মাসিক কবিতাকণ্ঠ, মার্চ-২৩, বর্ষ-১৬, সংখ্যা-৮৩

পরিচালনা পর্ষদ
উপদেষ্টা সম্পাদক:
নাজমুল হক
সম্পাদক :
এম, আব্দুল্লাহ আল মামুন
নির্বাহী সম্পাদক:
এম, রেজা
লাভলী খন্দকার
প্রচ্ছদ:
এম, আব্দুল্লাহ আল মামুন।
মার্চ- ২০২৩ (বর্ষ- ১৬, সংখ্যা- ৮৩)
আর একজন নজরুল চাই
শুধু তুমি নেই
নাজমুল হক
সাঁঝ আকাশে উঠে ভেসে মেঘের কিশলয়
সেই আকাশের সব কিছুতে শুধু তুমি ময়
তেমনি কাঁদে সন্ধ্যা তারা কাঁদে চাঁদের হাসি
নেই তুমি তাই আঁধার ছোঁয়া কষ্ট রাশি রাশি
বৃষ্টি ধোয়া আমের মূকুল এই ফাগুনেও আছে
তেমনি করেই কোকিল ডাকে আজো গাছে গাছে
চৈত্রে আজও বুকের ভেতর হু হু বাতাস বয়
চিলের ডানায় আলো ছায়ার সুখের অভিনয়
নদির তীরে হাসবে আবার শুভ্র কাশের বন
আমার কাছে বন ওটি নয় সেটি তোমার মন
লুকিয়ে তুমি আছ আমার সকল কিছুতেই
সবই আছে আগের মতই শুধু তুমি নেই।
ভদ্রাপতির জল কাব্য
করিম মোহাম্মদ
ভদ্রাপতি এখন অনাথ
একদিন উজানে বইতো মাটির পাতিল ভরা নৌকা
উড়তো বকের সারি
গাইতো গায়েন কৃষক জলভাঙ্গার গান
করতোয়া কণ্যা যখন যৌবনা নাগর ছিলো অজানা
মাটির গন্ধে ভরতো ভদ্রাপূত্রের বুক
এজলে জীবন ছিলো মানুষের
ইতিহাসের জন্ম দিতো দুকূল
উওরে মোঘল
দক্ষিণে মানুষ
পশ্চিমে ব্রিটিশ
পূর্বে করতোয়া
ফকির মজনুশাহের রণবিশ্রাম
আজ ও টিকে আছে ভদ্রাপতি জলহীন শরীর
বুকে নিয়ে কংক্রিটের বাঁধ।
ঝড়া ফুল
লাভলী খন্দকার
জীবনের ফুলগুলি আজ ঝড়া
ফুলের মত ঝড়ে গেছে,
সপ্নগুলি ভেংগে খান খান হয়ে আছে
আশাগুলি মেঘ হয়ে দুর আকাশে ভেসে গেছে
মনের ভাষাগুলি নিরবতার মাঝে দুলছে
আজ আমি ছন্নছাড়া,বিষন্ন মন খুলে বলছে
হারিয়ে গেছে জীবনের ছন্দ,,,,
বুঝিনা কি যে ভালো মন্দ
আমি স্থবির, নিস্তব্ধ,নিরুপায়
আমি যে একেলা আমি এটাই আমার পরিচয়,
বড় আব্বুর মুখে
স্মৃতির স্বাধীনতা
ভাষা-রংপুর
উৎসর্গ- সকল
বীর শহীদ
ও মুক্তিযোদ্ধাদের
আমিনুল ইসলাম
ওরে সোনা বাপ!
তোমরা উল্যা চোখে না দেখলে
বিশ্বাসে কইরব্যার নন,
তোর বাপ তখন কেবল
হাল ধরে,
গরুগুল্যা এনডিয়ার
বাচরাত চড়ায়, পাইলে সইনদ্যা ব্যালা হ্যাঙাজালে দুই এক
খলাই, কই পুটি মারে।
মুই তোর বাপের চ্যায়া
সাত বছরের বড়।
হঠাৎ রেডিওতে শোনা গেইল
মুজিবরকে পাকিস্তানি আর্মি
ধরি নিয়া গেইছে,
সংরাম শুরু হইছে
গেরামের সগাই
ভয়ে থরো থরো।
রহমতদা কয় চলরে ভাই,
আমরা সংরামোত যাই
দ্যাশের জইন্যে যুদ্দো করমো
জিবন যায় যাইবে এবার-
দ্যাশকে সাদিন করি ছাড়মো।
মোর আবার ছোট থাকি বন্দুক
বুকোত নিয়া গুলি করা শখ,
বাড়িত না কয়া পালে গেইলোং
দুই ভাই,
গায়োত জামা জোরা নাই,
পেনদোদ এহান তবন,
গায়োত গুনজি আর গামছা,
তুইন্যা কবু বাপ!
