মাসিক কবিতাকণ্ঠ, জুন’২৩, বর্ষ-১৬, সংখ্যা- ৮৬
পরিচালনা পর্ষদ
উপদেষ্টা সম্পাদক:
নাজমুল হক
সম্পাদক :
এম, আব্দুল্লাহ আল মামুন
নির্বাহী সম্পাদক:
এম, রেজা
লাভলী খন্দকার
বর্ণ বিন্যাস
সিনথিয়া
প্রচ্ছদ:
এম, আব্দুল্লাহ আল মামুন।
জুন- ২০২৩ (বর্ষ- ১৬, সংখ্যা- ৮৬)
আর একজন নজরুল চাই
পুনরাবৃত্তি প্রেম
মাহাবুব টুটুল
প্রতিধ্বনিত সত্তার গোপন অলিন্দ
বিসর্জিত প্রেম বারবার মনে পড়ে,
মনে পড়ে বেলা অবেলায়,
রাত্রির গানে, বিদগ্ধ শিহরণে।
দীর্ঘ সময় বিস্মৃত সুখের উল্লাসে
তুমি অকাট্য সত্য জেনেও
জট পাকানো জীবন দর্শনে
আজ নিরাশার কালো মেঘ হলে।
অথচ একদিন অন্তহীন নিবিড়তায়
আবিষ্ঠ হয়ে মুগ্ধতা ছড়াতে
এই জোসনা প্লাবিত ভিত্তিভুমি।
তোমার আবেগ তাড়িত প্রেম
প্রগতিশীল ধোঁয়াটে আলোয়
সবটুকু কে পুড়িয়েছে।
এখন প্রথাসিদ্ধ অনুকল্পগুলো কে
গোধূলি আলোয় বিসর্জন দিয়ে
বেলাশেষে ফিকে রঙ ছড়ালে
সেই রঙে আজ আমি বিবর্ন।
এখন এক টুকরো স্মৃতি, প্রেমের পদ্মরাগ,
ভালবাসার কল্পধ্বনি, আর আলতো ছোঁয়ার
অনুভূতি, দৃশ্যমান পৃথিবীতে একমাত্র সম্বল।
হৃদয়ের আদ্র ফাংগাসে জন্ম নেয়া,
তোমার জন্য যে প্রেম, এখন
পরমাণুর দৈব সংঘর্ষে নাগাসাকি।
শতসহস্র ভালবাসার পঙতিগুলো
ধোঁয়া ওঠা গন্ধে বিমোহিত চারপাশ
অথচ চোখের অনলে চিকচিক
তোমার মুখচ্ছবি আজ শুকতারা,
তবু কেন বারবার মনে পড়ে?
ভালবাসি
আনাম
ভালবাসা, স্নেহ, মমতা সে কি আছে আর আমাতে,
সবইতো বিলিয়ে দিয়েছি তোমাতে।
কি আজব, না দেখা না শোনা,
পৃথিবীর কোন এক প্রান্তে আছো জানা।
ভালবাসা বিলাই তোমাতে,
স্নেহের পরশ ছোঁয়াই তোমাতে,
মমতার ডোরে বেঁধেছি তোমারে
তুমি মোর চিত্তে, তুমি মোর চেতনায়
তুমি আছো মোর শিরা উপশিরাই।।
কে তুমি?
ছিলে কি কোন এক জন্মে আমার?
সুখ,,
লাভলী খন্দকার
সুখ তুমি কোথায়???
তুমি কি দুরের আকাশে নীল ধ্রবতারা
যা হাত বাড়ালেই স্পর্শ করা যায়না।
সুখ তুমি কোথায়?
তুমি কি স্নিগ্ধ সকালের
দুবলা ঘাসের ভিজা শিশির বিন্দু।
যার উপর হাঁটতে চাইলেও হাঁটতে পারিনা।
সুখ তুমি কোথায়?
তুমি কি সমুদ্রের বুকে উত্তাল ঢেউ
যে ঢেউয়ের সাথে নিজেকে দোলাতে পারিনা।
সুখ তুমি কোথায়?
তুমি কি নদীর বুকে বেগমান স্রোত
যেখানে নিজেকে ভাসাতে পারিনা।
সুখ তুমি কোথায়?
