ হাতের মুঠায়

করি না কাউকে ভয়

এসপি ডিসি হাত মিলেছে

চুরি করতে নেই আর ভয়।

পাশের বাড়ীর ভোলা মিয়া

বাজার করছে কাল

চুরি করবো ঝিংগা মুলা

বলার কেউ নাই।

ধরা খাবো ভাবি না আর

পুলিশ আছে পাশে

ভাগের টাকা দেই তারে

সময় মত এসে।

আমি নেতা বড় ক্ষমতাধর

বুজে সুজে কথা বলো

ভাঁঙ্গবো তোমার ঘর

জমি জমা দখল করবো

দলিল করবো পরে

ভিক্ষা করে খাবে তুমি

বুঝে নিয়ো তাই

ক্ষমতার বাড়ায় বেশি হয়েছে।

সময় আমার শেষ

পুলিশ এসে নারছে কড়া

ধমক দিয়ে হইছি খারা

হাতে আমার হাত কড়া

বলার কেউ নাই।

 

অ মানুষ হারাইওনা হুশ

মোঃ ইব্রাহিম মিয়া

 

মানুষ কোথাও হারাইও না তোমার হুশ

স্রষ্টার সেরা সৃষ্টি হয়ে

জম্ম নিলে মানবকূলে

কত শত ভাগ্য বলে

ফিরে এলে মানুষের পালে

মারহাবা,মারহাবা, শুকরিয়া তোমায়

মুহাম্মাদের উম্মত হয়ে

ভূমিষ্ট হলে মায়ের কোলে

পূর্ব কর্ম ভাল বলে

সকল প্রাণি পিছন ফেলে

আবির্ভাব হলে তুমি ধরাধমে

ধন্য তুমি, বলি আমি

মানুষের কর্ম কর যদি,

ভবের পাড়ের নিত্য বেলা

সত্য সুন্দর চরিত্রের খেলায়

সভ্যতার ফুল ফোটতে পারে অবলিলায়

মানুষ কোথাও হারাইওনা তোমার হুশ

বিবেক,বুদ্ধি, প্রজ্ঞা বলে

আশরাফুল মাখলুকাত এর খাতায় নাম লিখালে ভবে

তা না হলে, জম্ম হত পশুর পালে

থাকতে তুমি জঙ্গলে

ঞ্জান হারাইয়া বেহুশ হলে

মানবিকতা ভাসবে তখন জলে

বুঝে শুনে ভবের হাটে

চরন ফেল বিচার মতে

ভুল করিলে একটু খানি

মানবতার হতে পারে মানহানি,

নৈতিকতার অধঃপতন

সচ্চরিত্রের হবে তখন মরন

মানুষ হারাইও না তোমার হুশ

বেহুশের নাই ধর্ম কর্ম

শাস্ত্র পড়ে জানলাম আমি এই মর্ম

আদি কথার তথ্যমতে

খবর এল ধর্ম গ্রন্থে

মানুষ হবার বাধ্যকতা

বলছে প্রভু

আল কোরআনের পাতায় পাতায়

 

কে বাঁচাবে

নাসি উদ্দিন

 

কে বাঁচাবে স্বদেশ আমার

চারদিকে সব স্বেচ্ছাচার

কোথাও তো নেই নিয়ম নীতি

চলছে জুলুম অবিচার।

শব্দ দূষণ বায়ু দূষণ

কিংবা আরও পানি দূষণ

আবর্জনায় ভরছে স্বদেশ

করবে কে যে ক্ষতিপুরণ?

জায়গা দখল নদী দখল

দখলদারের উৎপাতে

রক্ত ঝরে দেশের তবু

মাথা ব্যথা নেই তাতে।

স্বজনপ্রীতি ঘুষের বাজার

যেদিকে যাই আহাজারি

কে বাঁচাবে স্বদেশ আমার

হৃদয় যখন নষ্টপুরি!

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.