টেনিং কইরতে কইরতে
জিবন তামা তামা।
চতুর্পাহে খালি গুলির ধারাম ধারাম শব্দ,
আর খাল পাগার নদী।
আমরা মুক্তিফোজ যেটি সেটি
নুকি থাকি গুলি মারি,
কাইয়ো আবার বুকোত
গুলি নাগি
ধ্যারাত করি যায় পড়ি,
যেটি সেটি মরা মানুষ
পড়ি আছে,
মনে হয় রক্তের নদী
রক্ত জমি খামা খামা
হয়া আছে।
তোর গাও শেংরে না?
দ্যাখ মোর পশম শিংরি গেইছে।
জীবনের একছেকেন গেরান্টি
নাই বাও।
কিশের তোর ভাত পানি
সবসময় জীবন ধরি টানাটানি।
কি কইম বাও লইজ্জার কথা
মা বইনের বিদিখিস্তি দিশ্য
এলাও মোর মনে উটলেই
ভয়ে কইলজ্যা
চিনচিন করে ব্যাথা।
সালাহর রাকখোস হায়না
মনোত দরদ নাই, মুকখো
পাষাণ মাদারির বাচ্চা।
শ্যাসম্যাস তো হারি গেইছে!
নয়মাস পর বাড়িত ফিরি আসনু
মার চোখে পানি শুকি গেইছে
নিথর শরিলট্যা পড়ি আছে
আউলাঝাউলা বিছানার উপরা
মাও ধান্দা নাগি আছে
কথা কয়না,
মোর বুক ফাটি যায় অবস্থা
তোর বাপও মোর
গালা ধরি ডুকরে
কান্নায় থমথমা পরিবেশ মেলাক্ষন,
হটাত মাও মোক বুকোত টানি নিয়া কয়, ওরে মোর সোনার ছেলে, সাত পুষ্যের ধন
এতোদিন কুটি গেছিস বাপ?
মুই কনু,
-- মা! সোনার বাংলা আনতে।
মা কইল,
বাপ! ধইন্য হোক তোর
সোনার বাংলা!
সোনাহাট স্থলবন্দর,কুড়িগ্রাম
নীল মৃত্যু
আরিফ মোহাম্মাদ
ইথারের হেমলক আর উদাসী দুপুর ----
শ্রাবনের ঘুঙুর হয় খুব অতীতের পোড়া বিকেল
এখনো মাঝে মাঝে ঘেমে উঠে কাঠের হৃদয়
সবুজাভ ভালোবাসা ম্লান হয় চৈতালি রোদে।
নিরাপত্তার অসম সমীকরণে ঊর্বশী মেঘ,
হয়তো ঝরবে না ধুলোর পৃথিবীতে।
দর কষাকষির চৌকাঠে তেলহীন প্রদীপের মতো
শুধু না বলা কিছু কথা জমা হবে ভেতর গহীনে।
সময়ের কফিনে ঠুকে বাস্তবতার পেরেক
জানি তুমিও অচেনা কর্পোরেট জীবনের দহনে।
আর যদি গনতান্ত্রিক নিয়মে মন চায় নৈসর্গিক চাষাবাদ
বিলিয়ে দেবো বর্গাহীন বুকের বিস্তৃর্ণ জমিন।
যদি কখনো বিষাদে ছেয়ে যায় তোমার ইচ্ছের আকাশ দেয়াল
তবে জেনে নিও আমি ও নীল মৃত্যু করেছি পান।
তবু মুখে হাসি
এম রেজা
বুকের ভিতর চিন চিন ব্যথা
না পাওয়ার অনেক আকুতি নিয়েও
মুখে থাকে রাজ্যের হাসি।
জুলুম নিপিড়ন অবজ্ঞা
অবহেলা সহ্য করে
মুখে থাকতে হয় হাসির ছটা।
মধ্যবিত্ত নিন্মবিত্ত বাংগালী
পুরুষ আমরা, নিজেকে ভুলে,
কষ্ট লুকিয়ে, সেবা দিয়ে যাই হাসি মুখে।
অপরের জন্য মানুষ আমরা
নিজের জন্য রোবট, তবুও
নির্লজ্জের মুখে থাকে হাসি।।
মাতৃভাষা
প্রণব চৌধুরী
মায়ের
মুখেরভাষা যদি
হয়
মাতৃভাষা তবে
কেনো
এই
মাতৃভূমিতে ৷
মুখোসের মায়াজালে মনপাথারে হয়
মন্দন
মন্দির কেনো নেই