তোমাকে তো পাইনা খুঁজে
যদি আসতে মোর দিকে
যতন করিয়া রাখিতাম তোমারে
রিদয় পিঞ্জিরার মাঝে,,,,,,,,,,,,
কবি নজরুল।
ম,আ,কুদ্দুস পদ্মা।
জন গন মন বিজয়ী বাংলার বুল বুল
তারুণ্যের কবি প্রানের কবি বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল -তুমি হৃদয়ের ফুল।
তোমারে স্মরি আজি বাংলার কবিকুল
শত প্রণতির শ্রদ্ধার্ঘ হে কবি,তোমার প্রতি
বিনত শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন।
গাহিয়া সাম্যের গান জাত পাত হিন্দু মুসলমান
মিলনের তরে এক কাতারে ডাকিয়া করেছ আহবান।
লিখিয়াছ অফুরন্ত শ্যামা গজল ইসলামীয়া
গীত ছন্দে আপন সুরে সম্পদ সে অমুল্য গীত অবদান।
ব্রিটিশ বেনিয়ার আধার কারায় বসে
তাড়াতে বেনিয়াকে দেশ হতে চিরতরে
লিখেছিলে গান অগ্নিঝরা শিকল ভাঙার গান
অত্যাচারীর খরগ কৃপান তুচ্ছ করি ফাঁসির ফরমান।
অভেদ লক্ষ্যে "মানুষ কবিতা "তোমার কালোত্তীর্ণ মানুষের জয়গান
উঁচু নিচু ধলো কালোর ভেদ প্রভেদ প্রাচীর
ভেঙ্গে করেছো চুরমার কাব্য ঘোষণায়-তুমি সু মহান।
প্রেম শিখিয়েছ নার্গীস বনে বিরহীর দিয়েছ অশ্রুর সম্মান
নাওনি ফুল তাহার অরুন আঁচলের
পুড়িয়েছো নিজকে সে তপ্ত আগুনে
লিখেছ অগ্নিবীনা মুক্তি সংগ্রামের।
নিজকে নিজেই দিয়েছ সান্তনা,বুঝিতে দাওনি কারোকে সে বেদনা অম্লান।
বট বৃক্ষ তলে ঘাস দুর্বা হয়েও উঠেছিলে শীর্ষে জাগিয়েছিলে কবিতার অঙ্গন।
বাক্স ভরা সনদ পত্র
মোঃতারিকুল ইসলাম
বাক্স ভরা সনদ পত্র
আছে আমার ভাই
স্বপ্ন ছিলো চাকরি করবো
অজ পাড়া গাঁয়।
স্বপ্ন আমার শেষ হইলো
পরিক্ষার শেষ দিনে
বয়স আমরা শেষ হইয়েছে
চাকরি পাবো কিসে।
তাই সনদ পত্র গুলো
বাক্স বন্দি করে রেখেছি শেষে।
কলেজ জীবনের স্বপ্ন গুলো
কান্না দিপ্ত চোখে
বাক্স বন্দি আছে।
দিনের শেষে সন্ধা হয়
অর্থের আনাটনে
খেয়ে আছি না
না খেয়ে আছি
সরকার কি তা জানে।
দ্রব মুল্যের উর্দ্ধগতি
থামছে না কোন মতে
বেগুন কিনেছি একটা আমি
মাঝ রাতে তা ভর্তা করেছি
ভাতের সাথে পিসে।
খেতে আমার মজা লেগেছে
পাড়াপরসি কে একটু দিছি।
এবার আমার সনদ পত্র
দিচ্ছে অনেক জ্বালা
বাক্স আমি পুরে ফেলবো
কেরসিন তেল দিয়া।
কেরসিন তেলের দাম দেখি
অনেক গেছে বেড়ে।
বাক্সটাকে পুরাতে দেখি
এক লিটার তেল যাবে।
কষ্টে আমি আত্ত চাহিয়া
থাকি বাক্সটার দিকে।
অনেক স্বপ্ন অনেক আশা
বন্দি রেখেছি তাতে।
হ-য-ব-র-ল
বাবুল আখতার
যে জন জানে স্বাধীনতা মানে বাঁধাহীন,
খেয়াল-খুশি,ইচ্ছামত চলা!
সে কি আর মানবে এত আইন-কানুন,
নিয়ম-নীতি, জাতিগত প্রথা?
যে জন জানে পড়াশোনা মানে পরীক্ষাহীন
বছর শেষে নতুন ক্লাসে উঠা,
তাকে সকাল-বিকাল পড়তে বসানো
এতই কি আর সোজা?
