মাসিক কবিতাকণ্ঠ, আগষ্ট- ২০২৩ (বর্ষ- ১৬, সংখ্যা- ৮৮)
পরিচালনা পর্ষদ
উপদেষ্টা সম্পাদক:
নাজমুল হক
সম্পাদক :
এম, আব্দুল্লাহ আল মামুন
নির্বাহী সম্পাদক:
এম, রেজা
লাভলী খন্দকার
বর্ণ বিন্যাস
সিনথিয়া
প্রচ্ছদ:
এম, আব্দুল্লাহ আল মামুন।
আগষ্ট- ২০২৩ (বর্ষ- ১৬, সংখ্যা-
আর একজন নজরুল চাই
সুদুর তেপান্তরে
নাজমুল হক
তোমাকে চাই তাইতো শুধুই রক্তে ফুটাই যুই
এমন সাহস কোথায় বলো তোমার হৃদয় ছুঁই
হৃদয় তো নয় ও বুক যেন তীক্ষ্ণ করাত কল
কাটা ঘায়ের রক্তে বানাও সাত সাগরের জল
দিবা নিশি তোমার বুকের সেই আগুনের ঢেউ
অন্তরালে পোড়ায় আমায় কেউ জানে না কেউ
শ্রাবন মুখর গভীর রাতের বৃষ্টি ধারার সুরে
মন উড়ে যায় যুগান্তরে যোজন মাইল দূরে
চৈত্রে বনের শুকনো পাতায় হু হু বাতাস বয়
ঘুঘু ডাকার দুপুর জানায় আমার পরাজয়
আমের মুকুল দুহাত বাড়ায় খুঁজতে মধুকর
তোমার বন্ধ দুয়ার শুধুই করলো আমায় পর
মেঘের ভেলায় শরৎ এলে হাসবে কাশের বন
চন্দ্রালোকে আসবে এবার তোমার প্রিয় জন
রাজকন্যা মেঘের ভেলায় থেকো সুখের ঘরে
এবার আমি হারিয়ে গেলাম সুদূর তেপান্তরে
পূর্ণ অবিরত
সেলিম আলতাফ
অবশেষে বৃষ্টি ধারায় কবিতা লেখা হলো -
স্নান উৎসবে মাতোয়ারা কদমের হাসিমুখ,
কবুতর ডানায় গড়িয়ে যাওয়া জলছোঁয়া-
গাছের শরীর জুড়ে সজীব আস্বাদন সুখ।
অবশেষে বৃষ্টি ধারায় কবিতা লেখা হলো -
মনজুড়ে এতদিন আবেগ আকাল সময়,
ইচ্ছেরা আসি আসি করেও দূরে কোথাও-
অগোছালো অক্ষররাও অভিমান আলোয়।
অবশেষে বৃষ্টি ধারায় কবিতা লেখা হলো-
বহুদিন পর পুরাতন ছবির আবির্ভাব ক্ষণ,
হারনো আঁকিবুঁকির চেনা প্রচ্ছদ ক্যানভাস-
খরা কাটিয়ে জেগে ওঠে গভীর আবাহন।
অবশেষে বৃষ্টি ধারায় কবিতা লেখা হলো-
একে একে ভালোলাগা এলো আগের মত,
নিজেকে ভেজাই আকাশ, বাতাস মন্থনে-
এতদিনে তৃপ্ততার ছাদ বাগান পূর্ণ অবিরত।
স্মৃতির বধ্যভূমি
মোঃ ইব্রাহিম মিয়া ।
স্মৃতির বধ্যভূমি হয় যদি যন্ত্রণার কাটা
কত যত্নে লালিত ছিল
মোদের প্রেমের ফুলদানিটা
কালবৈশাখীর কালো ঝড়ে
প্রেমের ফুলদানিটা যদি ছিটকে না পড়ে
জড়িয়ে থাকে মোর বাহু ডোরে
সে প্রেমের নাম কি দিব বলো মোরে ?
বর্ষার ঢল নামে যদি চোখের কোঠায়
কান্নার প্লাবনে ভাসে যদি আঁখি
তবুও তোমাকে পারব না দেখতে প্রেম দুঃখী
অনুতাপের উত্তপ্ত তোপে
হাজার ব্যথার স্রোতে
রক্তধারা বহে যদি এই বুকে
তবুও হাত দুটি ছাড়তে পারব না
শত কষ্টের মুখে ।
অনাবৃষ্টি আর খরার দাবানলে
যদি মাঠ ঘাট চৌচির হয়ে পড়ে
তোমার আমার ছোট্ট নিরে
ভালোবাসা যদি শ্রাবণ হয়ে ঝরে
সে প্রেমের নাম কি দিব বলো না মোরে ।
স্মৃতির বধ্যভুমি হয় যদি যন্ত্রণা আর কাটা
আকাশে তারার ভিড়ে
অভিমানে লুকিয়ে যাবে চাঁদটা
রাতের পর রাতের প্রহরে
কেঁদেছ কত প্রেম বিরহেে
জোসনার আলো সাক্ষী হয়ে
দেখেছিল তা দুচোখ ভরে
সে প্রেমের নাম কি দিব বলো মোরে ??