মাদলে
৷
অবলোকনে হয়েছি
অবলোকিত এই
অপরাহ্নের অবেলায়
৷
আলোক,
অতসী,
অপলা,
অয়নরা
কিন্তু
করায়
অধ্যায়ণ ইং
মধ্যমায়।
অথচ
তারা
অবাক
করায়
করেন
শিক্ষকতা পান
অর্থ
বাংলা
শিক্ষায়তনে ৷
বাঙালী
মোরা
বাংলা
মোদের
না
আসেনা
বদনে
বদান্যতায় বিদেশী
ব্যকারণে ৷
তারাই
আবার
তাতল
তাপিয়ে
তাতায়
তিমির
তর্পণে
তড়িঘড়ি
৷
তমসাতে
তন্দ্রাচ্ছন্ তুঘলকী
তদারকিতে তিক্তবিরক্ত মোদের
তরী
৷
মনের
মরমে
মাজিয়া
মরেছে
মানব(বাঙালী) হয় না
মন:পুত ৷
মানসে
আগে
করুন
মানত
মতিভ্রমে মরে
না
যেন
মতি
করুন
মনস্থ
৷
সেখানে
আগে
জাগুক
মায়ের
ভাষা
তখন
সখ্যতায় সবখানে
৷
সূদূরপ্রসারী তবেই সখা সততার
ব্যপ্তি নয়ত
সলিলে
তব
ভাষণে
৷
এটাই আমার দেশ
এম, আব্দুল্লাহ আল মামুন
সবুজের লীলা, দূর-দূরান্তে প্রসারিত, মৃদু হাওয়া, গ্রামাঞ্চলকে
আদর করে।
জলের লিলি পুকুরে নাচছে ভোরবেলায়।
দূরের পাহাড়, একটি কুয়াশাচ্ছন্ন নীল, নদীগুলি বাতাস দিচ্ছে একটি অলস রঙকে চঞ্চল করার জন্য।
খেজুর গাছ দুলছে গ্রীষ্মের তাপে, আমের বাগান রসালো খাবারে মুগ্ধ।
সোনালি সূর্য পশ্চিমে অস্তমিত হয়ে আকাশ রাঙিয়ে দেয় জ্বলন্ত উচ্ছ্বাসে।
এটি বাংলাদেশ, সৌন্দর্য এবং ভালোবাসার দেশ,
এমন একটি জায়গা যেখানে প্রকৃতি এখনও
তার সঠিক জায়গাটি ধরে রেখেছে।
বাংলাকে ভালোবাসি
মো. আলী আশরাফ মোল্লা
শুরু হলো ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি
ভাষার প্রতি সম্মান দিতে হবে মাতামাতি
বাকি এগার মাস চলছে যে যার মতো করে
ভাষার মাস এলে পরে চেতনা জাগ্রত হয় মনে!
ভাষার জন্য দিলো যারা প্রাণ
তাদেরকে করতে হবে সম্মান
শুদ্ধ বাংলায় বলতে হবে সর্বত্র
লিখতে হবে অফিস আদালতে
তবেই তাদের আত্না শান্তি পাবে!
বাংলিশ সংমিশ্রনের ফলে
অনেক কিছুই আবছা আবছা থাকে
না থাকে ইংরেজিতে পারদর্শীতা
না থাকে বাংলায় দক্ষতা
বাংলিশ মিশ্রণ ত্যাগ করো
প্রমিত ইংরেজি বাংলা শেখো।
মায়ের ভাষা মুখের ভাষা বাংলা ভাষা
বাংলা ছাড়া আমাদের একদিনও চলে না
আমি বাংলায় কথা কই বাংলায় গান গায়
বাংলা ছাড়া যেন মনে শান্তি নাহি পায়।
আমি বাংলায় মেতে উঠি উৎসব পূজা পার্বনে
বাংলা ছাড়া পূর্ণতা আসে না দেহ মন মগজে।
বাংলার প্রতিই আমার যত দুর্বলতা
এটা আয়ত্ব করতেই যায় যে বেলা।
বাংলা ছাড়া ভাব প্রকাশে পায় না পূর্ণতা
বাংলা ছাড়া মনের তৃষ্ণা কোনভাবেই মেটে না।
আমি বাংলা কে ভালো বাসি
বাংলাতেই থাকতে চাই দিবানিশি
বাংলাতেই আমার সুখ আর শান্তি
বাংলা বিহনে অস্বস্তি বোধ করি।
কোন মন্তব্য নেই