যে জন বেড়ে উঠেছে শাসনহীন দূরন্ত
অনিয়ম আর দুর্নীতির মাঝে,
সে তো অনিয়মকেই নিয়ম জেনেই চলে
সকাল বিকাল সাঁঝে।
আইন পালন করে মানুষ গড়ে সভ্য জনপদ
ইচ্ছামত চললে হয় সভ্যতার নিপাত।
পারিবারিক,সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে
আইন প্রয়োগ করতে হয় জন থেকে জনে।
এব্যাপারে বলেন আইনের জনক সিসেরো
"আইন কেউ মানে না,মানাতে হয়।"
সভ্য সমাজে আইন পালনে চরম কঠোরতা
আইন প্রয়োগে ব্যর্থ হলে চলে হ-য-ব-র-ল।।
অশান্ত আবহ
প্রণব চৌধুরী
অশান্ত আবহে আমি এই অবেলায়,
আশমানে অশণীর আভা আলোকিত
হয় ৷ অবণী আজ আলস্যের আভাতি
বেলায় ভেঙ্গে আলমোড়া; অবলোকান্তে
অবিরামে অসময়ে অলকানন্দাতে
আহুত সব অনাগতরা ৷ বিলক্ষণে
বিস্মিত বৈভবের বিভূতি বৈকালিকে
বিভোর বিরাগভাজনে , বিধুমুখীর
বিশ্বাসে নয় বিশ্বাসী বিস্ফোরণে বৈধ
বৈধব্য বৈশাকে বিপাশারা বিস্তারিত
তার বদ্যানতায় ৷ বিলকুল বিপাকে
বিস্ততা বঙ্গভূমে বিষবৃক্ষের বিষে !
বিদূররা নিয়েছে বিদায় বিবেকের
বিবেচনার বদ্ধ বিষয় থেকে হায় !
(চর্তুদশপদী অমিত্রাক্ষর ও অনুপ্রাস ছন্দে লিখিত)
নালিশ পাড়ার সালিশ ঘাট
মোঃ ইব্রাহিম মিয়া
কি যানি কি কারন মতে
গিয়েছিলাম নালিশ পাড়ার সালিশ ঘাটে
হেটে হেটে দেখেছি সেথায় কত কিছু ঘটে
অদ্ভুত এই মানবিকতা
দেখেনি ভাই কোথায়?
কলম খাতার গাঁথুনি সূতায়
লিখব আজ সে কথা ।
নালিশ পাড়ার সালিশ খানা
শুনেছে ভাই সত্য মিথ্যার প্রভেদ খানা
আহাজারির হাজার কান্না
শান্তির ফুল হয়ে ফোটে নিত্তির পাল্লায় ।
কাছে গিয়ে সুক্ষমনে
দেখেছি আমি দু নয়নে
বিচার কার্যের সভা কক্ষে
মানুষের মরন মানুষই করছে ।
পশুর ব্যাথা পশু বুঝে
মানুষের বিপদে মানুষ কেন সুযোগ খোঁজে
মানুষ নাকি সৃষ্টির সেরা
তবে অধর্মে কেন তাদের হৃদয় ভরা?
শনেছি মানবতা মানবধর্মের মূল কথা
তবে মানুষের হাতে মানুষের কেন এত বেহাল অবস্থা?
নালিশ পাড়ার সালিশ খানা
ভয়ানক এক মৃত্যুপুরী মানবতার জেলখানা
ষোল আনা চোখের জল
শ্রাবন ধারায় ঝরে সর্বক্ষণ
সু বিচারের সু শাসন
পেতে একটু দরশন
কাঁদে দেখি মানুষের মন
সুশাসনের কড়াল গ্রাসে
দেখেছি ভাই সেখানেও বিত্তবান রাই হাসে ।
জ্ঞানীগুণী বিজ্ঞ দেশে
বিলাত ফেরত শিক্ষা শেষে
কাছে গিয়া দেখলাম অবশেষে
লুটতরাজ আর রাহা জানি
এ -যে আইনের নামে
করছে সবায় মানবতার কুলখানি ।
উচু তলার বিত্ত শিখর
লতার মত আকড়ে ধরে
নিম্ন শ্রেনীর বুকের ভিতর
তীরে তীরে আঘাত তীরে
রক্তাক্ত মানবতা আহত হয়ে
কাঁদছে আজ নালিশ পাড়ার সালিশ পুরে
কোন মন্তব্য নেই