স্মৃতির বদ্ধভূমি হয় যদি যন্ত্রনার কাটা
সাগরে লোনাজল ক্ষিপ্ত হয়ে উঠবে জোয়ার ভাটায়
জলে থাকা প্রাণী সব
ক্রুদ্ধ মনে সাগর থেকে উঠবে ফেটে
ভালোবাসার কলঙ্ক যদি পৃথিবীতে না মিটে,
ভাল লাগার এই ভালবাসা
মায়ার জালে আজ বেঁধেছে বড় বাসা
ছাড়তে পারিনা যাকে
বেঁচে থাকার নেশায়
সে প্রেমের নাম কি দেবো
পাইনা খুঁজে কোন ভাষা ।
জলে ভাসা পদ্ম যদি
জলেই ফোটায় ফুল
ফুলের গন্ধে জলের মাঝে
কত সুন্দর অপরূপ সাজে
প্রেম পিরিতির এমন রীতি
পৃথিবীতে নাই আর দ্বিতীয়টি ।
মানুষ কেন ভালোবেসে?
মানুষের মর্যাদা হারায় শেষে
এ প্রশ্ন আজ আমার সবার কাছে ??
চল দেখে আসি
সৈয়দা তৈফুন নাহার
বাতাসের কথায় চল দেখে আসি গনগনে চুলোর সাথে যখন নিস্তব্ধ রাতের সখ্যতা , ঝিঁঝি পোকার সারেঙ্গী তখন রাত্রির স্বাক্ষরিত স্বাক্ষী , সারেঙ্গী বাজিয়ে হার মানাতে বাধ্যকর সুর তারই খোলা পাঠশালা ;
জলতরঙ্গে আঙুলে আঙুলে একাকীত্বের দেয়াল জোড়া এলোমেলো শব্দের ব্যবহার -- প্রিয়তম আকাশের কোঁচড়ে তুলে রাখা চাঁদ আর কিছুটা সময় নিয়ে তারা ফোঁটা খেলায় মেতে ওঠা স্বপ্ন -- ইচ্ছেরা খেলাঘর খেলাঘর ঘুড়ি !
পাখিরা ঘুমন্ত ঘুঙুর , পাশফেরা নদী ; শিশির পতন বিন্দু -- জলফোঁটা কদম গাছে গল্পের আসর আজ পাতায় পাতায় স্বযত্নে টিকিট কাউন্টার ; আগলে রাখা রোদরঙ সহোদরহারা ও শহর বাসিন্দা দিব্য দরশন --- সীমান্তের প্রহরীরা সর্বদা জেগে থাকা সুরুজ ফুল , চল ঘুরে আসি প্রান্তর --
উল্টোরথ ক্যামনে টানে দেখি আয় --- মনে পড়ে বটতলা , বারুরী মেলা , হৈ হুল্লোড় , মাটির বৌ পুতুল,হাড়ি-পাতিল , মোয়া , মুড়কি , তেলে ভাজা, জিলািপি -- শিশুদের দড়িটানা টমটম ঢোল ! কি করে হারিয়ে গেলো সে সব !
দ্যাখ দ্যাখ কে যায় শ্যামবাতি প্রদীপ জ্বেলে ? শুভ সময়গুলো বাসে-ট্রেনে নামলেখা আসন জেনেও লোভী হয়ে ওঠে আলোর মিছিল ; জীবন্ত পৃথিবী জুড়ে কেবলই মরিচবাতি জ্বালিয়ে ময়দান সাজায় বাসর বাসর , সোনালি কালির ঝলকে খাতার পাতাদের রূপের আলোয়ান , নৃত্যের মুদ্রায় লাখো কোটি স্রোত -- অথচ ক্যামন সব নিরস প্রাণহীন !
চল আবার উল্টো হাঁটি তেমনি করে , রাখাল বালক হই মাথায় গামছা বেঁধে , কতজনে কতকিছু করে আমরাও ছেলেবেলা হই , ইচ্ছে পথ শেষ হোক -- চল না দুটি পাতায় ভর করে হয়ে উঠি চলন্তিকা রেল জীবন --
ক্যামন এক নতুন সময় হোক নামতার যাপন -- চল দেখে আসি আবার --- সুনীল আকাশ ! বাঁশঝাঁড়ের ফাঁকে উঁকি দেওয়া চাঁদ !
রুচির দুর্ভিক্ষ
বাবুল আখতার
রুচির দুর্ভিক্ষ কি শুধু-ই হিরো আলম?
ওয়েব সিরিজ এ প্রতিযোগিতায় কিসে এত কম?
দুর্নীতি, সুদ-ঘুষ কি রুচির দুর্ভিক্ষ নয়?
তাহলে আমরা সবাই কেন এ প্রতিযোগিতায়?
অনিয়ম-ই যদি হয় দুর্ভিক্ষের প্রধান কারণ
আকৃষ্ট তাতেই আমরা শুনছি কেন বারণ?
স্বামী-স্ত্রীর গোপন কথা অন্যকে বলা পাপ
প্রচার প্রতিযোগিতায় মোরা ভুলেছি এসব।
ভালো মন্দ হিতাহিত জ্ঞান পেয়েছে লোপ
বুঝবো কি করে মোরা সত্য ন্যায়ের ক্ষোভ।
বেড়ে উঠছে জাতি অন্যায়কে ন্যায় মনে করে
কে শুধরাবে ভুল যদি সবাই থাকি নিরবে?
মানবতা কাঁদে আজ মিথ্যার মায়াজালে
চরম মূল্য দিতে হবে আসছে সময় সামনে।
অন্যায় আজ ন্যায়ের আসনে হয়েছে সমাসীন
আমাদের নিরবতায় ধ্বংস হচ্ছে সোনালী সুদিন।।
কোন মন্তব্য নেই