মাসিক ‘কবিতাকণ্ঠ’ ডিসেম্বর’২২, বর্ষ-১৫, সংখ্যা-৮০

পরিচালনা পর্ষদ
সম্পাদক :
এম, আব্দুল্লাহ আল মামুন
নির্বাহী
সম্পাদক:
লাভলী খন্দকার
উপদেষ্টা
সম্পাদক:
কাজী হানিফ
(সিনি:
ইন্সটাক্টর, টিটিসি)
প্রচ্ছদ:
এম, আব্দুল্লাহ আল মামুন।
ডিসেম্বর- ২০২২ (বর্ষ- ১৫, সংখ্যা- ৮০)
আর একজন নজরুল চাই
আজগুবি ব্যস্ততা
নাজমুল
হায়রে সাধের বিশ্ব কাপ
নিজের দেশের খবর নেই
অন্য দেশ গোল করলেই
ছাদ থেকে কেউ দিচ্ছে লাফ
অফিস হোটেল বিদ্যালয়
রাজা উজির মারছে সবে
কাজ নেই কি করবে ভবে
খাচ্ছে পোলাও প্রতি জয়ে
কাতারে কেউ যাচ্ছে উড়ে
পাবার আশায় অশ্বডিম্ব
পায়নি ভুতের প্রতিবিম্ব
এমনি চলছে দেশ জুড়ে
আর্জেন্টিনার জয়ে কি লাভ
হারলেই কি এমন ক্ষতি
বুঝিনা এদের মতি গতি
রাতদিন এদের জব্বর ভাব
নিজের কাজে দিচ্ছে ফাঁকি
হচ্ছে মতের ভাগাভাগি
চায়ের কাপে রাগারাগি
শিয়ালের মত উঠছে ডাকি
মহিলা দলের দিগ্বিজয়ে
সবাই বেজার আনন্দহীন
বে-পর্দার এলো দিন
ভীতু, মৌলবাদের ভয়ে।
নীল
খাম
লাভলী খন্দকার
তোমার নীল খামের চিঠি পড়ে
আজও অশ্রুসিক্ত হয়ে উঠে দু নয়ন
তুমি হেসেছিলে আর আবৃত্তি করে
শুনিয়েছিলে কবিতার দুটি চয়ন,,
তোমার নীল খামের চিঠি পড়ে
বুকের ভিতরটা আজও শুন্যতায় ভরিয়ে যায়
তুমি রেখেছিলে মোর হাতে হাত
একই সাথে থাকিবে তুমি সারাটি সন্ধ্যা প্রভাত
তোমার নীল খামের চিঠি পড়ে
আজ ও প্রচন্ড অভিমানে নিজেরে হারায়
তুমি যেখানেই থাকো ভাল থাকো
শুভকামনা জানাই।
বোবা
কলম
প্রণব চৌধুরী
শুনেছিলাম বললে ভুল হবে,
বরং বলা যেতে পারে আমি দেখেছি,
খাতের কিনায়ায়,
কিভাবে মরণ ফাঁসে দিয়ে ফাঁস,
সব আকুতি ও ইচ্ছা গুলিকে ঝুলে দিয়ে,
নামিয়ে দেওয়া হয় মারিয়ানা খাতের গভীর অতল তলে ৷
এভারেস্ট কিন্তু দাঁড়িয়ে দেখে সেই আবাহমান কাল থেকে ৷
একদিন নয় বহুবার এভারেস্ট হিমালেয়ের প্রতিনিধি হয়ে,
প্রশান্ত কে বলেছে দেখো,
এইগুলি ঠিক নয়,
যা করেছো করেছো এইবার বন্ধ করো ,
কে শুনে কার কথা !
তাইতো হিমালয় কবে থেকে বলেছে সকলকে,
গঙ্গা, সিন্ধু, ব্রহ্মপুত্র, ইয়াংসিকিয়াং, হোয়াং হো কে
তার প্রবাহকে রুদ্ধ করতে ৷
নাঃ তবুও তাদের কুকীর্তি কোনোভাবে দমিত হয় নি
বরং উত্তোত্তর বেড়েই চলেছে,
সাক্ষী থেকেছে এবার বোবা কলম,
তারও তো সিন্ধু, গঙ্গার মত প্রবাহ ধারা বন্ধ হয়েছে,
শুধু বলা হয়েছে আকাশে নীল ও দিগন্তের সাদা নিয়ে যদি লেখতে পারে তবে নচেৎ নয় ৷
তাই তো হিমালয় নিজ উদ্যোগে,
রকি, আল্পাস,আন্দিজ, কে ডেকে বলেছে ,
আমাজান, মিসিসিপি, রাইন, ভল্গা এবং সর্বপরি নীল নদ কে আমন্ত্রন জানিয়ে তাদের প্রবাহ ধারাকে রুদ্ধ করতে,
প্রশান্ত কে মরুসাহারা তে পরিনত করে,
মারিয়ানা খাতের পেট থেকে যা এতদিন সে উদরস্থ করেছে তা বের করে পৃথিবীবাসীকে নাকি,
বড় দিনের উপহার দেবে ৷
তাই তো প্রশান্ত আজ বড়ই অশান্ত,
কলম কে সে রীতিমত শাষিয়ে বলেছে,
বোবা ছিলিস ভালোই ছিলিস,
কেনো কথা বলতে গেলি,
কলম বলে আমারা বড়ই শান্ত প্রজাতীর,
তবে কেউ অবথা আমাদের পা মাড়িয়ে,
অকথ্য গালিগালাজ করে চলে যায়,
তখন আমরা আমাদের আসল রঙ দেখাতে শুরু করি ৷
তখন আমরা আমাদের দেহ থেকে বিচ্ছুরিত করি নানা রঙের বর্ণালী ,
সেই রঙের বর্ণ ছটায় তোমাদের চক্ষু যে ছানা বড়া হবেই তা বলার অপেক্ষা রাখে না ৷
আমরা বোবা নই,
আমরা বোবা থাকতে পারি না ,
তোমাদের কায়েমী স্বার্থ চরিতার্থ করবার অশুভ প্রয়াস কে,
তার গতি প্রাপ্ত করতে আমাদের বোবা বানিয়েছিলে,
দেখো নিরব বিপ্লব আমরা করেছি,
হিমালয় ও এভারেষ্ট কে দিয়ে,
হতে পারো তুমি অতল প্রশান্ত,
তোমাকে তোমার অহংবোধের ও কুকর্মের ফল তোমায় ভোগ করতেই হবে;
দেখো কলম চিরদিন কলমই থাকে,
সে বোবার অবস্থা হোক,
বা লিখনি রূপেই হোক ৷
শেষ
বেলা
মোঃ ইব্রাহিম মিয়া
অল্প সল্প চাওয়া পাওয়ায়
ভূলে গেলে সব মোহ মায়ায়
মায়ার চাদর রুপের বরন
চোখের নজর করল হরন,
খাটি হিরা খুজতে এসে
নকল পণ্যে আছ ঘাঁ ভেসে
আনন্দের এই রঙে মিশে
ভূলে গেছ কি হবে শেষে ।
অল্প সল্প চাওয়া পাওয়ায়
ভূলেগেলি সব মোহ মায়ায়
দিনে দিনে সময় গেল
কাল নিশি এল এল
মহা জনের মহা বানি
মানলিনারে অভাগিনি ।
টল মল চোখের জল
হবে তোর সম্বল
এত সাধের জীরন ভেলা
কাটাইলি তোই হেলায় হেলায়।
অল্প সল্প চাওয়া পাওায়ায়
ভূলে গেলি সব মোহ মায়ায়
সু সময়ের ময়না পাখি
যৌবনে যার মাখামাখি
কান্চা রসের মধুর হারি
ময়নার পালে করলি খালি ।
চালান খাইয়া বাকির খাতায়
নাম লিখাইলি পাতায় পাতায়
শন্য মতে যমের হাতে
পারবে কি দাড়াতে ।
ফিরে
এসো
সুশান্ত দত্ত
ওই আকাশে কেমনে থাকো
এসো আবার ফিরে ।
তোমায় নিয়ে যাবো এবার
সাত সমুদ্র তীরে ।।
রোজই দেখি তারার মাঝে
তোমার ছোট্ট আলো।
আমায় ছেড়ে তুমিও একা
নেই একটুও ভালো ।।
মেঘলা দিনে কেমন থাকো
পাইনি খুঁজে আর।
রাত্রি আমার যায় পেরিয়ে
খুঁজতে হাজার বার ।।
যাও কি তুমি ঘুরতে তখন
ভরা নদীর তীরে।
বৃষ্টি ঝরে অঝোর ধারায়
আর আসোনি ফিরে ।।
আমি জানি আসবেনা আর
যাবেও না আমায় নিয়ে ।
একলা তুমি একলা আমি
অসীম দূরে ঘিরে ।।
আমি
ঔষধ বিক্রেতা
মোঃ তারিকুল ইসলাম
লেখাপড়া শেষ করেছি
30বছর ধরে
এমএ বিএ পাশ করেছি
প্রথম শ্রেণী নিয়ে।
চাকরি আমার হয় না কেন
ভাবি নিশি ধরে
ঔষধ কোম্পানীতে চাকরী নিবো
ভেবে পাইছি পরে।
ভাইবা দিয়ে চাকরী হলো
প্রশিক্ষন ঢাকাতে
এসি রুমে বসি আমি
ভিআইপি খাবার খেয়ে।
পোষ্টিং হলো অনেক দূরে
বাড়ী যাবো বছর পরে।
সকাল বেলা ডাক্তার ভিজিট
দুপুর বেলা দোকান
রাত্রি বেলা পকেট ভরা
মাঝ রাতে বসের গালি।
সকাল বেলা ডাক্তর ভিজিট
লিটারেচার দিছি
নমুনা ঔষধ গেলো কোথায়
বস বললো আসি
দোকানদার সব খুসি হইছে
নমুনা ঔষধ পেয়ে
বস আসছে রেগে মেগে
ভাইকে ভিজিট করছো শেষে
নমুনা ঔষধ দিছো কেন
Gift কি খাছো বেচে
ভাই আমার Gift না পেয়ে
ভাত খায়নি রাতে
সকাল বেলা Gift যেটা
আছে তোমার ঘরে
ভাইয়ের তরে দিবা সেটা
ডাক্তার ভিজিট পরে।
মাস শেষে বেতন আসে
ব্যাংকরে খাতা ভরে
বাবাকে দিবো এটা আর
মাকে দিবো সেটা
বিকাল বেলা দেখি আমি
ব্যাংকের খাতা ফাঁকা।
সকাল বেলা আলু ভর্তা
দুপুর বেলা ডাল ভাজি
রাত্রি বেলা না খেয়ে আমি
ব্যাংকের খাতা খালি।
সততার মৃত্যু হলো
বসের কথা শুনে
নমুনা ঔষধ বেচে খাছি
অনিক ফার্মেছিতে।
ডাক্তর সাহেব অনিক ভালো
নমুনা ঔষধ চাই না সেও
Gift চাই আজি।
সকাল বেলা ব্যাগটা নিয়ে
হাসপাতালে আসি
ডাক্তর সাহেব হেসে বলে
নাস্তা করছো নাকি
চলো ভাই দুজন মিলে
নাস্তা করে আসি
নাস্তা সেরে ডাক্তর সাহেব
হেসে হেসে বলে
মানি ব্যাগ ছেড়ে আসছি
হাসপাতালের ঘরে।
মোনাজাত
ফরিদুজ্জামান।
সুখ শান্তি মনের প্রশান্তি এনে দাও প্রভু মোরে
লোভ লালসা ক্ষোভ হতাশা দাও সব দূর করে।
আলোর পথে ভালোর সাথে চালিয়ে রাতদিন
দাও চুকিয়ে মোর জীবনের চলার পথের ঋণ।
লালসার টানে জেনেশুনে বিপথে বাড়িয়ে পা
করেছি যতো গুনাহ আমি করে দাও মাপ তা।
দাও দাও, দাও হে প্রভু, করে দাও সবি মাপ
চলার পথে এই জীবনে করেছি যতো পাপ।
সব পাপ মোর ক্ষমা করে দাও হে খোদা দয়াময়
তুমি বিনে এই অধমের আর কেউ নাই দুনিয়ায়।
তোমার দয়া তোমার করুণায় বেঁচে রই দিনরাত
তুমিই জাগাও তুমিই মারো দেখাও নতুন প্রভাত।
কবুল করো কবুল করো কবুল করো মুনাজাত
আজি অধম ভিখারি বান্দা তোমার তুলেছে দু-হাত।
কোন মন্তব্য নেই